Result
Do Exam Results Matter

Do Exam Results Matter ?

পরীক্ষায় রেজাল্ট খারাপ বাস্তব জীবনে কি কোন প্রভাব ফেলে ? না, জীবন রেজাল্টের চেয়ে বেশী কিছু !

মনে আছে সেই দিনগুলোর কথা ? স্ট্যান্ড, স্টার মার্কস, ফাস্ট ডিভিশন, সেকেন্ড ডিভিশন ? কত ছেলে-মেয়ের জীবন বিপর্যস্ত হয়েছে একটা তুলনামূলক ভাল রেজাল্ট না করার কারনে। একটুখানি উৎসাহ যাকে তুলতে পারত সুউচ্চে তাকে হয়ত আজ বাবার মুদি দোকান সামলাতে হয়। কত প্রাণ গেছে ঝরে সামাজিক লজ্জার ভয়ে !

পত্রিকার পাতায় নিয়ম করে বের হত প্রতি বোর্ডে সাইন্স, আর্টস, কমার্সে স্ট্যান্ড করাদের ছবি, পরিচয়। ভাল ছাত্রদের কাছে সে এক আরাধ্য বিষয় ছিল। তখন মিডিয়াতে নাম আসা, বিরাট ব্যাপার।

যাইহোক, এখন সেই সময় নেই। যুগ আধুনিক হয়েছে। বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে এসেছে জিপিএ সিস্টেম। তবে নামে জিপিএ হলেও ধ্যান ধারনা, পদ্ধতি সব রয়ে গেছে ইংরেজ আমলের। সমাজের মন মানসিকতাও সেই প্রাচীণ। এখনো জিপিএ ৫ না পেলে ধরা হয় ছাত্র মেধাবী নয়। পরিবারের মান যায়, সম্মান যায় সমাজের।

এসএসসি পরীক্ষায় ৪.৭৫ পেলে কী হয় ? কিংবা এইচএসসিতে ৪.২৫ ? বিএসসিতে ২.৮৫?

সন্তানের উপরে অন্যায় দাবি, চাহিদা আরোপ করার অধিকার আসলে কোনো বাবা মা, স্কুল, সমাজের নাই। সেটা এসএসসিতে জিপিএ ৫ হোক, অথবা নার্সারি-কেজি ক্লাসের ছড়া বলার দক্ষতাই হোক। কিন্তু তার চাইতেও বড় কথা হলো, জীবনের বৃহত্তর পরিসরে এই সংখ্যাগুলার কি কোনো ভূমিকা আছে?

অনেক বছর আগে যখন এসএসসির পাহাড় ডিঙিয়েছিলাম, তখন জিপিএ পদ্ধতি ছিলনা, কিন্তু স্ট্যান্ড করার মতো পদ্ধতি চালু ছিল। সেই মেধাতালিকার প্রথম ২০ জনে স্থান পাবার জন্য সবার সে কি আপ্রাণ চেষ্টা — সেটা গাদায় গাদায় গৃহশিক্ষক থেকে শুরু করে এমনকি পরীক্ষক কিংবা শিক্ষাবোর্ডে স্ট্যান্ড ঘুষ দিয়ে বেচাকেনা পর্যন্ত ছিল বিস্তৃত। ১ নম্বরের জন্য স্ট্যান্ড করতে না পেরে বহু জনে হতাশায় ভুগেছে, বাবা মা কিংবা শিক্ষকদের অবহেলা গঞ্জনার শিকার হয়েছে।

কিন্তু এত বছর পরে সেই স্ট্যান্ড করা আর না করাদের জীবনে কি খুব বেশি একটা পার্থক্য হয়েছে? আদৌ না। কিমবা ৪ বছরের বাচ্চাটা প্রতিবেশীর বাচ্চার মতো ছড়া বলতে না পারলে আজ থেকে ১০-২০ বছর পরে কি খুব বেশি তফাত হবে?

না। আদৌ না।

আমিও উপজেলা পর্যায়ের প্রধান স্কুলে ফার্স্ট বয় ছিলাম। আমি আমার মত করে জীবন সাজালেও সমাজের দৃষ্টিতে হয়ত সেই সেরা কিছু হতে পারিনি যেখানে অন্য অনেকেই হয়ত হয়েছে। আমার কাছে আমার স্বাধীনতা মূখ্য । সমাজের কাছে যেগুলো উপরের ব্যাপার জীবন চলার পথে সেটা আদৌ গুরুত্বপূর্ণ নয়।

ইউনিভার্সিটিতেও যারা ৩ এর নিচে জিপিএ পেয়ে ক্লাসে মুখ লুকিয়ে চলতো, জীবনের যাত্রায় তাদের কি আলাদা পরিণাম হয়?

না।

পরীক্ষার নম্বর হলো একটি সংখ্যা মাত্র। আপনার পরিচয় সেটা না। এবং কোনো কিছুতে কখনো কম পেলে জীবন কখনোই হয়না বৃথা — জীবন অনেক বড়, অনেক ক্ষমাশীল, অনেক সুযোগে ভরা।

যে ছেলেটি এসএসসিতে বাবা মায়ের পছন্দমতো নম্বর না পেয়ে আত্মহত্যা করেছে, সে একা নয়, প্রতি বছরেই কোনো না কোনো পরীক্ষায় অন্য কারো মনমতো ফল না করে কেউ না কেউ আত্মহত্যা করে। এই কথাগুলা কি কেউ তাদের বলবে?

জীবনে শেষ বলে কিছুই নাই, একটা পরীক্ষার একটা সংখ্যা এ জীবনের গতি প্রকৃতিকে করেনা সংজ্ঞায়িত। তাই সংখ্যার দৌরাত্ম হোক বন্ধ, অন্যের পছন্দকে সন্তুষ্ট করতে গিয়ে জিপিএর সংখ্যার চাপে পড়ে জীবনের পরাজয় হোক বন্ধ।
চিরতরে।

ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের নিজ নিজ সৃজনশীলতাকে বের করে নিয়ে আসা শিখুক। মুখস্ত নামক জগদ্দল পাথরের চর্চা বন্ধ হোক চিরতরে। বাবা-মা, পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সমাজ হয়ে উঠুক আপন শক্তিতে জ্বলে উঠার সহায়ক, নিয়ন্ত্রক নয়। শুধু ভি চিহ্ন দেখানো ছেলে-মেয়েরাই নয়, সবাই আমাদের দেশের অংশ। সবার ভিতরেই আছে কোন না কোন ক্ষমতা। ভি চিহ্নের আড়ালে চোখে জল ভরা ছেলে-মেয়েগুলোকে যেন আমরা হারিয়ে না ফেলি !


[ ডিসেম্বর ৩০, ২০২১ এ সংযোজিত ]

যারা এসএসসি’র রেজাল্ট পেয়েছো তাদের সবার জন্য অভিনন্দন ও শুভকামনা। ভাল, খারাপ এই রেজাল্ট বাস্তব জীবনে খুব কমই প্রভাব ফেলে। সুতরাং জিপিএ ৫ পেলেও অভিনন্দন, ৩ পেলেও অভিনন্দন, পাশ না করলেও অভিনন্দন। যে রাজাল্টই হোক, মন খারাপ করবে না কেউ। সফল হওয়ার জন্য দুনিয়ায় অনেক কিছু আছে যার খুব কমই ভাল রেজাল্টের উপরে নির্ভর করে। নিজেকে সৎ, দক্ষ, ভাল মানুষ বানানোটাই মূখ্য। সমাজের কে কি বললো, কে সমালোচনা করলো, কে টিপ্পনি কাটলো – ডোন্ট কেয়ার। নিজের লক্ষে এগিয়ে যাও। পরীক্ষার নম্বর হলো একটি সংখ্যা মাত্র। তোমার পরিচয় সেটা না। কোন কিছুতে কখনো কম পেলে জীবন কখনোই হয়না বৃথা — জীবন অনেক বড়, অনেক ক্ষমাশীল, অনেক সুযোগে ভরা।

Related Posts

Scientific Errors in the Quran

কোরান কি আসলেই নির্ভুল? বৈজ্ঞানিকরা কি কোরান নিয়ে গবেষণা করেন?

পাকিস্তানের এক তথাকথিত স্কলার একবার জীন দিয়ে বিদ্যূৎ উৎপাদন নিয়ে গবেষণা করেছিলেন নাকি! মোল্লা তারিকRead More

Taqiyya in Islam

ইসলামের স্বার্থে মিথ্যা, প্রতারনা তথা তাকিয়াবাজি বৈধ !

গবাদিকূল পারেও। জান্নাত জুবাইর নামের এই মেয়ে নাকি বলিউডে অভিনয় করে, আমি জানিনা। ধূর্ত গবাদগুলোRead More

Islam and Rights of Other Religions

“লাকুম দিনুকুম ওয়ালিইয়াদিন”- “যার যার ধর্ম তার তার কাছে”

“লাকুম দিনুকুম ওয়ালিইয়াদিন”- “যার যার ধর্ম তার তার কাছে” তোমরা ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করো না।Read More

Comments are Closed