
Unethical Society !
অনেকেই উপরে উঠার শর্টকাট সিঁড়ি খোঁজে, সৌন্দর্য্য ও শরীরের বিনিময়ে হলেও
সব মৃত্যুই দুঃখজনক। এই মেয়েটির মৃত্যূর জন্য দায়ীদের শাস্তি চাই। পাশাপাশি এই মেয়ের বাবা-মায়েরও শাস্তি চাই। মেয়েটি বেঁচে থাকলে তার শাস্তিও চাইতাম। একটি ২০ বছরের মেয়ে ৪২ বছরের একজন পুরুষের সঙ্গে প্রেম করছে ! মনে হয় না এটা প্রেম। অনেক মেয়েই এখন নিজে উপযুক্ত লেখাপড়া না শিখে, নিজের যোগ্যতায় প্রতিষ্ঠিত না হয়ে কোন ধনী মানুষের মাধ্যমে নিজের ভবিষ্যৎ করতে চায়। লম্পট, লোভী ও ধুরন্ধর অনেক পুরুষ সেই সুযোগটি নেয়, অনেকক্ষেত্রে মেয়েকে ফাঁদেও ফেলে। এমন অনেক কিছুই এখন ঘটছে। এক বয়স্ক ব্যবসায়ী এক অল্পবয়সী মেয়ের শারীরিক সঙ্গের বিনিময়ে তাকে ফ্ল্যাট কিনে দিচ্ছে, মেয়েটি পরে তার সমবয়সী কাউকে বিয়ে করছে – এমন কিছু এখন অবাস্তব না।
এই মেয়ে গুলশানে একা ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা ভাড়ার ফ্ল্যাটে থাকতো। এই বিলাসী জীবনের মোহ ও কষ্ট না করে সুখী হওয়ার প্রবনতা অনেক মেয়ের মাঝেই এখন আছে। মেয়েরা নিজেরা যোগ্যতা দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে পারলে সেটা যে বেশী গৌরবের এটা এখন অনেক মেয়েই মানে না, তারা উপরে উঠার শর্টকাট সিঁড়ি খোঁজে, সৌন্দর্য্য ও শরীরের বিনিময়ে হলেও। এই মেয়ের বাবা-মা কি জানতো না তাদের মেয়ে একা কোন আয় ছাড়াই ঢাকাতে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা ভাড়ার ফ্ল্যাটে কিভাবে থাকে ? বাবা-মা যদি জেনেশুনে মেয়ের এই অস্বাভাবিক জীবনের পক্ষে থেকে থাকে তবে তাদেরও বিচারের আওতায় আনা দরকার।
সবসময় যে বিয়ের জন্য বা সম্পর্কের জন্য ছেলেকে প্রতিষ্ঠিত ও ধনী হতে হবে তা কেন ? মেয়ে অধিকতর প্রতিষ্ঠিত হলে ক্ষতিটা কি ? বাংলাদেশের মেয়েদের, বিশেষ করে একটু সুন্দরী যারা তাদের অনেকের এই ধারনা থেকে বের হতে হবে যে সৌন্দর্য্য তাদের প্রতিষ্ঠিত হওয়ার বড় যোগ্যতা। সমাজকেও সেইভাবে বদলাতে হবে। সবার স্থান হওয়া উচিৎ তার কাজের ও মানবিক যোগ্যতা, দক্ষতা দিয়ে। শর্টকাট সিঁড়ি বেয়ে এই প্রতিষ্ঠিত হতে চাওয়া, ধনী হতে চাওয়া ও ফাঁদে ফেলে সিঁড়িতে তোলা দুটাই খুবই বিপজ্জনক।
দৃশ্যমান আয়ের সঙ্গে জীবনযাপনের ব্যবধান থাকলে বাবা-মায়ের উচিৎ ছেলে-মেয়েকে প্রশ্ন করা, ছেলে-মেয়ের উচিৎ বাবা-মা’কে প্রশ্ন করা। বাবা-মা হলেই যে তারা সব কিছুর উর্দ্ধে, ধোয়া তুলশিপাতা, তা নয়। কারন সবার বাবা-মা যদি শ্রেষ্ঠ হয় তবে দূর্নীতি করে বিলাসী জীবন যাপন করার সুযোগ দেয় কোন বাবা-মা। তেমনি নিজের সন্তান হলেই যে সে কোন অন্যায় করতে পারে না, এটাও ঠিক নয়। স্নেহ, ভালবাসার উর্দ্ধে উঠে সন্তানের অপরাধকেও অন্যায় হিসাবে দেখতে হবে, দেখাতে হবে।
————-
আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি না যে ব্রেক-আপের কারণে কেউ আত্মহত্যা করলে অপরপক্ষকে দায়ী করতে হবে। তবে আত্মুহত্যায় বাধ্য করলে বা মার্ডার করলে সেটা বড় অপরাধ।
কেউ যদি ব্রেক-আপ বা আত্মহত্যা করার জন্য ভয়ভীতি, মানসিক চাপ, হুমকি, নির্যাতন করে থাকে তাহলে অবশ্যই সেটা সাধারণ সম্পর্ক ছিন্নের মধ্যে পড়বে না। আইন মতে, এটি একটি অপরাধ। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ীও কাউকে ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে আত্মহত্যা করতে প্ররোচিত করলে তা অপরাধ। বের হওয়া ফোনালাপে এটা বোঝা যায় মুনিয়াকে বাধ্য করা হয়েছে আত্মহত্যা করতে না হয় হত্যা করা হয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সদিচ্ছা নিয়ে তদন্ত করলে সেটা বের করতে পারবে। অভিযুক্ত আনভীর মিয়া দেশের বড় শিল্পগোষ্ঠীর মালিক, পুলিশ কতটা প্রভাবমুক্ত হতে পারবে সেটা এখন বিষয় !

তবে বাংলাদেশের মানুষের প্রভাবশালী পুরুষ অপরাধীর চেয়ে দূর্বল নারীর দোষ খোঁজার প্রবনতা বেশী। কার্টুনটি আমাদের সমাজের একটি বাস্তবচিত্র।
Related Posts

মায়ের গর্ভে সন্তান ও সেই ছবিটি হতে পারতো পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম ফটোগ্রাফি কিন্তু এখানে …
কয়েকদিন আগে এক বৃদ্ধ ভদ্রলোকের কথা জানলাম। তিনি আবার তথাকথিত এক বড় ধর্মীয় রাজনৈতিক দলেরRead More

বুগান্ডার জরুরী সেবা 999 নাম্বারের গল্প এটা ! অবিশ্বাস্য সেবার উদাহরণ !
অনেক গল্প আছে, তবে এটা সেগুলোর একটি মাত্র। জরুরী সেবা যে কতভাবে, আন্তরিকভাবে মানুষের সমস্যাRead More

ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নকে ঘিরে কিছু সাধারণ কল্পকাহিনী ও প্রকৃত বাস্তবতা বা ফ্যাক্ট
মিথ: যে কোন সময় একা বাইরে যাবেন না। গভীর রাতে বাইরে, অন্ধকার গলিপথে মহিলারা সবচেয়েRead More
Comments are Closed