
Rights for the disabled !
যে সমাজে প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা সুযোগ নেই, সেই সমাজকে আর যাই বলেন সভ্য বলতে পারেন না
আমরা যারা ওয়েব টেকনোলজি নিয়ে কাজ করি তারা এখন জানি স্মার্ট মোবাইল বিপ্লবের পর থেকে রেসপনসিভ লে-আউট অনেকটা স্ট্যান্ডার্ড হয়ে গেছে, ম্যান্ডেটরিও বলতে পারেন। এরপর এখন এক্সসেসিবেলিটি রেডিও প্রায় ম্যান্ডেটরি স্ট্যান্ডার্ড হয়ে গেছে। মানে, একটি ওয়েবসাইট, এ্যাপ, সফটওয়্যার যেনো শারিরীক প্রতিবন্ধী, অন্ধ, বাক ও শ্রবন প্রতিবন্ধী, হাত/পা হীন যে কোন ব্যক্তি সহজে ব্যবহার করতে পারেন কারো সাহায্য ছাড়াই। উন্নত দেশে যে কোন সরকারী বেসরকারী স্থাপনা, রাস্তা, ট্রান্সপোর্ট যেমন বাস, ট্রেন সবই এমনভাবে ডিজাইন করা হয় যেনো একজন হ্যান্ডিক্যাপ ব্যক্তি খুব সহজেই কারো সাহায্য ছাড়াই চলাচল করতে পারেন। আমরা সেখানে এখনো তাদেরকে অন্যদের উপর নির্ভরশীল করে রাখতে, উঠতে বসতে খোঁড়া, ল্যাংড়া, লোলা, হাবা, বোবা, কালা, কানা, পাগলা এসব বলে অভ্যস্ত।
কোন দেশের মানুষ কতটা সভ্য তা বোঝার একটা নির্দেশক হল সে দেশের মানুষ বয়স্ক, প্রতিবন্ধী, নারী, শিশু, সংখ্যালঘুদের সঙ্গে কেমন আচরন করে বা তাদের সহায়ক কি কি ব্যবস্থা রাখছে সেটা। এক্ষেত্রে আমাদের দেশের হাল একেবারে তলানিতে। কোন রাস্তার ফুটপাতে কোন সাধারন মানুষই বিনা বাঁধায় ১ মিনিট হাঁটতে পারবে না ঢাকা শহরে। আমি প্রতিদিন নিয়ম করে ৩০-৬০ মিনিট হাঁটি। সত্য বলতে ঢাকা শহরের কোন ফুটপাত, পার্ক হাঁটার উপযোগী নয়। প্রতি পদে পদে বাঁধা। ভাঙ্গাচোরা, বাড়ির রাস্তা ফুটপাট কেটে বেরিয়েছে, রেস্টুরেন্ট, দোকানের মালামাল ফুটপাতের ২/৩ ভাগ দখলে রাখছে, পান সিগারেটের দোকান ফুটপাতজুড়ে, নির্মানাধীন ভবনের ইট, বালি, রড ফুটপাতের পুরোটা দখলে রাখছে, নির্মানাধীন রাস্তা মাসের পর মাস ফেলে রাখা, কোথাও বিড়ি ফুকে সমানে ধোঁয়া ছাড়ছে কোন বিড়িখোর আহাম্মক ( বেশীরভাগ বিড়িখোরই এমন আহাম্মক হয় ), জটলা পাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মানুষ, আরো কত শত বাঁধা। সেখানে একজন মানুষ হুইলচেয়ারে ঘুরবে সেই আশা করেন ? অদ্ভুত। কেউ ভাবেনি তাদের কথা, কেউ ভাবেনা। কোন ফুটপাতই হুইল চেয়ারের উপযোগী নয়, হ্যান্ডিক্যাপ মানুষের উপযোগী নয়। কেউ স্টপেজে বাসে বা প্লাটফর্ম থেকে ট্রেনে উঠতে পারবেন ? কোন মার্কেটে শপিং এ যেতে পারবেন একা একা ?
বেশী দূরে নয়, পাশের দেশ থাইল্যান্ডের সব রাস্তা, মার্কেট, স্কুল, কলেজ হুইল চেয়ার চলার উপযোগী। ফুটপাতে মাঝে মাঝেই হুইলচেয়ার উঠানোর কার্ভ। আমাদের এই দেশে সাধারন মানুষ থেকে শুরু করে সরকারী বড় আমলা সবারই কমন সেন্স খুবই কম। নিজের নির্বুদ্ধিতা বা আচরনের কারনে অন্যের কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা সেটা ভাবার মত অবকাশ কারো নেই। কোন স্থাপনা, রাস্তা, যানবাহনের প্ল্যান করার সময় এই হ্যান্ডিক্যাপ মানুষের কথা কেউ এখানে ভাবে বলে মনেই হয়না। অন্তত তার কোন নজির কোথাও চোখে পড়ে না। এগুলো নীতিতে এখনো আসেনি, তথাকথিত উচ্চশিক্ষিত কর্তৃপক্ষ নামের ছাগলগুলোও চিন্তা করেনা।
বাসে প্রতিবন্ধী, মহিলা শিশুদের জন্য ৯ টি সিট সংরক্ষিত এমন একটি নোটিশ ঝুলিয়েই খালাস! কারো এই নিয়মের প্রতি সম্মানবোধ নেই।
যাইহোক যে সমাজে প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা সুযোগ নেই, মানুষ তাদের সম্মান করে না, তাদের কানা, কালা, ল্যাংড়া, হাবা-গোবা বলে তাচ্ছিল্য করা হয়, সেই সমাজকে আর যাই বলেন সভ্য বলতে পারেন না।
Related Posts

শরীয়া আইনের এক মর্মান্তিক দৃষ্টান্ত, নারীর প্রতি ইসলামের অবিচার!
মর্মান্তিক আর হৃদয়বিদারক একটা ঘটনা ২০০৪ সালের, এবং এটা ঘটেছিল ইরানে। ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামীRead More

মানুষের পৃথিবীতে আসার মূল উদ্দেশ্য কি ?
অনেক মানুষই এই প্রশ্নে ঘুরপাক খায়। এই ঘুরপাক খাওয়ার দোলাচলে তারা একপর্যায়ে তাদের মাথায় পরিবারRead More

Thinking about that evening still gives me goosebumps
From the beginning of this month, metro trains are full of passengers after 10/11 pm.Read More
Comments are Closed