
Cost of Living in Bangladesh is too High !
বাংলাদেশে জীবনযাত্রার ব্যায় আমেরিকার তুলনায় অনেক বেশী; বিশ্বাস হয় না ?
আয়ের সাপেক্ষে বাংলাদেশে জীবনযাত্রার ব্যায় আমেরিকার তুলনায় অনেক বেশী। এখানে উদাহরণস্বরূপ ডিমের কথা বলি যেটা মানুষের শরীরের জন্য খুবই উপকারী ও নিত্য প্রয়োজনীয় একটি খাদ্য। আমেরিকায় ১ ডজন কোয়ালিটি কন্ট্রোলড ডিমের দাম ১৩০ টাকার কিছু কম বা বেশী। সেখানে বাংলাদেশে সেই একই মানের ডিমের দাম তার চেয়ে বেশী। ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা। বলতে পারেন সাধারন ডিমের দাম তো কম। কত ? ৯৬-১০০ টাকা। আয় দিয়ে হিসাব করুন। বাংলাদেশে ডিমের দাম কি কম করা যায় ? যায় না, কারন খামারির উৎপাদন খরচ এখানে অনেক বেশী। এ সমস্ত শিল্পের প্রাতিষ্ঠানিকিকরন হয়নি, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির চর্চা ও পৃষ্ঠপোষকতা কম, সংশ্লিষ্ট দ্রব্যাদির মূল্য অনেক। সরকার একটু বাড়তি নজর দিয়ে ভর্তুকি দিলে ডিমের দাম কম করা সম্ভব, তেমনি সম্ভব অন্য অনেক নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রীর মূল্য কমানো। শুধুমাত্র আঞ্চলিক পর্যায়ে ও মহাসড়কে পরিবহনের সময় চাঁদাবাজি বাদ দিলেই সবকিছুর মূল্য ৫-১০% কমানো সম্ভব। দূর্নীতি বাদ দিতে পারলে আরো ৫-১০% কমানো যাবে।
১৯৯৫ থেকে ২০২০/২১ এর ডিমের দাম গ্রাফে দেখুন, এটা আমেরিকার। দাম খুব বেশী উঠানামা করেনি বাংলাদেশের মতো। বাংলাদেশে ১৯৯৫ সালের দিকে এক ডজন ডিমের দাম কেমন ছিল ? আমার যতদূর মনে পড়ে ২০-৩০ টাকা। সেই তুলনায় এখন কত বেশী ? ৩/৪ গুণ, মানে গ্রাফ একেবারে উর্দ্ধমূখী হয়ে যেতো। তাহলে বুঝুন বাংলাদেশে মূদ্রাস্ফীতি / মূল্যস্ফীতি কত বেশী !
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি হচ্ছে, সেটা দেখানোর মতো। কিন্তু সেখানে সরকারগুলোর ভূমিকা কতটা ? যে মরিয়া প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য সরকার ও দেশের মানুষের এতো সতেজতা তাদের নিজেদের জীবনমান কেমন সেটা খোঁজ রাখেন ? এয়ারপোর্ট থেকে বিদেশ মিশন, দালাল থেকে প্রতারক সবখানে তারা বঞ্চনা, লাঞ্চনার শিকার। সরকার কতটুকু পেরেছে তাদের বিদেশযাত্রা, বিদেশে অবস্থান, বিদেশযাত্রার খরচ এগুলো সহনীয় ও নিরাপদ রাখতে ? বাংলাদেশের বিদেশ মিশনগুলোর হয়রনি ও দূর্নীতির খবর প্রবাসীদের কাছে শুনে দেখতে পারেন।
বাংলাদেশে গার্মেন্টস এর মেয়েরা ভূমিকা রাখছে অর্থনীতিতে। তাদের জন্য মালিকদের খেটে-খুটে বিদেশে মার্কেট ধরতে হয়, অনেক মালিককে নিঃস্বও হয়ে যেতে হয়েছে। সরকার যদি সঠিক ভূমিকা রাখতো তবে ভিয়েৎনামের মতো প্রবৃদ্ধি হতো। ভিয়েৎনামের সঙ্গে তুলনা করলে বুঝবেন সরকারী সাপোর্ট কাকে বলে। গার্মেন্টস এর প্রসারের মূল অবদান এদেশের গার্মেন্টস উদ্যোক্তাদের।
বেকার যুবকরা উদ্যোমী হয়ে এখন কৃষি খামারে নেমেছে। যার কারনে বাংলাদেশে এখন মাংস, মাছ, ডিম, দুধ পাওয়া যায়। কিন্তু তাদের খামারের নিরাপত্তা, সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা কোথায় কতটুকু, কতজন সব হারাচ্ছে সেটা খোঁজ নিয়ে দেখবেন একবার।
গ্রামে গ্রামে সবার এখন পাকা বাড়ি, সবার হাতে স্মার্টফোন। কি মনে হয়? বাংলাদেশের সরকারগুলোর নীতি সহায়তার অবদান এগুলো ? প্রবাসী শ্রমিক, গার্মেন্টেস এর আয়, বেসরকারী উদ্যোক্তা ও কিছু উদ্যোমী তরুণের শ্রম ও মেধা দিয়ে কষ্টার্জিত অর্থ সমাজে ছড়িয়ে পড়ার কারনেই এই সমৃদ্ধি। গ্রামে এখন বাড়ি করতে গেলেও ট্যাক্স দিতে হবে ! অদ্ভুত ! দেশের মানুষের ট্যাক্স অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব শুধুমাত্র সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে। প্রযুক্তির ব্যবহার ও সঠিক ব্যবস্থাপনা থাকলে সরকারের বেশীরভাগ দপ্তরের কর্মীসংখ্যা (তথাকথিত কর্মকর্তাসহ) অর্ধেকে নামিয়ে আনা সম্ভব। সরকারের এমন শত শত দপ্তর আছে যাদের বেশীরভাগ কর্মী কাজের চেয়ে দালালিতে বেশী ব্যস্ত। সঠিক ব্যবস্থাপনা থাকলে শ্বেতহস্থীদের সংখ্যা কমিয়ে জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা যায়।
লেখাটা প্রসঙ্গে না থেকে একটু এলোমেলো হয়ে গেল।
Related Posts

কোন কাজই ছোট না, সব কাজকেই সম্মান করতে শিখুন
আমেরিকার ১৬তম প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন নয় বছর বয়সে তার মাকে হারান। খুব অল্প বয়সেই দরিদ্রRead More

ইউক্রেনের উপরে রাশিয়ার চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধ ও পুতিনের নৈতিক পরাজয়
গতকাল ঢাকার এক লোকাল বাসে যাচ্ছিলাম পল্টন। আমার পাশে বসা এক তরুণ। সে রাজনৈতিক আলাপRead More

বাংলাদেশের ১০০% মানুষই কি দুর্নীতিবাজ ? এও কি সম্ভব ?
বাংলাদেশের খুব কম মানুষই আছে যারা আমার মতো সততার সঙ্গে বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেRead More
Comments are Closed