
Dhaka Earthquake, If it happens !
কি হবে যদি ঢাকায় বড় কোন ভূমিকম্প আঘাত হানে ? ঢাকা কি আসলেই প্রস্তুত ?
পৃথিবীতে প্রতিদিনই একাধিক ভূমিকম্প হয়। একাধিক মানে কয়েক শত। সাম্প্রতিক সময়ের ২ টি বড় ভূমিকম্প হয়েছিল ২০১৫ সালে। এপ্রিল মাসে হয় নেপাল চীন সীমান্তে ৭.৮ মাত্রার। আর চিলিতে সেপ্টেম্বরে হয় ৮.৩ মাত্রার। চিলিতে ৮.৩ মাত্রায় ভূমিকম্প হওয়ার পরেও সেখানে মানুষ মারা গিয়েছিল মাত্র ১১ জন, ক্ষয়ক্ষতি ছিল অতি সামান্য। অথচ নেপালে যে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল সেখানে মারা গেছে হাজার হাজার মানুষ, ক্ষয়ক্ষতি ব্যাপক। আপনারা জানেন যে মাত্রা ১ বেড়ে গেলে ধ্বংসের ক্ষমতা বেড়ে যায় ১০ গুণ। সে হিসাবে চিলির ক্ষতি হওয়ার কথা ছিল নেপালের ৫/৭ গু্ণ বেশী। কিন্তু হয়নি। কারন চিলি তার অতীত ভূমিকম্পের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে তাদের শহর, বাড়ি ঘর, স্থাপনা সব পরিকল্পিতভাবে তৈরি করেছে। বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল-পাকিস্তান এসব দূর্নীতিপরায়ন দেশে পরিকল্পনা হয় কাগজে কলমে আর নেতাদের বক্তৃতায়, মানুষগুলোও তেমন। বাস্তবে হয়ত হবে কয়েক দশক পরে কোন বড় শিক্ষা পাওয়ার পর।
যাইহোক, ভূমিকম্পের অনেকগুলো কারন আছে। আমাদের এলাকায় যেহেতু আগ্নেয়গিরির ইতিহাস নেই বা আমাদের এলাকার পর্বত আগ্নেয় পর্বত নয় সেহেতু আমাদের এলাকার ভূমিকম্পের কারন টেকটোনিক প্লেটের নড়াচড়া। ভূমিকম্পের কোন পূর্বাভাস দেয়া সম্ভব নয়, সুতরাং একমাত্র উপায় ভূমিকম্পের সময় নিজেকে রক্ষা করার কৌশল আয়ত্ত করা। ভূমিকম্পের সময় তাড়াহুড়া করে নামতে গিয়ে বা নামার পথে সিঁড়িতে আটকা পড়ে বেশী মানুষ মারা যেতে পারে।
ঢাকা শহরে বা অন্য বড় শহরে নিজের বিল্ডিং মজবুত ও ভূমিকম্প সহনশীল এই যুক্তিতে গিয়ে চুপ থাকারও উপায় নেই। কারন আপনার পাশের নড়বড়ে বিল্ডিং কলাপস করতে পারে আপনার মজবুত বিল্ডিং এর গায়ে।
বাংলাদেশের সিলেট সীমান্তে ডাউকি নদী বরাবর একটা ফল্ট আছে। সেখানে ভূমিকম্পের রেকর্ড আছে। আবার ঢাকার পাশে মধুপুর অঞ্চলেও একটা ছোট ফল্টলাইন আছে। ফল্ট লাইন ছাড়াও ভূমিকম্প হওয়ার রেকর্ড আছে। আমার যতদূর মনে পড়ে কয়েক বছর আগের ৪.৫ মাত্রার মত একটা ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল গোপালগঞ্জ। তবে বড় ভূমিকম্প হলে সেটা হবে টেকটোনিক প্লেটের সীমান্তে। মায়ানমার সীমান্তেও আছে টেকটোনিক প্লেটের একটা সংযোগ যা থেকে বিধ্বংসী ভূমিকম্প হতে পারে যে কোন সময়।
কখন কোথায় কিভাবে ভূমিকম্প হয় বলা যায় না, তবে টেকটোনিক প্লেটগুলোর সীমানা বাংলাদেশ থেকে বেশ দূরে হওয়ায় বড় মাত্রার ভূমিকম্প বাংলাদেশের বড় অংশে তেমন প্রাভাব রাখবে না। তবে ঢাকা শহরে কোন বিল্ডিং কোড না মানায়, হাজার হাজার মেয়াদোত্তীর্ন ভবন থাকায়, ফায়ার ব্রিগেড, এম্বুলেন্স পৌঁছানোর রাস্তা না থাকায় ক্ষয়ক্ষতি ও জীবন নাশ হবে ব্যাপক। ভূমিকম্পে যত মানুষ মারা যাবে তার চেয়ে অনেক বেশী মানুষ মারা যাবে উদ্ধারের অভাবে। একটা দূর্নীতিপ্রবন ও প্রযুক্তিবিমুখ সমাজের মানুষের জন্য মনে হয় এটাই নিয়তি।
Related Posts

বাংলা ভাষায় এখন সবচেয়ে বেশী দরকার বিজ্ঞানের গল্প শোনানো ও শোনার অনেক মানুষ
বাংলা ভাষায় যে জিনিসটি সবচেয়ে অপ্রতুল সেটা হলো সহজ ভাষায় শিশুদের ও মানুষকে বিজ্ঞানের গল্পRead More

ভয়ংকর রোগ নেকরোফিলিয়া, যারা মৃতদেহকে ধর্ষণ করে পুলক অনুভব করে
২০১৫ সালে এই নিউজ শেয়ার করে লিখেছিলাম বলে অনেকেই আমাকে ফেসবুকে গালিগালাজ করেছিল ধর্মীয় জোশে।Read More

আরব ও মুসলিম বিশ্ব বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিমুখ কেন ? তারা এতো পিছিয়ে পড়ছে কেন দিন দিন ?
ধর্মীয় পরিচয়ে আমি বিজ্ঞানী, দার্শনিক, সমাজ সংস্কারকদের ব্রাকেটবন্দী করতে চাই না। তারা সারা বিশ্বের। তবেRead More
Comments are Closed