Story
Moon Landing Story

Moon Landing Story

চন্দ্রবিজয় ও তিন ভাই, এক বোনের গল্প

নেভাদার এক প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়ে ভ্যালেন্তিনা। জন লুমাস, তার বাবা সামান্য শ্রমিক, কয়লা খনিতে কাজ করে সামান্য কিছু পান মাস শেষে। মা মেরি সারাক্ষন বাড়ির কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, তাকেও বাড়তি কিছু উপার্জন করতে হয়। ছোট তিন ভাই নীল, অলড্রিন ও মাইকেল কে দেখাশোনার ভার ভ্যালেন্তিনার উপরেই। পাশের স্কুলে যায় সবাই। বাড়ি ফিরে মা’কে কাজে সাহায্য করে ভ্যালেন্তিনা, ছোট তিন ভাইয়ের সময়মতো খাওয়ানোর গুরুদায়িত্বও তার। বিকালে এলাকার ছেলে মেয়েদের সঙ্গে খেলায় মেতে উঠে সবাই।

তিন ভাইকে সবসময় আগলে রাখে ১৩ বছরের ভ্যালেন্তিনা। চাঁদনী রাত তার খুব পছন্দ। প্রায়ই তিন ভাইকে চাঁদের গল্প শোনায়। তার আশা তার তিন ভাই একদিন চাঁদ জয় করে ফিরবে এ পৃথিবীতে। এ কথা সে সবার সঙ্গে বলে। অন্য ছেলে মেয়েরা হেসেই খুন, চাঁদ জয় ! সালটা ১৯১৭ এর দিকে। তখন চাঁদে মানুষ যাবে এটা ভাবতেই পারে না কেউ।

অভাবের সংসারে ভ্যালেন্তিনার জন্মদিন আসে না কখনো। জন্ম তারিখটা তার মনে থাকলেও কেউ স্মরন করে না। তবে ঘটা করে সে তার ছোট তিন ভাইয়ের জন্মদিন পালন করে। একটু দূরে যে লম্বা গাছটা দেখা যায়, যার মাথার উপরে থাকে চাঁদ, সেখান থেকে ফুল পেড়ে নিয়ে আসে সে তার ভাইদের জন্মদিনে। সবার ছোট মাইকেল ভাবে তাদের বুবু গাছের মাথায় চড়ে চাঁদ পাড়তে যায়। শেষে যখন দেখে ফুল তখন সে একটু হতাশই হয়। ঘরে নিজের হাতে ছোট্ট কেক বানিয়ে সে তার ভাইদের জন্মদিন করে। ৩ জন মিলে অন্যজনের জন্মদিনে হাততালি দিয়ে মন ভরায়।

কোন জন্মদিনই ভ্যালেন্তিনার জীবনে আনন্দ বয়ে নিয়ে আসে না, বরং কোন না কোন দূর্যোগ আসে সে দিনে বা আগে পরে। ১৯২১ সালের ১৬ জুলাই। ভ্যালেন্তিনার ১৭ তম জন্মদিন। ১৫ জুলাই জন পরিবারে ঘটে এক দূর্ঘটনা। রাতে খাবার টেবিলে রাশভারী বাবা জন লুমাস তার ৪ ছেলে মেয়েকে ডেকে পাঠান। কয়েক প্রজন্ম ধরে তাদের ঘরে সংরক্ষিত স্বর্ণমূদ্রাটি চুরি হয়েছে। এ বাড়িটি লোকালয় থেকে একটু দূরে। এখানে বাইরে থেকে চোর আসা সম্ভব নয়। সুতরাং জনের ধারনা তার ৪ ছেলে মেয়ের কেউ এটি চুরি করেছে। জন গম্ভীর গলায় বলেন যদি চোর স্বীকার করে তবে শাস্তি কম হবে। আর স্বীকার না করলে ৪ জনেরই চরম শাস্তি হবে। সবাই নিশ্চুপ। বাবা জন চরম উত্তেজনায় কাঁপছেন। মা মেরি ভয়ে টতস্থ, কাকে না শাস্তিটা পেতে হয়, সবাই তার সন্তান। ভ্যালেন্তিনা কাঁদতে কাঁদতে স্বীকার করে সে সেটি চুরি করেছে। বাবা জন হুংকার দিয়ে বলেন তার জন্মদিন করতে পারেন না বলে এবার ভ্যালেন্তিনা নিজেই সেটি চুরি করে নিজের জন্মদিন করবে ! তেড়ে গেলেন জন, ভয়ে পাশের গরম কেটলিতে পড়ল ভ্যালেন্তিনা। এক হাত পুড়ে ফোসকা পড়ল। যন্ত্রনায় চিৎকার দিল ভ্যলেন্তিনা।

আজ রাতে একটু আগেই সবাই বাতি নিভিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। চোখ বন্ধ করলেও কারো চোখে ঘুম নেই। তিন ভাই এক এক করে আসে ভ্যলেন্তিনার কানের কাছে। সবাই ফিসফিস করে বলে ‘বুবু আমি তো জানি তুমি সেটি চুরি করনি, কেন মিথ্যা বলেছ ?’ ভ্যালেন্তিনা তিন জনকেই একই উত্তর দেয়, ‘তোরা যেদিন চাঁদ জয় করে ফিরতে পারবি সেদিন আমি তোদেরকে জানাব সেটা।’ দুঃখ, ভয় ও কৌতুহল নিয়ে সবাই একে একে ঘুমিয়ে পড়লো।

জুলাই ১৬, ১৯৬৯, আজও ভ্যালেন্তিনার জন্মদিন। মানব ইতিহাসের এক স্মরনীয় ঘটনা ঘটল সেদিন। নীল, অলড্রিন ও মাইকেল ঠিকই এ্যাপোলো ১১ তে করে চাঁদের মাটিতে পা রাখল। তিন ভাইয়ের এ কীর্তিতে বিশ্বব্যাপী সবাই গর্বিত। ভ্যালেন্তিনা তখন বয়সের শেষ ধাপে। তবুও তার অপেক্ষা তার তিন ভাই পৃথিবীতে ফিরে তার কাছেই আসবে প্রথম। হলোও তাই। তিন ভাই ফিরেই প্রথম প্রশ্ন ‘বুবু তুমি বলেছিলে চাঁদ জয় করে ফিরলে সেই স্বর্নমূদ্রা চুরির ঘটনা আমাদের জানাবে। এখন জানাও সেটা। কেন তুমি দোষী না হয়েও দোষ স্বীকার করেছিলে ?’ ভ্যালেন্তিনার চোখে জল, সে বলে সে দোষ না স্বীকার করলে তার ছোট তিন ভাইকে সেদিন যন্ত্রনাময় শাস্তি পেতে হতো, সেটা সে সহ্য করতে পারতো না। কিন্তু ভ্যলেন্তিনা আজও জানে না আসলে স্বর্ণমূদ্রাটি কে বা কারা চুরি করেছিল। তখন তিন ভাইয়ের বড় নীল বলে ‘বুবু, পরের দিন ছিল তোমার জন্মদিন, মনে আছে তোমার ? আমরা ঐ স্বর্ণমূদ্রাটি চুরি করে তোমার জন্য একটি স্বর্নের চাঁদ বানিয়ে তোমাকে উপহার দিতে চেয়েছিলাম। সে চাঁদটি এখনো আমাদের কাছে আছে। তুমি নিবে সেটা ?’ ভ্যালেন্তিনা এই স্বর্ণের চাঁদের কথা ভুলে দূর আকাশের সেই চাঁদের দিকে তাকিয়ে থাকে যা দেখিয়ে তার ভাইদের স্বপ্ন দেখাত, গল্প শোনাত একদিন …

[ গল্পটি কাল্পনিক, এর সঙ্গে বাস্তব চন্দ্র অভিযানের কোন মিল নেই ]

Related Posts

Scientific Errors in the Quran

কোরান কি আসলেই নির্ভুল? বৈজ্ঞানিকরা কি কোরান নিয়ে গবেষণা করেন?

পাকিস্তানের এক তথাকথিত স্কলার একবার জীন দিয়ে বিদ্যূৎ উৎপাদন নিয়ে গবেষণা করেছিলেন নাকি! মোল্লা তারিকRead More

Taqiyya in Islam

ইসলামের স্বার্থে মিথ্যা, প্রতারনা তথা তাকিয়াবাজি বৈধ !

গবাদিকূল পারেও। জান্নাত জুবাইর নামের এই মেয়ে নাকি বলিউডে অভিনয় করে, আমি জানিনা। ধূর্ত গবাদগুলোRead More

Islam and Rights of Other Religions

“লাকুম দিনুকুম ওয়ালিইয়াদিন”- “যার যার ধর্ম তার তার কাছে”

“লাকুম দিনুকুম ওয়ালিইয়াদিন”- “যার যার ধর্ম তার তার কাছে” তোমরা ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করো না।Read More

Comments are Closed