
We are Stateless People !
আমাদের কোন অভিভাবক নেই, আমাদের পাশে আমাদের রাষ্ট্র নেই
সেই ২০০৭ সাল থেকে শুনে আসছি। বাংলাদেশের সরকারগুলোর মুরোদ হয়নি এত বছরেও পেপাল নিয়ে আসতে। বাংলাদেশের ফাইন্যান্সিয়াল পলিসিগুলো এত ব্যাকডেটেড ও সংকীর্ণ যে পেপাল পাশের দেশ ভারত, নেপাল, ভূটানে থাকলেও বাংলাদেশে আসতেই চায়নি। অনেকে বলেন সরকারই ইচ্ছা করে পেপাল নিয়ে আসে না। আর এদিকে সরকার ঢাক ঢোল পিটিয়ে বলে আমরা এত লক্ষ ফ্রিল্যান্সার তৈরি করেছি। পেপাল না থাকায় বাংলাদেশের বিলিয়ন ডলার মার্কেটে ঈসরাইলী কোম্পানি পেওনিয়ার একচ্ছত্র আধিপত্ত গেঁড়ে বসে। পেওনিয়ারের কার্ড ইস্যু করে জার্মানভিত্তিক ওয়্যারকার্ড এজি এর ইউ কে শাখা। কিছুদিন আগে ওয়্যারকার্ড এজি জার্মানিতে দেউলিয়া হয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে ২০০ কোটি ডলারেরও বেশী অর্থের অনিয়মের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে ইউ কে’র ফাইনান্সিয়াল কর্তৃপক্ষ সকল পেওনিয়ার মাস্টারকার্ডের সকল কর্মকান্ড অনির্দিষ্টকালের জন্য ফ্রিজ করে দিয়েছে। এখন বাংলাদেশের এই লক্ষ লক্ষ ফ্রিল্যান্সার পড়েছে বিপদে। পেওনিয়ার কার্ডে থাকা তাদের শত শত কোটি টাকা আটকা পড়লো। যারা বিভিন্ন সার্ভিসের জন্য বিদেশে এই কার্ড দিয়ে পে করে তারা আর পে করতে না পারায় তাদের সার্ভিসগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। সরকারের কোন মাথাব্যাথা কোনকালেই ছিল না, এখনও নেই। এই লক্ষ লক্ষ ছেলে-মেয়ের জমা হওয়া অর্থ ও ভবিষ্যৎ কাজকর্মের কি হবে ? সরকারের কেউ কি পেওনিয়ার বা ওয়্যারকার্ডের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে বাংলাদেশীদের স্বার্থ সংরক্ষনের ব্যবস্থা করেছে ? করেনি। দূর্মুখেরা বলে – তারা ব্যস্ত থাকে ৪০০০০ টাকার ওয়েবসাইট ৪ কোটি টাকা দিয়ে বানানোর রাস্তা খুঁজতে।
নিজের চেষ্টায় সবাই ফ্রিল্যান্সার হয়, এই রেপুটেশান, এই কর্মযজ্ঞ সবই এক একজন ব্যক্তি মানুষের সফলতার যোগফল। এখানে সরকারের তেমন কোন অবদান দেখি না। সরকার কোটি কোটি টাকা কিছু কোম্পানিকে খাওয়ার সুযোগ দিয়ে নামকাওয়াস্তে কিছু কম্পিউটার অপারেটর তৈরি করে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে ছাড়ে, বাংলাদেশের রেপুটেশন বরং খারাপ করার ব্যবস্থা করেছে সেটা। এই ব্যাপারে প্রতিষ্ঠিত ফ্রিল্যান্সাররা মোটামুটি একমত সবাই।
এর আগে মানিবুকার-পেইজা হঠাৎ গায়েব হয়ে গেল। বাংলাদেশের এই অসহায় ছেলে-মেয়েদের স্বার্থ রক্ষার জন্য কোন রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ ছিল না। পেপাল যে কতটা জরুরী তা বোঝার ক্ষমতা এই দেশের সরকারগুলোর হবে না। পেপাল ভূটানে গেলে, নেপালে গেলে বাংলাদেশে কেন আসবে না – সেই কারন খুঁজে তার প্রতিকার কেন করা যায় না ? মাঝে ফাঁকা মাঠে পেওনিয়ার স্বেচ্ছাচারী হয়ে কষ্টের টাকায় ভাগ বসায় বেশী করে। অন্য কোন বিকল্প তো নেই।
এখন কিভাবে আমাদের টাকাগুলো আমরা হাতে পাবো, কিভাবে বিদেশে ডোমেইন, হোস্টিং এর বিল পেমেন্ট করবো ? বাংলাদেশ থেকে আবার এসব পেমেন্টও করা যায় না। কি এক অদ্ভুত পলিসি মাইরি ! হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার ঠেকাতে পারে না। প্রয়োজনে কেউ ১৫ ডলার খরচ করতে গেলেও তার কোন উপায় নেই। এই ১৫ ডলার খরচ করে ৩০ ডলার আসতে পারে দেশে, সেই সুচিন্তা কেউ করে না। হয়তো পেওনিয়ারের কল্যানে অথবা ইউ কে’র নিয়ন্ত্রনকারী কর্তৃপক্ষের বদন্যতায় আমরা ফিরে পাবো আমাদের টাকা, আমরা আবার আমাদের কাজ ও সার্ভিস এগিয়ে নিতে পারবো। মাঝের সময়টুকু হতাশা ও পিছিয়ে পড়ার সাক্ষী হিসাবে থাকবে। কারন আমাদের কোন অভিভাবক নেই, আমাদের পাশে আমাদের রাষ্ট্র নেই।
[ Picture, CC BY 2.0 ]
Related Posts

অপেশাদার মানুষের মাধ্যমে তৈরি অরক্ষিত বিদ্যুৎ লাইনের জন্য আর কত প্রাণ যাবে ?
সাম্প্রতিক সময়ের কয়েকটি সংবাদ শিরোনামঃ “ভাত খেতে রান্নাঘরে ঢুকতেই বিদ্যুতায়িত হয়ে স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু”“চাটমোহরে ফ্যান চালুRead More

বজ্র আঁটুনি, ফস্কা গেরো ! এই দেশের সেকেলে সিস্টেম ‘শক্তের ভক্ত, নরমের জম’
আমার ইস্টার্ণ ব্যাংকের একটা প্রিপেইড এ্যাকোয়া মাস্টারকার্ড আছে যেটা দিয়ে একজন মানুষের বছরে ভ্রমনের জন্যRead More

চারপাশে দুর্নীতির মেলা বসছে – তা নিয়ে ওনাদের সমস্যা নাই, যতো সমস্যা মেয়েদের ড্রেস নিয়ে
কে কি পোশাক পরবে, কার সঙ্গে ঘুরবে, কার সঙ্গে বিয়ে করবে, কার সঙ্গে শোবে এগুলোRead More
Comments are Closed