
Islamic Extremism
বাংলাদেশে ইসলামী মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদ যেভাবে সামাজিক স্বীকৃতি পাচ্ছে
উনি একজন ক্রিকেটার, বাংলাদেশের জাতীয় দলে খেলেন। উনার মতাদর্শ দেখুন, নারীরা খোলামেলা পোশাকে থাকলে তারা লোহা, ছেলা কলা, ঢাকনা ছাড়া মিষ্টি সমতূল্য। নারীরা বোরখা আবৃত হয়ে জীবন্ত টেন্ট হয়ে ঘুরে বেড়ালে তারা হয় সোনা, রুপা, হীরার চেয়ে দামী। জীবন্ত টেন্ট না হলে অন্যরা (তাদের ভাষায় মানুষ, পুরুষ ছাড়া অন্যরা তাদের ভাষায় মানুষ না) তাদের গায়ে আঁচড় কাটবে, ধরবে, ধর্ষণ করবে, অপমান-অপদস্থ করবে, যৌন হয়রানি করবে – এগুলো পুরুষের অধিকার বলে তারা মনে করে। একটা বাচ্চা ছেলে, বয়স কত হবে? ২০/২২? তার দর্শন হলো এগুলো। বর্তমান বাংলাদেশে এমন তরুণ মৃত্যুঞ্জয়, সাকিব এই দুইজনই নয় শুধু, আছে লক্ষ লক্ষ, কোটি কোটি।
দুঃখজনক হলেও সত্যি, এই প্রজন্মের বিষ্ময়কর উত্থান হয়েছে সেকাচিনার জামানায়। গণতন্ত্রকে হত্য করে, স্বৈরতন্ত্র চালু রাখতে নিজের ক্ষমতা ধরে রাখতে, ভোট ছাড়া প্রধানমন্ত্রী পদে টিকে থাকার জন্য উনি ইসলামিক জঙ্গিদের নানাভাবে পৃষ্ঠপোশকতা করেছেন, এখনো করছেন। তেঁতুল হুজুরের সব উপদেশ, পরামর্শ উনি মেনে নিয়েছেন। সেজন্য দেখবেন বাংলাদেশের ঘাটে, মাঠে, ফেসবুকে, ইউটিউবে এখন ওয়াজ আর ওয়াজ। সেসব ওয়াজে নারীদের প্রতি বৈষ্যম্য, ঘৃনা, পরাধীনতা, ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ধর্ম নিয়ে কটাক্ষ করা থেকে শুরু করে তাদের উপর আক্রমের উসকানিও দেয়া হয়। শিক্ষা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি বিমুখ বিকৃত, অপতথ্য ছড়ানো তো তাদের খুব কমন প্রাকটিস। অন্যদিকে সেকাচিনা মুক্তমনা, বিজ্ঞান ভিত্তিক লেখক, যুক্তিবাদীদের কলম থামিয়ে দিয়েছেন তাদের হয়রানি করে, জেলে ভরে, গুম করে, পঙ্গু করে দিয়ে। তার হাতে আছে কালাকানুন আইসিটি এ্যাক্টের ৫৭ ধারা/ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্ট/সাইবার সিকিউরিটি এ্যাক্ট। যে গুটিকয়েক মুক্তমনা, প্রগতিশীলদের দেশে রেখে স্বাধীনভাবে কথা বলতে দিলে এই কোটি কোটি ধর্মান্ধ উন্মাদ পয়দা হতো না তাদের করা হয়েছে দেশছাড়া, ঘরছাড়া, তাদের দিকে জঙ্গিদের লেলিয়ে দেয়া হয়েছে, আম্লিক, ছাত্রলীগ লেলিয়ে দেয়া হয়েছে।
২০০৭-২০১৩/১৪ সাল পর্যন্ত বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে একটা বিপ্লব ঘটে গিয়েছিলো মুক্তমনাদের জাগরণে। সরকার সেটাকে থামিয়ে দিয়েছে, মৌলবাদীদের প্রশ্রয় দিয়ে দেশকে পিছিয়ে দিয়েছে শত শত বছর। যারা কারনে আজ মৃত্যুঞ্জয়, সাকিব পয়দা হচ্ছে।

এই মৃত্যুঞ্জয়, সাকিবসহ প্রায় সব মৌলবাদীরাই চরম সুবিধাবাদী। তারা ইসলামের শুধু সেগুলোই প্রচার করে যেগুলোতে তাদের রুটি, রুজি, জনপ্রিয়তার ক্ষতি হয় না। প্রথমত ইসলামে প্রাণীর ছবি, ভিডিও ধারন, প্রচার সম্পূর্ণ হারাম, অথচ এই হারাম কাজটা তারা ছাড়বে না। ফেসবুক, ইউটিউব বিধর্মীদের অর্থে পরিচালিত হয়, তাদের মেধায় চালিত হয়, এগুলোও কোন ইসলামিস্ট ব্যবহার করতে পারে না, কিন্তু তারা তাদের বেহেস্তে যাওয়ার পথ হিসাবে সেগুলোই বেছে নেয়। এরপরে এই দেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় টপিক হচ্ছে নারীদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক কথা বলা, তাদের পর্দার কথা বলা। ইসলামে সেগুলো বলাও আছে। এই এক ব্যাপারে ঘুষখোর, খুনি, দুর্নীতিবাজ, চোর, ডাকাত, লম্পট, হুজুর, কৃষক, শ্রমিক, ফেসবুকার সবার এক হয়ে যায়। ক্রিকেট খেলা, ক্রিকেট খেলে টাকা আয় করাও হারাম, ওরা কিন্তু এই হারাম খেলা ছাড়বে না, হারাম আয় ছাড়বে না। সেক্ষেত্রে তারা জাতে মাতাল, তালে ঠিক। এমনই বদমাশ এইগুলো।
ওদিকে মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ তাদের জার্সির বাঘের ছবি ঢেকে রাখে, ক্রিকেট মাঠে নামাজ পড়ে, কিন্তু হারাম ক্রিকেট খেলা ও উপার্জন ছাড়ে না। বাংলাদেশের পুরো ক্রিকেট দলটাই এখন মৌলবাদী, মাফিয়া হয়ে গেছে, দু-একজন হয়তো ভালো আছে। কয়েক বছর আগে মুশফিক সাহেব গরু জবাই দিয়ে রক্তমাখা ছুরি দিয়ে দাঁত কেলিয়ে হেসে একখান ছবি দিয়েছিলো, এদের রুচি, শিক্ষা, মানবিক বোধ কোথায় – একবার চিন্তা করেন। মাশরাফি, সাকিবাল হাসান টাকার জন্য সন্ত্রাসী, মাফিয়া, জুয়ার কারবারী, চোরাকারবারী, খুনি, বাটপাড়ের সঙ্গেও হাত মিলিয়েছে। এইতো সম্প্রতী সাকিবাল বাংলাদেশের সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াতের সঙ্গে কি যেনো করেছে, এই শিবলী আমেরিকা থেকে লুট করা অর্থ নিজের একাউন্টে নেয়ার অভিযোগে আন্তর্জাতিকভাবে অভিযুক্ত। এই মৃত্যুঞ্জয় ছাগল দেখেন, সেও এক ভুঁইফোড় ব্যবসার প্রচার চালাচ্ছে কিভাবে!

সমস্যা হলো, এরা সবাই পাবলিক ফিগার। এরা আমার, আপনার মতো সাধারন মানুষ না, পাবলিক ফিগাররা যা ইচ্ছা তাই করতে পারে না। তাদের অনুসারীদের কথা তাদের ভাবতে হয়, তাদের কর্মকান্ড সমাজে প্রভাব ফেলে। এজন্য বিশ্বে এই সমস্ত পাবলিক ফিগারদের প্রতিটা স্টেপ মাপা হয় সেখানে বর্ণবাদ, নারী বিদ্বেষ, মানবতার অবমাননা, বাক স্বাধীনতার পরিপন্থী কিছু আছে কিনা। যদি থাকে তাহলে তাদের শাস্তির মুখোমুখি করা হয়। বাংলাদেশে হয় না, কারন বাংলাদেশে একজন সেকাচিনা আছেন, যিনি নিজেও মৌলবাদী/কুসংস্কারাচ্ছন্ন; আর মৌলবাদীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে পেলে-পুষে রাখেন।

বাংলাদেশ ও কিছু ইসলামী নামধারী দেশ বাদে বাকী বিশ্বের সবখানে নারীদের পোশাক খুবই সংক্ষিপ্ত। আমার সামনে প্রতিদিন এমন অসংখ্য মহা সুন্দরী নারী পড়েন। কয়দিন আগে দেখলাম এক সুন্দরী প্রকাশ্যে প্যান্ট, প্যান্টি খুলে তার মাসিকের প্যাড পাল্টাচ্ছেন। কেউ কিছু বলছে না, মানুষের কিচ্ছু আসছে যাচ্ছে না, গোল হয়ে দেখছেও না। কারো ইমানদন্ড (নুনু) দাঁড়িয়ে যাচ্ছে না। ভাগ্যিস এখানে ওয়াজীদের প্রকাশ্যে গলা ফাটিয়ে, মাইক লাগিয়ে কথা বলার অধিকার নেই, না হলে তাদের মানুষের তাড়া খেয়ে দৌঁড়ে পালানো লাগতো বর্নবাদ, নারী বিদ্বেষ, ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি ঘৃনা প্রচার করার জন্য। আল্লার আইন বলে এগুলো জাস্টিফাই করতে গেলে উলঙ্গ হয়ে ফিরে যেতে হতো ওয়াজী, মৌলবাদীদের। মাঝে মাঝে দেখি স্টেশনে, রাস্তার মোড়ে কেউ কেউ বুকে ছোট স্পিকার লাগিয়ে, হাতে মাইক্রোফোন নিয়ে ধর্মের বানী প্রচার করে। বিশ্বাস, করেন কেউ দাঁড়িয়ে সেগুলো শোনে না, কারো সময়ই নেই, এখানে মানুষের জীবন অনেক কঠিন, সবাইকে কাজ করে খেতে হয়, প্রতি মুহূর্ত্ত সময়ের অনেক মূল্য। বাংলাদেশের মানুষের আজাইরা অনেক সময় আছে, এজন্য সেখানে ধর্ম ধর্ম, রাজনীতি, গ্রামে-গ্রামে, জেলে-জেলা করে কাইজ্জা ফ্যাসাদ করার, লেকচার শোনার অনেক সুযোগ আছে। আসলে মানুষের জীবন এতো সহজ করে দিলেও বিপদ।
Related Posts

Crimes against humanity in Israel-Palestine and the inhumanity of Islam
I occasionally speak with a fairly wealthy American who is of British origin. The gentlemanRead More

ইসরায়েল-ফিলিস্তিনে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ও ইসলামের অমানবিকতা
একজন মোটামুটি সম্পদশালী আমেরিকানের সঙ্গে মাঝে মাঝে কথা হয়, ব্রিটিশ অরিজিন। ভদ্রলোকের অনেক বয়স, যদিওRead More

Where is the solution to the Israel-Palestine Crisis?
Gaza is a small part of Palestine, there is no control of the West Bank,Read More
Comments are Closed