
Fanaticism is a Disease
লক্ষ লক্ষ বদ্ধ, উন্মাদ, মাদকাশক্তদের অভায়ারন্যে একজন উন্মাদ তো ক্ষুদ্র পিপিলীকা
কল্পনা করুন, দেশটা জার্মানি, সুইডেন, নরওয়ে, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ার মতো কোন একটা দেশ …
একজন ব্যক্তি কোন একটা ধর্মের ধর্মগ্রন্থ অন্য কোন ধর্মের উপাসনালয়ে রেখে গেছেন, ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত। ধরুন বুদ্ধিস্টদের ত্রিপিটক ফেলে গেছেন কোন গীর্জয় রক্ষিত যীশুর পায়ের কাছে। বিশ্বাস করুন সেই দেশের গড়পড়তা কোন সাধারন মানুষ, এমনকি খোদ ঐ গীর্জার পুরোহিত/ফাদার এটাকে তেমন কোন ঘটনাই মনে করবেন না। তার ধর্ম অনুভূতির কোন ক্ষতিই হবে না, হৃদয়েও রক্তক্ষরন হবে না। এ নিয়ে কোথাও কোন সংবাদ প্রচার হবে না, কেউ জ্বালাময়ী লাইভ করবে না, কেউ কোন কমিউনিটিতে মাইক নিয়ে বের হয়ে আসবে না, কোথাও কোন মিছিল হবে না। সব মানুষ অন্য আর দশটা দিনের মতোই তাদের দৈনন্দিন কাজকর্মে মনযোগ দিবেন। গীর্জার ফাদার হয়তো মনে মনে ঐ ব্যক্তিকে খুঁজবেন, কিন্তু তার কোন অপরাধ হয়েছে বলে তিনি মনে করবেন না, তার নামে কেউ মামলাও করবে না। ফাদার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ঐ ব্যক্তিকে যদি কখনো খুঁজে পান তবে তার কাছে ভদ্রভাবে ঐ গ্রন্থ রেখে যাওয়ার কারন জিজ্ঞেস করবেন হয়তো। খুঁজে না পেলে ধরে নিবেন ঐ ব্যক্তি হয়তো ড্রাংক, মাদকাসক্ত বা মানসিক কোন সমস্যা নিয়ে ছিল।
অথচ ঠিক একই রকম ঘটনা বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানে হলে কোটি কোটি মানুষ রাস্তায় নেমে যাবে, বিধর্মীদের উপাসনালয়, বাড়ি-ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে দিবে, লুটপাট করবে। একজন নামকরা ডাকাত যার জীবনে ৫/১০ টা খুনের ঘটনা আছে সেও মাইকের পিছনে হাঁটা শুরু করবে। একজন রেপিস্ট যে তার নিজ গোত্রের ২/১০ জনকে রেপ করেছে, কেউ মুখ খোলেনি তার ভয়ে, সেও লাঠি নিয়ে বেরিয়ে যাবে। যে কর্মচারী প্রতিদিন বাজারের প্যাকেট ভর্তি টাকা নিয়ে অফিস থেকে ফেরে সেও মাইকের মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে বর্ননা দিবে কেন বিধর্মীদের একটা উচিৎ শিক্ষা দেয়া দরকার। যারা রাস্তায় নামতে যাবে না, তারা ফেসবুকে আমাদের মতো মানবতার ফেরিওয়ালারা কেন জারজ, কেন মূর্খ এসব নিয়ে কীবোর্ডে ঝড় তুলবে, ভিনদেশে কবে কিভাবে তারা আক্রান্ত হয়েছিল সেসব বর্ননা দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করবে বিধর্মীদের উপর আক্রমন কেন জরুরী সেটা।
উন্মাদ, মাতাল, অন্ধ আসলে কারা ? কতজন মানুষ ? একজন উন্মাদ, মাতাল, অন্ধ মানুষ যদি তার নিজের ভুলের কারনে বা অন্যের প্ররোচনায় পুরো একটা দেশের প্রায় সকল মানুষের উন্মত্ততা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখাতে পারে তবে সেটা ইতিহাসের বড় একটা অর্জনই বলা যায় তার ঝুলিতে। আমেরিকায় দেখেছেন ফাঁদ পেতে জঙ্গি মনোভাবের মানুষকে ধরে, এফ বি আই নিজেই একটা ব্যাংক উড়িয়ে দেয়ার গল্প বলে ফাঁদ পাতে, সেখানে তারা আটক করে তাদের যারা আসলেই কোন ব্যাংকে বোমা মারতে চায়। তেমনি একইভাবে বাই চান্স বা পরিকল্পিত যাই হোক, এক ফাঁদে পা দিয়ে বাংলাদেশ/ভারত/পাকিস্তানের মতো দেশের যত মানুষ বদ্ধ উন্মাদ হয়ে ধরা দেয় তাদের সবার রাখার মতো জায়গা তো এসব দেশের জেলখানাগুলোতে নেই। এসব দেশগুলোতে একাডেমিক পর্যায়ে অনেক অনেক গবেষণা হওয়া দরকার এই সংখ্যাগরিষ্ট মানুষদের মনস্তত্ত্ব পরিবর্তনের পথ বের করার জন্য। সঠিক শিক্ষা, গবেষণা ও বিজ্ঞানের প্রসার ছাড়া আর কোন পথ খোলা নেই।
লক্ষ লক্ষ বদ্ধ, উন্মাদ, মাদকাসক্তদের অভায়ারন্যে একজন ইকবাল তো নিতান্তই ক্ষুদ্র পিপিলীকা। ইকবাল চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে এদেশের মানুষের বাস্তব মনস্তত্ত্ব।
Fanaticism is a Disease
Related Posts

একটি অর্ধ শতক পার করা দেশ ও ভাতের অধিকার
বাড়িতে এক নারী তার দুই ছোট শিশুকে নিয়ে প্রহর গুনছে কখন শিশুদের বাবা রাতে টিউশুনিRead More

কোন কাজই ছোট না, সব কাজকেই সম্মান করতে শিখুন
আমেরিকার ১৬তম প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন নয় বছর বয়সে তার মাকে হারান। খুব অল্প বয়সেই দরিদ্রRead More

ইউক্রেনের উপরে রাশিয়ার চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধ ও পুতিনের নৈতিক পরাজয়
গতকাল ঢাকার এক লোকাল বাসে যাচ্ছিলাম পল্টন। আমার পাশে বসা এক তরুণ। সে রাজনৈতিক আলাপRead More
Comments are Closed