
Armenian Genocide and Turkey
আদতে তিনি একজন ভন্ড বলেই প্রতীয়মান হবেন ইতিহাসে !
এরদোয়ানের কথায় লাফানোর কিছু নেই। সে স্বার্থ ছাড়া চলে না, কোন কথাও বলে না। তার রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট দেশগুলোর নেতৃত্ব দেওয়ার খায়েশ পূরণ করতে সে অনেক কিছুই বলে। এরদোয়ানের চেয়ে বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ শতগুণ সেরা, তার্কির চেয়ে বাংলাদেশ অনেক উপরে, অন্তত এই দিক দিয়ে।
তার্কি ইসরাইল কে স্বীকৃতি দেয় ১৯৪৯ সালে। তখন থেকেই ইসরাইলের তেলআবিবে তার্কির দূতাবাস আছে। কত ঝড় ঝাপ্টা গেছে, সেই সম্পর্ক এখনো বহাল। অন্যদিকে বাংলাদেশ চাইলে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়া প্রথম দেশ হতো ইসরাইল। ইসরাইল আগ বাড়িয়ে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল, বাংলাদেশ তা প্রত্যাখ্যান করেছিল। অন্যদিকে বাংলাদেশ এখনো ইসরাইলকে একটা রাষ্ট্র হিসাবেই স্বীকৃতি দেয়নি।
ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের হুমকি দিয়েছেন তার্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোয়ান। অথচ ইসরাইলের সঙ্গে তুরস্কের গভীর সম্পর্কের কি হবে তা নিয়ে কিছুই বলেননি তিনি। এরদোয়ানের এমন আচরণকে ভণ্ডামি বলে আখ্যা দিয়েছেন সমালোচকরা। আদতে তিনি একজন ভন্ড বলেই প্রতীয়মান হবেন ইতিহাসে।
অটোমান সাম্রাজ্যের তার্কি শাসকদের হাতে লক্ষ লক্ষ আর্মেনীয়র নৃশংস হত্যাযজ্ঞ ইতিহাসে পরিচিত আর্মেনীয় গণহত্যা নামে। ১৯১৫ সালে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন, তার্কি সরকারের নেতারা আর্মেনীয়দের বিতাড়িত ও নিশ্চিহ্ন করে ফেলার পরিকল্পনা করে। ১৯২০ এর দশকের সূচনালগ্নে সমাপ্তি ঘটে এই গণহত্যা ও গণ স্থানান্তরকরণের, ততদিনে ৬ থেকে ১৫ লক্ষ আর্মেনীয় লাশে পরিণত হন। এর মাঝে অগণিত আর্মেনীয়কে জোর করে বের করে দেওয়া হয় দেশ থেকে। আজকের দিনে এসে অধিকাংশ ইতিহাসবিদ একে গণহত্যা বলেই অভিহিত করেন। এই হত্যাযজ্ঞটি ছিল পৃথিবীর ইতিহাস থেকে একটি আস্ত জনগোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলার জন্য একটি পরিকল্পিত অভিযান। যা-ই হোক, তার্কি সরকার এখনও পর্যন্ত এসব ঘটনার ব্যাপকতা, এমনকি এর সত্যতাও স্বীকার করে না। আর্মেনীয় গণহত্যা একটি গোটা জাতিকে হত্যাচেষ্টার নির্মম ইতিহাস। আর্মেনীয়দের ধর্মের ভিন্নতার কারনে আমাদের মানুষ সেটা আমলেই নেয় না, এমনই হিপোক্রেট আমাদের মানুষগুলো। ধর্মীয় পরিচয়ে ভিন্নতা থাকলেই তাদের কাছে সেটার যৌক্তিকতা ভিন্ন হয়ে যায়, কারন তারা মনে করে তারা ছাড়া অন্যরা নিকৃষ্ট।
তার্কি সরকার এখনো সেই পুরানো ক্ষত নিয়ে আছে, এত হত্যাযজ্ঞের পরেও আর্মেনিয়া ছাড়ার সেই যন্ত্রনা ভুলতে পারেনি। তাই আর্মেনিয়া আজারবাইজান যুদ্ধে আজারবাইজানকে তার্কি সবরকম সহযোগীতা দিয়ে চলেছে। এরদোয়ানের কথা শুনে অনেকে লাফাচ্ছে, আবেগে ভাসছে, মিথ্যা বীরত্বের গল্প শুনে আনন্দে অশ্রু ঝরাচ্ছে। যা আদতে একটা জিঘাংসা পূরণ ছাড়া অন্য কিছুই নয়। ধর্মীয় পরিচয় ভেদ করে সব মানুষকে যারা মানুষ হিসাবে দেখতে পারে না তাদের কাছে এর চেয়ে বেশী কিই বা আশা করা যায় ?
Related Posts

What are the main obstacles to Bangladesh’s development?
Bangladesh is a promising country in South Asia, with significant growth in economic progress, humanRead More

বাংলাদেশের উন্নয়নের পথে প্রধান সমস্যাগুলো কী কী?
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি সম্ভাবনাময় দেশ, যার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, মানব উন্নয়ন সূচকে অগ্রগতি এবং বৈশ্বিকRead More

What was the number of martyrs in the 1971 Liberation War?
The claim of 3 million martyrs is entirely unrealistic – there’s no logical basis toRead More
Comments are Closed