Stop Rape
Stop Rape

No More Rape, Stop Rape Now

ধর্ষকের অন্যকোন পরিচয় নেই, সে একজন ধর্ষক, নিকৃষ্ট মানুষ

করোনাভাইরাস মহামারির সময়ে ধর্ষকরা ভেবে নিয়েছে তাদের এখন সময় … সংবাদটি দেখুন

যে দেশের মানুষজন সেক্স শিখেই চটি বই ও থ্রিএক্স থেকে, সেখানে পার্ভার্টের আবির্ভাব হওয়া কি অবিশ্বাস্য কোন ঘটনা ? যে দেশের মানুষ সেক্স এডুকেশন শুনলেই ভাবে ক্লাসের ভিতর সবাই মিলে সেক্স শুরু করে দেওয়া, সেই দেশ কি ধর্ষণমুখর না হয়ে থাকতে পারবে ? যে দেশে কো এডুকেশান নাম শুনলে প্রথমেই মানুষের মাথায় আসে মেয়েদের নরম মাংসের চিন্তা সে দেশে এমন পেডোফাইলদের অবির্ভাব হবেনা তো কোথায় হবে ?

যে দেশে কাজের মেয়ে, হিন্দু, আদিবাসী, ছোট্ট, কচি মেয়েদের খাইতে মজা এমন সব নিকৃষ্ট চিন্তাধারা লালন করা হয়, সেই দেশে এক ঘণ্টা ধর্ষণের ঘটনা না ঘটে থাকাই অকল্পনীয়। যে দেশে বিয়ের সময় নারীর যোগ্যতা হিসেবে চামড়া ও মাংস পর্যালোচনা করে দেখা হয়, সে দেশে রেসিস্ট ও ধর্ষকের সংখ্যা বাড়বে নাকি কমবে ? ছেলা কলা, চামড়া ছিলা মুরগি, ঢাকনা ছাড়া মিষ্টি যেখানে মানুষের উদাহরন হয় সেখানে একজন ধর্ষকের নেতৃত্বে প্রার্থনা করার মানুষের অভাব হবেনা।

মেয়েদের চেহারা, উন্মুক্ত ত্বক দেখে ধর্ষক পুরুষের যৌনতাড়না জাগে ? আপনার এটা মনে হতে পারে কিন্তু অপরাধবিজ্ঞান সেটা বলে না। ধর্ষণ হলো একজন ধর্ষকের পৈশাচিক শক্তি প্রদর্শন ও তাতে তার নিজের আত্মতুষ্ঠির ফল। এজন্য ধর্ষকের কাছে ৬ মাসের শিশু থেকে ৯৯ বছরের বৃদ্ধা, পশ্চিমা পোশাকহীন থেকে আফগানি পুরোটা ঢাকা কোন মহিলাই বাদ যায় না। পুরুষের সেক্সের কামনা জাগায় যে হরমোন তার নাম টেস্টোস্টেরন। গবেষনায় দেখা গেছে রেপিস্টদের প্রায় সবার এই টেস্টোস্টেরন প্রয়োজনের তুলনায় কম। যাকে সহজ বাংলায় বলে ধ্বজভঙ্গ, যৌন জীবন নিয়ে হতাশ। সুতরাং কোন যৌন তাড়না থেকে বা দিলে লালা ঝরা থেকে কেউ ধর্ষণ করেনা। ২/৪ মিনিটের জোর জবরদস্থিকে আর যাই হোক সেক্সুয়াল কাজ বলা যায় না, সেক্স যতটা না শারীরিক তার চেয়ে বেশী মানসিক প্রস্তুতির উপর নির্ভর করে।

এই সমস্ত কথা বলার কারনে আমাকে অনেক অন্ধ মানুষ পিটানো এমনকি হত্যার হুমকিও দিয়েছে। কিন্তু অন্ধ হলেই প্রলয় বন্ধ হয়না।

……….
রেপিস্টদের নিয়ে FBI দীর্ঘদিন গবেষনা করে রেপিস্টদের একটা টাইপোলজি / প্রোফাইলিং ( প্রকারভেধ) করেছে। রেপিস্টদের testosterone বা male hormone বেশী বা রেপিস্টরা অতিমাত্রায় সেক্সি এরকম কোন প্রমান পাওয়া যায়নি, বরং উল্টোটারই প্রমান পাওয়া গেছে বেশী। বেশীরভাগ রেপিস্টরাই আত্মবিশ্বাসহীনতায় ভোগে, অনেকেই ধ্বজভঙ্গ বা erectile dysfunction এ ভোগে, বেশীরভাগ রেপিস্টরাই নিজের যৌন জীবন নিয়ে হতাশ। এই বিষয়ে আরো বিস্তারিত বলা দরকার।

রেপিস্ট আছে ৪ রকমের। যথা,
১) Sadistic
২) Anger Retaliatory
৩) Power Assertive
৪) Power Reassurance

Sadistic রেপিস্টরা যৌন আনন্দ লাভ করার জন্য রেইপ করেনা। সে রেইপ করে ভিকটিমকে টর্চার করার জন্য। সে মূলত ভিকটিমের সাফারিং / যন্ত্রনা / হিউমিলিয়েশান উপভোগ করে। এই ধরনের রেপিস্টরা অধিকাংশক্ষেত্রেই তাদের ভিকটিমকে ধর্ষনের পরে হত্যা করে ফেলে বা চড়ম যন্ত্রনা যেমন সিগারেটের ছ্যাকা দেওয়া বা হাত পা, স্তন, যোনীপথ কেটে ফেলা এইসব করে আনন্দ লাভ করে। তবে এরকম Sadistic রেপিস্ট এর সংখ্যা পৃথিবীর মোট রেপিস্টদের মাত্র ৪ বা ৫ শতাংশ। হরর মুভিতে বা রিভেঞ্জ মুভিতে এই ধরনের রেপিস্টদের বেশী বেশী দেখানো হয় বলে সাধারণভাবে মানুষ মনে করে রেপিস্ট মাত্রই স্যাডিস্টিক রেপিস্ট।

দ্বিতীয় টাইপটি হচ্ছে Anger Retaliatory রেপিস্ট। এরাও যৌন আনন্দের আশায় রেইপ করেনা। এই টাইপের রেপিস্টদের বেশীরভাগেরই নিজেদের শৈশবে নির্যাতিত হবার ইতিহাস আছে। এরা বেশীরভাগই ছোটবেলায় মায়ের হাতে বা দাদীর হাতে বা চাচী বা বড় বোনের হাতে প্রচন্ড্র মারধোরের বা এবিউজের স্বীকার হয়েছিল ( childhood abuse by mother or mother figure women)। সেই থেকে এরা নিজের অবচেতন মনে পৃথিবীর সকল নারীর প্রতি তীব্র ঘৃনা এবং বিদ্বেষ লালন করে । এদের অনেকেই হয়তো নিজেই জানেনা যে সে নিজের অবচেতনে পৃথিবীর সকল নারীর প্রতি এরকম hostility ( ঘৃনা / বিদ্বেষ) বহন করে বেড়াচ্ছে। এরা রেইপ করে নিজের এই রাগ/ বিদ্বেষ চড়িতার্থ করার জন্য। প্রতিশোধ নেবার মতন একটা বিকৃত আনন্দ এরা পায় ধর্ষন করে। এই প্রকারের রেপিস্টরাও তাদের ভিকটিমের সাফারিং / অপমান/ যন্ত্রনা উপভোগ করে প্রতিশোধের আনন্দ পায়। এদের সংখ্যাও ১০ থেকে ১৫ পারসেন্ট।

তৃতীয় প্রকারটি হচ্ছে Power Assertive রেপিস্ট। এরা মুলত রেইপ করে নিজেকে ক্ষমতাবান ফিল করার জন্য। নিজেকে ক্ষমতাবান ফিল করার বিকৃততম ও সহযতম উপায় হচ্ছে অন্যকে অপমান করা। এদের কাছে এই ক্ষমতাবান ফিল করার অংশ হচ্ছে রেইপ করা। They rape because thats how they feel that they are powerful, that they can rape or do whatever they want to । এদের চলাফেরায় দেখবেন একটা অতিরিক্ত গা-জোয়ারি ভাব আছে, অতিরিক্ত ব্যাটাগিরি দেখানোর প্রবনতা আছে, নিজেকে ম্যাচো গাই ( macho guy) বা টাফ গাই দেখানোর একটা প্রবনতা আছে এদের মধ্যে। প্রায়শই এরা দলবেধে ( Gang) চলাফেরা করে থাকে । প্রকৃতপক্ষে এরাও ভিতরে ভিতরে ইনসিকিউরড বলেই এরকম ওভার পাওয়ারফুল ভাব নেবার চেস্টায় থাকে। এই প্রজাতির পুরুষেরা বন্ধুর সাথে হ্যান্ডশেইক করার সময়ও প্রয়োজনের চেয়ে জোড়ে হাতে চাপ দিবে,৷ ” কি দোস্ত কেমন আছিস ” বলে বন্ধুর পিঠে চাপড় দেবার সময়ও এরা অন্যদের চেয়ে জোড়ে চাপড় দিবে। এরা সাধারনত স্কুলে বা কলেজে বা ভার্সিটিতে বুলি / bully টাইপের হয়। তবে এদের সংখ্যাও ১০ পারসেন্ট এর বেশী না।

সবশেষে, বেশীরভাগ – প্রায় ৭৫% রেপিস্টরাই হচ্ছে Power Reassurance টাইপের। এরা মুলত নিজের ম্যাসকুলিনিটি বা পৌরুষ নিয়ে আত্মবিশ্বাসহীনতায় ভুগে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এরা socially awakward হয়, চার্মিং পারসোনালিটির অভাবে বা অন্য যেকোন কারনেই হোক এরা বন্ধুমহলেও তেমন একটা জনপ্রিয় নয়। হয়তো ছোটবেলায় স্কুলে পড়ার সময়ও সহপাঠী মেয়েরা তাকে নিয়ে হাসাহাসি করতো। সবমিলিয়ে সে মুলত একজন ইনসিকিউরড, লুজার এবং আত্মবিশ্বাসহীন ব্যাক্তি। তার ধারনা সে নারীদের কাছে যথেস্ট আকর্ষণীয় এবং চিত্তাকর্ষক নয়, মেয়েরা কেনো তাকে পছন্দ করেনা এই নিয়ে সে পৃথিবীর সকল নারীর ওপর কিছুটা ক্ষিপ্ত এবং নিজের প্রতি কিছুটা হতাশও বটে, তার সন্দেহ হয় যে “I may not be man enough to conquer women that I deserve”, এই রুঢ় বাস্তবতাটা সে আবার মেনেও নিতে পারেনা। এই বিপরীতমুখী আবেগের অত্যাচারে সে নিজের সাথেই নিজে দগ্ধ হতে থাকে। মোটাদাগে দুইটা ভ্রান্ত ধারনায় ( illusion) সে ভুগতে থাকে।
যথা

১) আমি আসলে যোগ্য এবং ম্যানলি তবে মাঝে মাঝে মনে হয় আমি হয়তো যথেস্ট ম্যানলি বা আকর্ষণীয় নই , তবে – সুযোগ পেলে একদিন দেখিয়ে দিতাম।

২) মেয়েরা মুখে যতই না বলুক আসলে একবার মেয়েদেরকে কাবু করতে পারলে নারীরা আসলে রেইপ উপভোগই করবে ( ইভটিজিং করলে মনে মনে মেয়েরা খুশী হয় এরকম একটা বাংলা ফেসবুক পেইজে প্রায় ২ লক্ষ লাইক / ফলোয়ার ছিল- পেইজটা এখন আর নাই) ।

যাইহোক, নিজের পৌরুষ নিয়ে অনিশ্চয়তা / ইনসিকিউরিটি থেকে সে কোন নারী’কে রেইপ করে নিজের পৌরুষ জাহির করতে চায়, নিজেকে সুপার ডুপার, ম্যাসকুলিন এবং তেজস্বী হিশেবে প্রমান করতে চায়। কার কাছে সে এই পৌরুষ জাহির করে? নিজের কাছেই। সে reassure হতে চায় নিজের কাছে। এইজন্য এই টাইপের রেপিস্টদের নাম power reassurance. প্রায় ব্যাতিক্রমহীনভাবেই এই ধরনের রেপিস্টরা আক্রমন করে অপেক্ষাকৃত দুর্বল ভিকটিম যথা বাসার কাজের মেয়ে, গার্মেন্টস কর্মী, দুর্বল পথচারী, প্রতিবন্ধী নারী, নিজের বাসার ভাড়াটিয়া, অফিসের অধস্তন, প্রবাসীর স্ত্রী, নিজের ছাত্রী, ভিখিরি বা ভাসমান নারী এবং কমবয়েশী শিশু বা ভালনারেবল ভিকটিমদের। এই প্রজাতির রেপিস্টদের সংখ্যা মোট রেপিস্টদের প্রায় ৭৫%।

Related Posts

Islamic Injustice to Women

শরীয়া আইনের এক মর্মান্তিক দৃষ্টান্ত, নারীর প্রতি ইসলামের অবিচার!

মর্মান্তিক আর হৃদয়বিদারক একটা ঘটনা ২০০৪ সালের, এবং এটা ঘটেছিল ইরানে। ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামীRead More

Meaning of Life

মানুষের পৃথিবীতে আসার মূল উদ্দেশ্য কি ?

অনেক মানুষই এই প্রশ্নে ঘুরপাক খায়। এই ঘুরপাক খাওয়ার দোলাচলে তারা একপর্যায়ে তাদের মাথায় পরিবারRead More

LGTBQIA2S+ Rights

Thinking about that evening still gives me goosebumps

From the beginning of this month, metro trains are full of passengers after 10/11 pm.Read More

Comments are Closed