
A poet who was forced into exile after writing a poem !
স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম কোন লেখককে শুধু তার লেখার জন্য দেশছাড়া করা হয় ১৯৭৪ সালে
কবি হিসাবে তিনি আগেই আন্তর্জাতিক পুরষ্কার পান। ১৯৭৩ সালে লন্ডন সোসাইটি ফর পোয়েট্রি তার কোন এক কবিতাকে “দ্যা বেস্ট পোয়েম অব এশিয়া” সম্মানে ভুষিত করেছিল। ছিলেন দৈনিক সংবাদের সাহিত্য পাতার সম্পাদক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। ২৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৪ সালে দৈনিক সংবাদের সাহিত্য পাতায় তার একটি দীর্ঘ কবিতা প্রকাশিত হয় ‘কালো সূর্যের কালো জ্যোৎস্নার কালো বন্যা’ নামে। সেখানে মাত্র ২ টা লাইনের জন্য শোষন, নীপিড়ন, হত্যা, মৌলবাদের বিরুদ্ধে এক অসম যুদ্ধে লড়ে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় সদ্য স্বাধীন হওয়া দেশে তুলকালাম বাঁধিয়ে দেয় সেই জনতা যারা বিভিন্ন সময়ে জাগ্রত, তৌহিদী, সংগ্রামী, সচেতন প্রভৃতি বিশেষন যোগ করে জনতার পূর্বে। পাবনা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রভৃতি স্থানে হরতাল পালিত হয়। স্বাধীন দেশে মুক্তমত প্রকাশ, লেখালেখির কারনে সেই কবির জীবন নাশের পরিস্থিতি তৈরি হয়। প্রথমে গ্রেফতার ও পরে কলকাতাগামী প্লেনে তুলে দিয়ে সে সময়ের সরকার কোনরকমে তার জীবন রক্ষা করে। যারা তাকে দেশছাড়া করেছিলো সেই জাগ্রত/তৌহিদী/সংগ্রামী/সচেতন জনতার বেশীরভাগই একবারও পড়ে দেখেনি কবিতায় কি লেখা ছিল। আমি পড়েও তেমন কিছু পাইনি যাতে এই জনতার তুলকালাম বাঁধাতে হবে !
তবুও এরা বারে বারে তুলকালাম বাঁধায়। তুচ্ছ ঘটনায়। কাউকে চাঁদে দেখে, রামুতে, নাসিরনগরে এইতো সেদিন কি ভয়ংকর হত্যাকান্ডগুলো ঘটলো। ১৯৭৪ সালের সেই কবিকে বুকে টেনে নিয়েছিলেন বাংলার অন্যতম শ্রষ্ঠ সাহিত্যিক অন্নদাশংকর রায়, ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম ও একমাত্র অস্কারজয়ী বাঙালি পরিচালক সত্যজিৎ রায়, নোবেল পুরষ্কার পাওয়া বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক জার্মানির গুন্টার গ্রাস প্রমুখ। গুন্টার গ্রাস তাকে এতটাই স্নেহ করেছিলেন যে তার আশ্রয়ে তাকে রেখেছিলেন দীর্ঘদিন।
বাংলাদেশ সরকার যে প্লেনে তাকে তুলে দিয়েছিল সে প্লেনে উনিই নাকি একমাত্র যাত্রী ছিলেন। তার জীবনটা সেদিন বেঁচে গিয়েছিল। দৈনিক সংবাদ ও কবি নিজে শতবার ক্ষমা চেয়েও জাগ্রত/তৌহিদী/সংগ্রামী/সচেতন জনতার রোষ থেকে রক্ষা পাননি। ৬০ পয়সা নিয়ে কলকাতা পৌঁছে গুন্টার গ্রাসের মত মানুষের স্নেহধন্য হয়ে জার্মানিতে তার ঠাঁই হয়। যে ব্যক্তির গুণ বুঝেছিলেন অন্নদাশংকর রায়, সত্যজিৎ রায়, গুন্টার গ্রাস সহ আরো শত শত বিদগ্ধ মনীষী আর আমাদের জনতা তাজ্য করেছিল, হত্যা করতে চেয়েছিল তাকে। ৭৫ পরবর্তী সরকারগুলো তার পাসপোর্ট বাতিল করে তাকে দেশহীন করেছিল।
পৃথিবীতে বিজ্ঞানমুখী জনতা, বিজ্ঞানমনস্ক জনতা, আধুনিক জনতা, মানবিক জনতা সংখ্যাগরিষ্ট হলেও আমাদের এখানে বরাবরই থাকবে জাগ্রত/তৌহিদী/সংগ্রামী/সচেতন জনতা যারা দূর্নীতির বিরুদ্ধে কিছু বলে সময় নষ্ট করে না, অসততা, নৈতিক চরিত্রের অধঃপতন নিয়ে কিছু বলেনা। এদের এনার্জি হল কে কি বললো, কে কি লিখলো সেগুলোর জন্য। সে আদৌ সেটা বলেছে কিনা বা লিখেছে কিনা বা আসলে কি লিখেছে সেটাও জানা লাগে না তাদের। যারে ধরে তারে একেবারে দেশছাড়া করে ছাড়ে।
Related Posts

আপনি কি জানেন গড়ে প্রতি দুই ঘন্টায় ইংরেজি অভিধানে একটি করে নতুন শব্দ যুক্ত হয় ? বছরে ৪০০০ !
আপনি কি জানেন গড়ে প্রতি দুই ঘন্টায় ইংরেজি অভিধানে একটি করে নতুন শব্দ যুক্ত হয়Read More

ছাগুদের প্রিয় খাবার কাঁঠালপাতা, বার্গার, চিজকেক যাই দেখান তার সামনে, সে খাবে না
ছাগল নিয়ে ব্যবসা বাংলাদেশ খুব জনপ্রিয়। গ্রামের এক গ্রহস্ত কৃষকের একপাল ছাগল আছে। শহর থেকেRead More

২১ শে ফেব্রুয়ারি ২০২১, বাংলা ভাষা ও ভাষার বিশুদ্ধতা এবং পরিবর্তন নিয়ে কিছু কথা
আজ শহিদ মিনারে যাওয়ার সময় দেখলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের ফটকে একটা ব্যানার ঝুলানো। সেখানেRead More
Comments are Closed