No Hate, Only Love
দয়া করে শিশুদের কখনো ঘৃনা শেখাবেন না
আমি ছোটবেলা একবার এক হিন্দু পরিবারে গিয়ে তাদের দেয়া আপ্যায়ন ‘সিঙড়া’ খাইনি। কে বা কারা আমার মাথায় এই বিদ্বেষী বীজ ঢুকিয়েছিলো আজ তা মনে নেই, বাবা মা যে ঢুকায়নি এটা নিশ্চিত। তবে আমার কাছে এখন দূনিয়ার সকল মানুষের সমান মর্যাদা, সমান সম্মান। আমাদের এলাকায় আধা কিলোমিটার দূরেই এক বড় হিন্দুপাড়া। কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে মুসলিম-হিন্দু সহাবস্থান ও সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি দেখেছি। ওদের বিয়েতে আমরা দাওয়াত খেতে গেছি, বলি নাকি জবাই এসব চিন্তা করিনি। সবাইকে দেখেছি একসঙ্গে আড্ডা দিতে, খেলাধূলা করতে। তবে সময় কিছুটা বদলেছে। ভিন্ন ধর্মের মানুষের প্রতি ঘৃনা, বিদ্বেষ কমার চেয়ে বেড়েছে বলা যায়। শুধু যে বাংলাদেশে, তা নয়, ইন্ডিয়া এমনকি সভ্য দেশ বলে পরিচিত দেশগুলোতেও। নিউজে দেখছেন এটা অস্ট্রেলিয়ার ঘটনা।
পৃথিবীব্যাপী এই ঘৃনার চর্চা বেড়েছে নাইন ইলিভেনে মহামান্য লাদেনের মহৎ কর্মগূণে। বিশ্বব্যাপী যে নিরাপত্তার বিড়ম্বনা, জুতা, বেল্ট খুলে চেক সবই ঐ এক ঘটনার পর থেকে কঠোরভাবে শুরু হয়েছে। আমাদের সংসদ ভবনের দক্ষিন প্লাজার সিঁড়িতে বসে মানুষ আগে আড্ডা দিতো বিকালে। এখন রাস্তা থেকেই রেলিং দেয়া। কিছু মানুষের নোংরা ও ভুল আইডিওলজির কারনে আজ এ অবস্থা। কেউ কাউকে বিশ্বাস করে না নিরাপত্তার প্রশ্নে। ধর্মকে যখন ব্যক্তিগত বিষয় থেকে রাজনৈতিক বিষয় হিসাবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা হয়েছে তখনই এই ঘৃনা, অবিশ্বাসের চর্চা শুরু।
আমাদের অনেক বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন, শিক্ষক ছোট থেকেই শিশুদের মনে গেঁথে দেয় ইহুদী নাসারারা খুব খারাপ, তারা আমাদের শত্রু। পহেলা বৈশাখ হিন্দুদের অনুষ্ঠান। আরো কত শত ঘৃনার চর্চা শেখায় আমাদের সম্মানিত অভিভাবকবৃন্দ। এই ঘৃনার চর্চাতে কারো লাভ হয়না, ক্ষতি হয় অনেক বেশী। আপনি কোন আইডিওলজিকে পছন্দ না করতে পারেন, এমনকি ঘৃনাও করতে পারেন, সমালোচনা, নিন্দাও করতে পারেন। কিন্তু ঐ আইডিওলজি যিনি বিশ্বাস করেন, মেনে চলেন তাকে ঘৃনা করতে পারেন না, এটা মানবাধিকার লংঘন, হেইট ক্রাইম। অন্তত বাচ্চাদের এটুকু শেখান তার স্কুলের সকল সহপাঠীই সমান। সে যেনো ধনী, গরীব, ধর্ম, বংশ, কালো, সাদা, লম্বা, বেঁটে বলে কাউকে ঘৃনা, তুচ্ছ করতে না শিখে সেটা নিশ্চিত করুন। সবাই তার বন্ধু। হোক সে মুসলিম, সে হিন্দু, সে ইহুদী, সে খ্রীস্টান, সে বৌদ্ধ, সে নিধার্মিক, সে সুইপার, সৈয়দ, শিল্পপতি, মন্ত্রী, আমলা, কামলা যার সন্তানই হোক। কেউ কারো চেয়ে শ্রেষ্ঠ নয়, কেউ কারো চেয়ে উন্নত, সম্মনিত নয়। সবাই সমান শ্রেষ্ঠ, সমান সম্মানিত।
আমার অনেক স্ট্যাটাসে অনেকে মন্তব্য করেন ইহুদীরা আমাদের জাত শত্রু, তাদেরকে ঘৃনা করতেই হবে। সবিনয়ে বলতে চাই এই সমস্ত চিন্তা চেতনা এই শতাব্দীতে এসে অচল মাল। এগুলো মাথায় পুশে রেখে মাথাকে গোবর সারের ভাগাড় বানাবেন না।
Related Posts
শরীয়া আইনের এক মর্মান্তিক দৃষ্টান্ত, নারীর প্রতি ইসলামের অবিচার!
মর্মান্তিক আর হৃদয়বিদারক একটা ঘটনা ২০০৪ সালের, এবং এটা ঘটেছিল ইরানে। ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামীRead More
মানুষের পৃথিবীতে আসার মূল উদ্দেশ্য কি ?
অনেক মানুষই এই প্রশ্নে ঘুরপাক খায়। এই ঘুরপাক খাওয়ার দোলাচলে তারা একপর্যায়ে তাদের মাথায় পরিবারRead More
Thinking about that evening still gives me goosebumps
From the beginning of this month, metro trains are full of passengers after 10/11 pm.Read More
Comments are Closed