Please respect others
ফ্রিল্যান্সারদের উদ্দেশ্যে বলছি
আমি ফ্রিল্যান্সার না তবে আমার কাজ বা বেঁচে থাকা ফ্রিল্যান্সিং এর সঙ্গে সম্পর্কিত। আমি অতি সাধারন ও মেধাহীন একজন মানুষ। তার পরো চিরাচরিত স্বভাব মত কিছু উপদেশ দেয়ার চেষ্টা করছি। রথী মহারথী ফ্রিল্যান্সারদের নিকট আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি উপদেশ দেয়ার জন্য।
এখন আই টি ফ্রিল্যান্সিং এর কল্যানে অনেকেই তাদের মেধা, পরিশ্রম ও বুদ্ধির জোরে অনেক বেশী ইনকাম করতে পারে। অনেক সরকারী, বেসরকারী চাকুরীজীবীর চেয়ে তো বেশীই। মাসে ২ লক্ষ টাকার বেশী ইনকাম করা শত শত আই টি ফ্রিল্যান্সার আছে দেশে। কিন্তু কবিগুরুর কথা ” রেখেছ বাঙ্গালী করে, মানুষ করনি” কে মিথ্যা প্রমান করতে পারে কজন?
কঃ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া
দেশের প্রচলিত আইন যতই খারাপ হোক তা পরিবর্তন করার চেষ্টা করা যেতে পারে কিন্তু যতক্ষন সে আইন বলবৎ থাকবে সেটা মেনে চলতে হবে। সরকার ২০১৯ সালের জুন মাস পর্যন্ত আইটি সার্ভিস থেকে ইনকাম কে কর অবকাশ সুবিধা দিয়েছে। সুতরাং কোন ট্যাক্স দিতে হবে না, হয়ত নূন্যতম ট্যাক্স ২/৫ হাজার দেয়া লাগতে পারে। আর ব্যাংকে টাকা রাখলে TIN নাম্বার না থাকলে ১৫% ট্যাক্স কেটে নেয় সুদ থেকে আর TIN নাম্বার থাকলে ১০% কাটে। মজার ব্যাপার হল সবার কম বেশী ব্যাংকে একাউন্ট আছে এবং এই একাউন্ট থেকে বেশী টাকাই ট্যাক্স বাবদ কাটে যা নির্ধারিত ট্যাক্সের চেয়ে বেশী। তাই অতিরিক্ত কোন টাকাই লাগার কথা না ইনকাম ট্যাক্স বাবদ। তাহলে বার্ষিক ২২০,০০০ টাকার বেশী উপার্জন হলে যে রিটার্ণ দাখিল করতে হয় নাগরিকদের সেটা কেন দাখিল করবেন না? আর এখন অনলাইনেই TIN নাম্বার পাওয়া যায়, রিটার্ণ দাখিল করা যায়। আয়কর মেলা হওয়ার সময়ও আপনি সেগুলো করতে পারেন। তাহলে কেন আপনার টাকাকে কাল টাকা হিসাবে সীল দেয়ার সুযোগ দিবেন? ইউ এস সহ অন্য অনেক দেশেই উপার্জনের সোর্স পর্যায়েই ২০% থেকে ৫০% ট্যাক্স কেটে রাখে। ইউ এস ফ্রিল্যান্সারদের জন্যও কিন্তু এটা প্রযোজ্য। রাস্তাঘাটে বা অন্য স্থানে চলাফেরা করার সময় ও ফ্রিল্যান্সাররা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকলে মানুষ এই নতুন পেশাটিকে সাদরে স্বীকৃতি দিবে।
খঃ মানুষের প্রাইভেসীকে শ্রদ্ধা করা
ধরুন আপনার ল্যাপটপে বসে কেউ ফেসবুক ওপেন করল। ভুল করে লগ আউট হয়নি বা পাসওয়ার্ড রিমেম্বার অপশনে টিক দিয়েছে। আপনি কি করবেন? তার একাউন্টে ঢুকে আপনি সব দেখবেন? কার কাছে কি ম্যাসেজ দিয়েছে, কে কে বন্ধু এসব দেখে তাকে বিব্রত করবেন? সেটা কখনই উচিৎ হবে না। প্রত্যেক মানুষের প্রাইভেসীকে সম্মান দিতে হবে। কারো অনুমতি ছাড়া ততটুকুই দেখা যাবে যা সে সবার সঙ্গে শেয়ার করেছে। অনেক বায়ার আপনাকে তার সাইটের লগ ইন ইনফো দিবে, ক্রেডিট কার্ডের ইনফো দিবে বিশ্বাস করে। সে বিশ্বাসের মূল্য দিতে হবে। আপনার বায়ার এই বিষয়ে আপনাকে কেন বেছে নিয়েছে? কারন আপনি এই বিষয়ে যা পারেন সে তা পারে না। আপনার জ্ঞান খাটিয়ে তার প্রাইভেসী নষ্ট করা অনৈতিক ও বেআইনি।
গঃ চৌর্যবৃত্তির সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে
আপনি রাতের পর রাত জেগে একটা কিছু তৈরী করলেন। ধরুন সফটওয়্যার বা স্ক্রীপ্ট। বা একজন ফটোগ্রাফার সারাজীবন শিখে, পরিশ্রম করে তার শ্রেষ্ঠ ফটোটি তুলল। আপনি সেগুলো তার অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করবেন? হ্যাঁ করতে পারেন যদি লাইসেন্স যেমন GPL, CC0, BSD, CC, Public Domain ( যে কোন দেশের সরকারী ওয়েব কন্টেন্ট ) আপনাকে অনুমতি দেয়। তবে এর বাইরে গেলে আপনাকে সেটা কিনে নেয়াই ভাল। মনে রাখবেন, উপার্জনের সঙ্গে সঙ্গে মন মানসিকতাকেও উন্নত করুন। আপনার বায়ার ইউ এস বা ইউরোপের হলেই যে আপনার চেয়ে বেশী উপার্জন করে এমন কিন্তু না। আপনাদের অনেকের চেয়ে তাদের অনেকের উপার্জন লেভেল কম। তারা কিন্তু চাইলে চুরি করে অনেক কিছুই ব্যবহার করতে পারত। কিন্তু না করে আপনাকে দিয়ে করাচ্ছে। সুতরাং কারো তৈরি কিছু ব্যবহার করতে হলে যথোপযুক্ত লাইসেন্স মেনে চলুন। আমি ওয়ার্ডপ্রেসের থিম রিভিঊ টিমের সদস্য হিসাবে জানি ওয়ার্ডপ্রেস কখনো যদি জানতে পারে কোন থিম বা প্লাগিন্সে কোন GLP বা এর কম্পাটিবল তালিকার বাইরের কোন জিনিস আছে তবে সঙ্গে সঙ্গে সেটা সাসপেন্ড করে দেয়। সুতরাং যেটা নিয়ে খাচ্ছেন, ভাল জীবন নির্বাহ করছেন, অন্যদের চেয়ে ভাল আছেন তার যথোপযুক্ত সম্মান দিন। কতই বা আর যাবে স্ক্রীপ্ট কিনতে? বেশী না। তবে কেন চুরি করবেন? নিজের নৈতিক ভিত্তিটা দূর্বল করবেন কেন?
ঘঃ সময় কে যথোপযুক্ত কাজে লাগান
ধরুন, কোন এক কাজের জন্য আপনার ২ দিন সময় লাগবে। কিন্তু সেই একই জিনিস তৈরী করাই আছে। ৫ ডলার মূল্য। আপনি ২ দিন সময় নষ্ট করলে আপনার কত ডলার যাবে হিসাব করে দেখেন। যদি সময়ের মূল্য বেশী হয় তবে ৫ ডলার দিয়ে কিনে ফেলুন। শেখার পিছনে আলাদা সময় দিন। ক্লায়েন্টের কাজ নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করার চিন্তা বাদ দিন।
ঙঃ কৃতজ্ঞ হোন, সরি বলা শেখেন, ক্ষমা চাইতে শেখেন
যারা আপনার জীবনে কোন না কোন অবদান রেখেছে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ হোন। ফ্রিল্যান্সিং দুনিয়ায় বেশীরভাগই কারো না কারো হাত ধরে বা সহায়তায় এসেছে। সে সাহায্যকারী হতে পারে কোন ব্যক্তি, কোন প্রতিষ্ঠান বা কোন ওয়েব সাইট। ওয়েব থেকে দিনের পর দিন কন্টেন্ট নিবেন, ওয়েবে কোন কন্টেন্ট দিবেন না যা থেকে অন্যরা উপকৃত হতে পারে, এটা তো চরম মাত্রায় অকৃতজ্ঞতা। সুতরাং ওয়েবে কন্টেন্ট দিন যা পারেন যা থেকে অন্যরা উপকৃত হবে। কন্টেন্ট মানে যে শুধু টিঊটোরিয়াল তা না। হতে পারে কোন স্ক্রীপ্ট, কোন সফটওয়্যার। আপনার কোন ভুল হলে যদি সেই ভুলের কারনে তার কোন ক্ষতি না হয় তবে সরি বলুন, আপনার দ্বারা কারো কোন ক্ষতি হলে ক্ষমা চান।
চঃ নিজেকে যথোপযুক্ত মূল্যায়ন করুন
আপনার এই জায়গায় আসতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। নিজের যথপযুক্ত মুল্য বুঝে নিন। মানবতা বা কারো অসহায়ত্ব ছাড়া কাউকে আপনার প্রাপ্যের চেয়ে কম মূল্যে সার্ভিস দিবেন না। নিজের জ্ঞান ও সম্মানের জায়গায় অটুট থাকবেন। হয়ত আমেরিকায় নিযুক্ত ভারতের দূত দেবযানীর কথা মনে আছে। দেবযানী ভারত থেকে কাজের মহিলা নিয়ে গিয়েছিল কিন্তু আমেরিকার স্ট্যান্ডার্ডের চেয়ে কম বেতন দিত বলে তাকে আমেরিকায় বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। ঠক তেমনি নিজের পারিশ্রমিকের একটা স্ট্যান্ডার্ড ধার্য করুন। কম মূল্যে অনুরোধে ঢেঁকি গিলে বা হাস্যকর বিড করে সময় নষ্ট না করে এমন কিছু শেখার চেষ্টা করুন যাতে আপনার প্রতি ঘন্টার পারিশ্রমিক দাঁডায় ১০০ ডলার।
ছঃ হীন স্বভাব পরিত্যাগ করুন
অনেকেই আছে যারা নিজে কিছু পারে না অন্যকেও করতে দেয় না। বা অন্যের কোন কাজ নিজের করে নেবার জন্য নান হীন প্রচেষ্টা চালায়, মিথ্যা প্রপাগান্ডা চালায়, নানান লোভ দেখিয়ে বায়ারের কান ভারি করে। মনে রাখবেন আপনার এই প্রচেষ্টা বায়ারের মনে আপনার সম্পর্কে খারাপ ধারনাই তৈরি করে। আপনাকে টেস্ট করার জন্য কাজ দিলেও সেটা দীর্ঘমেয়াদী কোন সম্পর্কে গড়ায় না।
এমন আরো অনেক বিষয় আছে যেগুলো আমা চেয়ে আপনারা আরো ভাল জানেন। এবার আমার জীবনের কিছু ঘটনা বলি। আমি এ পর্যন্ত কারো কোন সহযোগীতা নেইনি কিছু শেখার জন্য। শুধুমাত্র নেট থেকেই রিসোর্স নিয়ে শিখেছি। আর আমার প্রাথমিক দিকে অনেক বড় সহযোগীতা করেছিল একটা নামকরা হোস্টিং/সার্ভার কোম্পানি। তারা আমাকে একটা ফ্রি ভি পি এস দিয়েছিল যারা মাসিক মূল্য ছিল প্রায় ৫০ ডলার। আর নামকরা একটা কন্ট্রোল প্যানেল কোম্পানি আমাকে আজীবন তাদের প্যানেলের লাইসেন্স দিয়েছিল। আরো একটা কোম্পানি তাদের একটা স্ক্রীপ্ট দিয়েছিল ফ্রি যার মাসিক মূল্য ছিল প্রায় ৩৫ ডলার। এদের কাছে আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।
যে ওয়ার্ডপ্রেসের কল্যানে আমি এখন পরিবার পরিজন নিয়ে খেয়ে পরে বেঁচে আছি সেই ওয়ার্ডপ্রেসের কাছে আমার বড় কৃতজ্ঞতা। বর্তমানে ওয়ার্ডপ্রেসে আমার ১৭ টা এ্যাপ্রুভড থিম আছে যার মধ্যে একটি জনপ্রিয়তার নিরিখে শীর্ষ ৫ এ অবস্থান করেছে। এই মূহুর্ত্তে একটি থিম একই সঙ্গে ফিচারড তালিকা ও শীর্ষ জনপ্রিয় তালিকায় আছে। একটি কেস স্টাডি বলি, গতকাল ডেনমার্কের এক ভদ্রলোকের সাইট/কোম্পানি দেখলাম। তাদের পোর্টফলিও দেখে তো অবাক, সবগুলো কাজই তারা করেছে শুধু আমার থিম দিয়ে। মানে একটি কোম্পানিই সাসটেইন করছে আমার সঙ্গে একই সমান্তরালে। এমন কিন্তু একটা না, অনেক আছে। কোম্পানির নাম, আমার ফ্রি ভিপিএস প্রোভাইডার, প্যানেল প্রোভাইডার কারো নাম বললাম না, বাঙ্গালীরাই তো পড়বে এই থ্রেড। ছ পয়েন্টের কোন ব্যক্তি যে নেই সেই পাঠকের তালিকায় এ বিশ্বাস করার মত সাহস আমার হয়নি এখনো। কারো কোন প্রশ্ন থাকলে সাদরে গৃহীত হবে।
Related Posts
What can be the problem if someone takes blood from his family member?
This is a frequently asked and very important question about blood donation. If you wantRead More
কেউ তার পরিবারের সদস্য থেকে রক্ত নিলে কি সমস্যা হতে পারে?
ব্লাড ডোনেশন সম্পর্কে এটা বহুল জিজ্ঞাসিত ও অত্যন্ত গুরত্বপূর্ন একটা প্রশ্ন। ছোট করে উত্তর শুনতেRead More
ফেবু মুমিনদের সহজ সরলতা, কুযুক্তি ও শেষে চাপাতির কোপ !
ফেসবুকীয় মুমিন মানেই ‘ছাগল” অন্যকথায় ছাগু (ফেসবুক আবার তাদের সম্মানার্থে ছাগু সরাসরি লিখলে গোস্বা করেRead More
Comments are Closed