They don't even know what 999 emergency number is !
বুগান্ডার জরুরী সেবা 999 নাম্বারের গল্প এটা ! অবিশ্বাস্য সেবার উদাহরণ !
অনেক গল্প আছে, তবে এটা সেগুলোর একটি মাত্র। জরুরী সেবা যে কতভাবে, আন্তরিকভাবে মানুষের সমস্যা সমাধান করতে পারে তার ছোট্ট নমুনা এটা। আপনারাও কল দিবেন মানুষের ভয়ংকর সব সমস্যার সময়, এভাবে উদ্ধার পাবেন, আত্মবিশ্বাস বাড়বে, নিজের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে মানুষ বাঁচাতে পারবেন।
বাসার কাছাকাছি একটি কলেজ। তার একটি ভবনের ৩/৪ তলা নির্মানাধীন। মধ্যরাত। হঠাৎ নারী কন্ঠের আর্তচিৎকার। শুনে মনে হচ্ছিলো কেউ ধর্ষিতা হচ্ছে। এক দুবার একই চিৎকার শোনার পরে ৯৯৯-এ ফোন করে জানালাম। আমাকে বলা হলো অকুস্থলে যেতে, আমার ব্যক্তিগত শক্তি, সামর্থ্য সম্পর্কে তারা সম্ভবত আগেই অবগত ছিল। তাদের পূর্ণ আত্মবিশ্বাস আমি গেলে নিজের জীবন দিয়ে হলেও ঐ নারীকে উদ্ধার করতে পারবো। অসম্ভবকে সম্ভব করাই যে আমাদের কাজ ! কিন্তু একটু পরখ করে দেখার জন্য তাদের জানালাম আমি তো সাধারন মানুষ, অস্ত্রও নেই, সেখানে গিয়ে আমি নিজেও আক্রান্ত হতে পারি আবার নিজ গলে অপবাদে মালা পরে ফিরতে পারি। তাদের মনে করিয়ে দিলাম পাশেই তো থানা, তারা একটু গেলে হয়তো কোনো দূর্ঘটনা ঘটবে ন্ একটা মেয়ে বা কোন মানুষের জীবন বাঁচবে, ধর্ষনও বেঁচে থেকেও মৃত্যুর মতো। এরপর তারা আমাকে সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত এবং তড়িৎ সেবাটি দিলো। আমি অবাক হলাম, কিভাবে সম্ভব বুগান্ডার এই জনহিতকর সেবা ? নিকটবর্তী থানার একটি নম্বর দেয়া হলো আমাকে। কল দিলাম, আনরিচেবল। তারা একটি নাম্বার দিয়ে নিজেরা ধন্য হলো, আমাকেও আজীবন কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করে দিলো।
পরদিন জানলাম একটি প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের কিছু ছাত্র-ছাত্রী ওখানে অবস্থান করছিলো পূর্বরাত্রে। জানিনা শেষ পর্যন্ত সেখানে কি ঘটেছিলো, কত মেয়েই তো ধর্ষনের পরে আর কাউকে বলে না ভিকটিম ব্লেইমিং এর ভয়ে। সমাজটাই তো এমন ! পৃথিবীর ভয়ংকরতম অপরাধের একটি চেপে যাওয়া তাকে হয়তো তার আজীবন সম্মানটুকু রাখবে। যে ছাত্রীরা অবস্থান করছিলো তাদেরই কেউ কোন ছাত্র দ্বারাও আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারে। আবার আসলে কিছু নাও ঘটে থাকতে পারে। আসলেই কি কেউ বিপদে পড়েছিলো নাকি ওটা ওদের স্রেফ চেচামেচি তাও জানি না।
অন্য কেউ হলে হয়তো খুব অস্বস্তি আর অপরাধবোধ নিয়ে ঘুমাতে যেতো সে রাতে। অপরাধবোধ এ জন্যে যে এগিয়ে গিয়ে কিছু করতে পারছিল না – যদিও সে না পারাটার কারন নিজের নিরাপত্তা কিংবা সাজানো মামলায় আসামী হবার ভয় থেকেই। তবে আমি খুবই খুশী হয়েছিলাম বুগান্ডার জরুরী সেবার এই চমৎকার জনহিতকর কাজের নিদর্শন দেখে। ভাবতে পারেন, প্রথমে তারা আমাকেই উদ্ধার অভিযানে একা যাওয়ার সাহস দিয়ে কিভাবে আমার ভিতরের সুপ্ত বারুদকে জ্বালিয়ে দিলো, পরে আবার নিকটবর্তী থানার আনরিচেবল নাম্বার দিয়ে আজীবন ঋণী করে রাখলো। ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড সবাই শিখতে আসো বুগান্ডায়। জরুরী সেবা নাম্বার কাকে বলে, সার্ভিস কি তাও দেখো, শেখো, শিখে গিয়ে নিজেদের দেশের মানুষের জন্য কাজে লাগাও।
এটা স্রেফ একটি গল্প। আমার বাসার পাশে কোন কলেজ নাই।
Comments are Closed