ISKCON
Iskcon and Bangladesh

Iskcon and Bangladesh

ইসকন কি আসলেই বাংলাদেশের জন্য ভয়ংকর কিছু?

ইসকন এর আগ্রাসন !

এক প্রবাসী সাংবাদিকের ইউটিউব ভিডিও দেখে ইদানিং অনেক মানুষ লফাচ্ছে এই ইসকন বাংলাদেশকে গিলে খেয়ে ফেললো! ইসকন বাংলাদেশকে ইন্ডিয়া বানিয়ে দিবে!

যখন হাইস্কুলে ঢুকেছিলাম, সেই ৯৩ সালের দিকের কথা। দেশের সবচেয়ে বেশী পঠিত সংবাদপত্র ছিল দৈনিক ইনকিলাব। ওরা প্রচন্ড ভারত বিদ্বেষী। ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত তারা প্রতিদিনই এমন সব কলাম লিখতো তাতে মনে হতো সরকার দেশকে ভারতের হাতে বিক্রি করে দিল। যাইহোক সেটা সরকারের সফলতা, একটি দেশকে প্রতিবছর বিক্রি করে দেয়া হয়। ক্রেতাই বেবুব, বার বার কেনে তার কেনা একই জিনিস। এখনো প্রতিদিন বিক্রি হয় বাংলাদেশ ভারতের কাছে।


১৯৬০ সালের দিকে পশ্চিমবঙ্গের এক যোগী নিউ ইয়র্ক শহরে যান। তিনি সেখানে কৃষ্ণের বানী প্রচারের উদ্যোগ নেন। তার নাম শ্রীল প্রভুপাদ। তিনি ইসকনের প্রতিষ্ঠাতা। যারা International Society for Krishna Consciousness বা ISKCON নামে পৃথিবীব্যাপী তাদের শাখা বিস্তৃত করে। বর্তমানে পৃথিবীব্যাপী তাদের লক্ষ লক্ষ ভক্ত, গুণগ্রাহী, কর্মী আছেন। তারা শুধু বাংলাদেশ না, আমেরিকা, ইউরোপের অনেক বড় শহরের ব্যস্ত এলাকায় ঢোল, ঠুংরি বাজিয়ে কিসব করে। অনেক বিদেশীও তাদের ভাবাদর্শে আদর্শিত হয়ে তাদের কর্মী হয়েছে। এই ইসকন মূলত বাংলা গৌড় অঞ্চলের আদী ধর্মমত প্রভুচৈতন্যদেবের বৈষ্ণব মতের কাছাকাছি কিছুর উন্নত সংস্করন। পৃথিবীব্যাপী তারা মানুষকে খাওয়ায়, শুধু বাংলাদেশের সিলেট নয়।

Iskcon and Bangladesh Image

পৃথিবীতে ২ টি ধর্মমত আছে যেখানে জন্মগ্রহন ছাড়া কেউ সেই ধর্মের অনুসারী হতে পারেনা। একটি সনাতন ধর্ম, অন্যটি ইহুদী। ইসকন এই গোঁড়ামি ভেঙ্গে সবাইকে সনাতন ধর্মে প্রবেশের সুযোগ দেয়। পৃথিবীতে কোন কিছুই সমালোচনার উর্দ্ধে নয়। প্রত্যেক মতাদর্শেরই খারাপ, ভাল দিক আছে। অন্ধকার আছে, আছে আলোর নির্দেশ। থাকে আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রমানিত ইতিহাসের সঙ্গে অনেক সাংঘর্ষিক বিষয়। ইসকনেরও তেমন কিছু থাকতে পারে। তবে ইসকনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী তৎপরতার বা জঙ্গি সম্পৃক্ততার কোন প্রমান আমি আজ কয়দিন নেট রিসার্স করে পাইনি। তাই ধরে নিতে পারি বাংলাদেশে অন্য অনেক ধর্মীয় সংগঠনের মতো তারাও একটি ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠন বৈ বেশী কিছু নয়। যদি কোন মতাদর্শ বা মতবাদ অন্য কারো জন্য ক্ষতির কারন না হবে, অন্য কারো অধিকার হরন না করবে ততক্ষন সেই মতাদর্শে বিশ্বাস স্থাপন, আস্থা জ্ঞাপন বা সেটা প্রচারের সম্পূর্ণ অধিকার সবাই রাখে। ইসকন যদি কারো ক্ষতি না করে, কারো চলার পথে প্রতিবন্ধকতা স্থাপন না করে তবে তাদেরও অধিকার আছে অন্যদের মতো তাদের কর্মকান্ড চালিয়ে নেয়ার।


অনেকে ইসকন ইসকন করে বাংলাদেশের অনেক মূল সমস্যাকে আড়ালে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিচ্ছে। দূর্নীতি, সন্ত্রাস, মানুষের নৈতিক চরিত্রের চরম অবক্ষয় এগুলো এখন বাংলাদেশের বাস্তবতা। দলীয় পরিচ্ছন্নতার যে অভিযান চলমান সেটিকে ভালভাবে চালিয়ে নিতে পারলে বরং বাংলাদেশে একটি ভালো পরিবর্তন আসবে। ইসকন ইসকন বলে লাফানোর কিছু নেই।


এই যুগে একদেশ অন্যদেশ নিয়ে নেয়া অনেক অবাস্তব। তবে এক দেশ অন্যদেশকে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে নিজের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে নিতে পারে। এটা সেই দেশের ব্যার্থতা যেদেশ বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে দেউলিয়া হয়ে পড়ে।

Related Posts

Religious Fanaticism Examples

এই ধর্মীয় উন্মাদনা এখনি থামাতে হবে, সভ্যতার পথে হাঁটুন

বাংলাদেশের সমাজটা অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে বিগত ২০/৩০ বছরে। এই পরিবর্তনের সবচেয়ে জঘন্য অনুঘটক ছিলRead More

india pakistan bangladesh

Under the cover of development, the real image of India, Pakistan, and Bangladesh

India has sent a spacecraft to the moon and successfully landed there. There is noRead More

india pakistan bangladesh

উন্নয়নের আড়ালে ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশের প্রকৃত করুন চিত্র

ভারত চাঁদে নভোযান পাঠিয়েছে এবং সেটা সেখানে সফল অবতরণও করেছে। ভারতের এতে গর্বের সীমা নেই,Read More

Comments are Closed