
No more religious fundamentalism !
মৌলবাদীদের আল্টিমেট লক্ষ্য থাকে আফগানিস্তানের মতো তালেবানি শাসন কায়েম করা
মৌলবাদীদের তান্ডবের সমালোচনা করলে তাদের সমর্থক কিছু মডারেট আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের কিছু ছবি ধরিয়ে দেন যেখানে দেখা যায় আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের কেউ কেউ সন্ত্রাসী কাজের সঙ্গে জড়িত, হয়তো কাউকে মারছে, গাড়ি ভাংছে এসব। যদি বিএনপি ক্ষমতায় থাকতো তবে মৌলবাদীরা বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদলের এমনসব ছবি ধরিয়ে দিতো। সকল সন্ত্রাসই খারাপ, আমরা সব সন্ত্রাসের বিপক্ষে, সব সন্ত্রাসীর শাস্তি দাবী করি। তবে এই সমস্ত বিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সঙ্গে মৌলবাদীদের সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসের অনেক অনেক পার্থক্য, এমনকি মাত্রা কম হলেও।
প্রথমত মৌলবাদীরা সংঘবদ্ধ, তাদের দল চলে নিয়মতান্ত্রিক পন্থায়। সেখানে স্থানীয় কোন ব্যক্তির প্রভাব বিস্তার বা শীর্ষ নেতৃত্বকে খুশি করার ব্যাপার থাকে না। তাদের আল্টিমেট লক্ষ্য থাকে আফগানিস্তানের মতো তালেবানি শাসন কায়েম করা। প্রথম দিকে এমন কিছু কথা শোনাবে যাতে আপনি আপাত খুশি হন। তথাকথিত সুশীল মডারেটরা তো খুশি হয়ই, কারন তারা সম্পূর্ণ নিজদের ব্যক্তিস্বার্থের চিন্তা করে। ২০০৪-২০০৫ সালে বাংলা ভাই যখন জেএমবি’র ব্যানারে সর্বহারা নিধন করছিল তখন সাধারন মানুষ বাহবা দিয়েছিল। কিন্তু তাদের আল্টিমেট লক্ষ কি ছিল সেটা তো জেনে গিয়েছেন, তাইনা ? আফ্রিকার কয়েকটি দেশে এই গত এক সপ্তাহে কয়েকশত সাধারন নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে জঙ্গিরা। মৌলবাদী তৎপরতা বাড়তে দিলে জঙ্গিরা সুযোগ পেয়ে যাবে অবধারিতভাবে।
আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ সন্তাস করলেও সেটা স্থানীয় প্রভাব বিস্তার বেশীরভাগ ক্ষেত্রে। তাতে দেশের সংবিধান, নীতির কোন পরিবর্তন হয় না। কিন্তু মৌলবাদীদের মূল লক্ষ্য দেশের সংবিধান বাজেয়াপ্ত করা, বিচার বিভাগ, আইন সব নিজেদের মতো করে চালানো যেখানে মেয়েরা ৩/৪ ক্লাসের বেশী পড়তে পারবে না, ইচ্ছামতো পোশাক পরতে পারবে না, আপনি আপনার মনের ভাব প্রকাশ করে কিছু লিখতে পারবেন না, অন্য ধর্মের মানুষেরা শান্তি নিয়ে বসবাস করতে পারবে না, শিল্প/সাহিত্য/কলা/সঙ্গীত/খেলাধূলা/ভাস্কর্য কিচ্ছু থাকবে না। এক কথায় মানুষের বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা বলে কোনকিছুর অস্তিত্ব থাকবে না।
সুতরাং মৌলবাদী তৎপরতা নিয়ে যত ভয় থাকার কথা ততটা ভয় অন্যদের নিয়ে থাকবে না, এটাই স্বাভাবিক। তবে আমরা সবার আধিকারের পক্ষে, সবার বাক-স্বাধীনতার পক্ষে যতক্ষন না সেটা অন্যের অধিকার খর্ব করে। ধর্ম মানুষের ব্যক্তিগত আবেগ, বিশ্বাসের বিষয়। মানুষ তার ব্যক্তিজীবনে কঠিনভাবে ধর্মীয় প্রার্থনার আচার মেনে চলুক যার ইচ্ছা, তার ধর্ম পালনে যেন কোন বাঁধা কেউ না দেয় সেজন্যও আমরা সোচ্চার থাকতে চাই। কিন্তু ধর্মকে রাজনীতি ও রাষ্ট্রীয় জীবনে জোর করে ঢোকানোর চেষ্টা যেখানে হয়েছে তারা সবাই জ্ঞান/বিজ্ঞান/শিক্ষা/মানবতায় উন্নতির বদলে পিছিয়ে গেছে – ইতিহাস ও উদাহরন তাই বলে। ধার্মিক মানুষ মানেই কি মৌলবাদী ? না, কখনোই না। যারা ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ ধারন করে বা নিজের ফায়দা লুটতে চায় তারাই মৌলবাদী।
Related Posts

কোন কাজই ছোট না, সব কাজকেই সম্মান করতে শিখুন
আমেরিকার ১৬তম প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন নয় বছর বয়সে তার মাকে হারান। খুব অল্প বয়সেই দরিদ্রRead More

ইউক্রেনের উপরে রাশিয়ার চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধ ও পুতিনের নৈতিক পরাজয়
গতকাল ঢাকার এক লোকাল বাসে যাচ্ছিলাম পল্টন। আমার পাশে বসা এক তরুণ। সে রাজনৈতিক আলাপRead More

বাংলাদেশের ১০০% মানুষই কি দুর্নীতিবাজ ? এও কি সম্ভব ?
বাংলাদেশের খুব কম মানুষই আছে যারা আমার মতো সততার সঙ্গে বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেRead More
Comments are Closed