
Stand Against Corruption
এখানে অন্ধ গলির নরকে মুক্তির আকুলতা ! শোন বন্ধু শোন
এই দেশে এমন একজন সাহসী মানুষ সত্যিই বিরল। সামনাসামনি এমন করে মানুষ বলার সাহসও পায়না আজকাল। আবার ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা … সোনার বাংলা … এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি … বিশ্বের বিষ্ময়… উন্নয়নের রোল মডেল… ৯০% ড্যাস এর দেশ বলে বাল ফালানেওয়ালারা চ্যাতে আসবে এই ভয়ে কেউ শব্দটিও করেনা।
গতকাল একটি সরকারী ও ৩ টি বেসরকারী অফিসে গিয়েছিলাম। আজও আর একটি সরকারী অফিসে গিয়েছিলাম। বেসরকারী তিন অফিসের বিষয়ে কোন কমপ্লেইন নেই। অন্তত হাসিমুখে তারা জানিয়ে দেয় কোনটি পারবে আর কোনটি পারবে না।
গতকাল যে সরকারী অফিসে গেলাম সেখানে সুনশান নিরবতায় জনাকয়েক কেরানী বসে মাছি মারছে। তেল চিটচিটে টেবিলে গভীর মনযোগ দিয়ে এক ৩৫/৪০ বছরের যুবক গম্ভীর মুখে বসে একটার পর একটা পাতা উল্টাচ্ছে পুরানো ময়লা ধরা এক বস্তা কাগজে, কোন জরুরী কাজ বলে মনে হলো না। সারাদিন কম্পিউটার নিয়ে বসে থাকা আমার কাছে মনে হলো আমি কোন প্রাচীন ডাইনোসরের রাজ্যে প্রবেশ করেছি। খুব বিনীতভাবে আমি আমার সামান্য একটা জানার বিষয় জিজ্ঞেস করলাম। ১০ টা কথা বলার পরে ১৫/২০ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়ে ঐ চেয়ারে বসনেওয়ালা অভদ্রলোকটি একটুখানি মুখ তুলে চাইলেন। হাতের ইশারায় কি দেখালেন। আমি বুঝতে না পেরে শুয়োর মহাশয়কে আবার জানালাম, আমার সামান্য একটা জিজ্ঞাসা। উনি ৩/৪ টা শব্দে যার উত্তর দিতে পারেন। তা না দিয়ে উনি পাশের রুমে যেতে বললেন। সেই রুম ভিতর ও বাইরে থেকে ছিটকিনি দেয়া। একটু নাড়াচাড়া করাতে মিনিট ২ পরে এক ট্যাঙা ছেমড়ি অন্যদিক থেকে ষাঁড়ের মতো চিল্লানো শুরু করলো। লাঞ্চ টাইম, পরে আসেন। মোবাইলে দেখি ১২ টা বেজে ১০ মিনিট। বাঙালি এই সময়ে এখন লাঞ্চ করে, ভালো। কতক্ষন পরে ? জিজ্ঞেস করলে আবার বলে পরে আসেন।
ফিরে গেলাম সেই শুয়োর মহাশয়ের কাছে। আবারো বলি সামান্য একটা প্রশ্ন। এবার তিনি অতি দয়াপরবশ হয়ে জানালেন ৩ শব্দে উত্তর। আমি উত্তর পেয়ে অন্য টেবিল থেকে একটা ফর্ম নিলাম। ফর্মে এমন কোন তথ্য নেই যা চাওয়া হয়নি। কিন্তু লেখার জায়গা নেই। তিন লাইনে লেখার বিষয়বস্তুর জন্য জায়গা বরাদ্দ ১ ইঞ্চি লাইন। শুধু এই অফিস নয়, সরকারী প্রায় সব অফিসের ফর্মগুলো এমনই। একটা ফর্ম ঠিকঠাক মতো তৈরি করার মুরোদ নেই এদের।
আজ এক সরকারী অফিসে গেলাম। রাস্তায়, রোঁদে ১০০ জনের লাইনে দাঁড়িয়ে শেষে উনি জানালেন কোন রুমে যেতে হবে। আপনি সেই রুমের তথ্য আগে থেকে জানলেও চলবে না। উনার বদান্যতা লাগবে। যাইহোক, পরবর্তী স্থানে গিয়ে দেখি ২০০ মানুষের লাইন। একজন মাত্র মহাশয় টেবিল চেয়ার পেতে বসে তথাকথিত সেবা দিচ্ছেন, যে সেবা আমরা হাজার হাজার টাকায় কিনে নিচ্ছি, অন্যদিকে হয়তো ১০ জন কর্মচারী মাছি মারছে। সামনে যাওয়ার পরে কোন কথাই শুনলেন না তিনি, মনে হলো জগতে তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যার গুরুত্ব অপরিসীম। একটির জন্য দুই সপ্তাহ পরে পরবর্তী দিন দিয়ে ও অন্যগুলোর জন্য আরো একমাস পরে আবার লাইনে দাঁয়িয়ে উনার কাছে জেনে নিতে বললেন কয় সপ্তাহ পরে দিন পাওয়া যাবে। অথচ নিয়মানুযায়ী এইগুলো আরো সাড়ে তিন মাস আগেই সমাধান হওয়ার কথা। কারো কোন অনুশোচনা নেই, কোন দুঃখবোধ নেই, কারো জাববদিহিতাও করা লাগবে না, কারো কোন শাস্তিও হবেনা। এই ধূলার শহরে, এই শীর্ষ বায়ুদূষনের দেশে, শীষ জ্যামের শহরে সাধারন মানুষের সময়, শ্রম, অর্থের কোন মূল্যই নেই।
এগুলো খুব সামান্য ঘটনা। এর চেয়ে বড় বড় অপমান, অপদস্থ হওয়ার নজির ভুরি ভুরি সরকারী এই আমলা, কামলাদের দ্বারা। এই অবস্থা দিন দিন আরো খারাপ হবে, ভালো হবে না। গ্যারান্টি।
এই সোনার দেশ এমনই। মানুষ শুধু পুলিশ ও ডাক্তারদের দিকে আঙ্গুল তোলে। কিন্তু আমার সর্বশেষ কয়েকটি অভিজ্ঞতায় পুলিশ ও ডাক্তারদের মনে হয়েছে তারা এই সমস্ত সুশীল কামলা, আমলাচালিত শত শত অফিস থেকে এখনো ভালো আছে। অন্তত ভালো পরিবর্তন নিয়ে আসার চেষ্টা কেউ কেউ করছেন পুলিশে, চিকিৎসায়।
এদেশ আমাদের নয়, আমরা এদেশে চলার উপযোগী নই। এখানে জন্মটাই আজন্ম পাপ। কিন্তু চাইলেই তো অন্যদেশ আমাদের জায়গা দিবেনা। কারন এই অসভ্য, বর্বর, দূর্নীতিবাজ, জাজমেন্টাল, রেসিস্ট, বুলিংপ্রিয় দেশের মানুষ আমরা। কেউ চাইবে না তাদের দেশকে দূষিত করতে।
Related Posts

একটি অর্ধ শতক পার করা দেশ ও ভাতের অধিকার
বাড়িতে এক নারী তার দুই ছোট শিশুকে নিয়ে প্রহর গুনছে কখন শিশুদের বাবা রাতে টিউশুনিRead More

কোন কাজই ছোট না, সব কাজকেই সম্মান করতে শিখুন
আমেরিকার ১৬তম প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন নয় বছর বয়সে তার মাকে হারান। খুব অল্প বয়সেই দরিদ্রRead More

ইউক্রেনের উপরে রাশিয়ার চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধ ও পুতিনের নৈতিক পরাজয়
গতকাল ঢাকার এক লোকাল বাসে যাচ্ছিলাম পল্টন। আমার পাশে বসা এক তরুণ। সে রাজনৈতিক আলাপRead More
Comments are Closed