
Israel Palestine Conflict
ইসরায়েল – ফিলিস্তিন সংকটের সমাধান কোথায়?
গাজা ফিলিস্তিনের একটা ক্ষুদ্র অংশ, সেখানে ফিলিস্তিনের বড় অংশ পশ্চিম তীরের কোন নিয়ন্ত্রন নেই অনেকদিন, পশ্চিমতীরে প্রয়াত ইয়াসির আরাফাতের দল সরকার চালায়, গাজায় চালায় হামাস। দুই অংশের মাঝে আবার ইসরায়েল। তাদের তেমন কোন প্রাকৃতিক সম্পদ নেই, বর্হিঃবিশ্বের অনুদানই তাদের মূল আয়ের মাধ্যম। কিছু কৃষি উৎপাদন তারা রপ্তানি করে। কিন্তু সেই রপ্তানিও হয় ইসরায়েলে। পানি, বিদ্যুৎ এমন অনেক নাগরিক সেবার বন্দোবস্তও হয় ইসরায়েলের মাধ্যমে। এটা কিন্তু বাস্তবতা, ইসরায়েল চাইলেই এগুলো বন্দ করে দিতে পারে। হামাস চলে মূলত ইরানের অর্থায়ন ও সমর্থনে। ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালিয়ে সেখানে শত শত পুরুষ, নারী, শিশুকে তারা হত্যা করেছে। ইসরায়েল এখন তার বদলা নিচ্ছে, ইসরালের এই বদলা যে ভয়ংকর হবে, উদাহরণীয় হবে সেটা বিশ্বের প্রায় সব মানুষেরই জানা। এমনও হতে পারে পুরো গাজাই তারা দখলে নিয়ে নিতে পারে, এতে তাদের তেমন বাঁধার মুখেও পড়তে হবে না, যদিও সেটার সম্ভাবনা আপাতত কম।
আগেও তো একটু একটু করে দখল করে নিয়েছে ফিলিস্তিনের বড় অংশ। পৃথিবীর ক্ষমতাধর দেশগুলোও তাদের পক্ষে কথা বলছে না, তাদের হামাস এই যুদ্ধের উস্কানিও দিয়েছে প্রথমে। এখন ইসরালের মতো বিরাট শক্তি কি সহজে ছেড়ে দিবে? তাদের নাগরিকদের নিরপদ রাখাটাও তাদের দায়িত্ব। আমি ক্ষুদ্র মানুষ, আমার ওয়ার্ল্ড পলিটিক্স এতো বোঝার সামর্থ্য নেই যদিও। তবে আমি মনে করি ফিলিস্তিন ইসরায়েলের সঙ্গে মিশে গেলেই ফিলিস্তিনি জনগণের লাভ বেশী। তাদের দুঃখের অবসান হবে, তারা একটি উন্নত, মানসম্মত, প্রযুক্তিমুখী জীবন পাবে। ইসরায়েলে কিন্তু এখন ১৮% মুসলমান বাস করে, তাদের ধর্ম পালনে, শিক্ষা, চিকিৎসা, চাকুরী, রাজনীতি কোথাও কোন সমস্যা নেই। কখনো শুনেছেন ইসরায়েলের কোন মুসলমান বিদেশে আশ্রয় নিয়েছে? শিক্ষা, প্রযুক্তি, মানুষের গড় মানে ইসরায়েল এখন মধ্যপ্রাচ্য তো বটেই, বিশ্বের বুকেই এক অন্যতম সেরা দেশ। কিন্তু ইসরায়েলের সঙ্গে সেই মিশে যাওয়ার চাওয়াটা আসতে হবে ফিলিস্তিনের জণগনের তরফ থেকেই। আমার বা অন্য কারো ব্যক্তিগত মতামত তাদের উপরে চাপিয়ে দেয়াটা অযৌক্তিক, ফিলিস্তিনি জণগন যদি চায় তারা স্বাধীন থাকবে তবে সেটাকেই সম্মান করতে হবে।
আমি চাই এর শান্তিপূর্ণ সমাধান, বর্তমান বাস্তবতায় দুই রাষ্ট্রকেই স্বাধীনভাবে টিকিয়ে রাখার পক্ষে আমি, আমি চাই পৃথিবীর সবাই শান্তিতে থাক, কোথাও কেউ যেনো হত্যার শিকার না হয়, কারো অধিকার থেকে সে যেনো বঞ্চিত না হয়। ইসরায়েল, ফিলিস্তিন সব জায়গার সাধারন মানুষ আমার কাছে এক, সবারই অধিকার আছে গণতন্ত্র পাওয়ার, নিজের দেশ পাওয়ার, শান্তিতে পৃথিবীর বুকে বসবাস করার। আমি একজন হিউম্যানিস্ট, একজন হিউম্যানিস্ট হিসাবে মানুষকেই সামষ্টিকভাবে মানুষের সমস্যার সমাধান করতে হবে বলে আমি মনে করি।
হামাস যখন ইসরায়েলে রকেট হামলা চালিয়ে শত শত পুরুষ, নারী, শিশুকে হত্যা করছিলো তখন ফিলিস্তিনসহ অন্যান্য দেশের অনেক মুসলমান আলহামদুলিল্লাহ বলে উল্লাস করছিলো। তাদের কাছে শত শত ইসরায়েলীকে হত্য করার সংখ্যাটা ছিলো বিজয়, তারা হিসাব করছিলো ইসরায়েলের হামলায় কতজন ফিলিস্তিনি মারা যাওয়ার বিনিময়ে কতজন বেশী ইসরায়েলী হামাসের হামলায় মারা গেলো। যেইমাত্র ইসরায়েল তার পূর্ন শক্তিমত্তার জানান দিয়ে প্রতিশোধ নিতে শুরু করলো তখনই তাদের মায়াকান্ন শুরু হলো। এরা খুবই হিপোক্রেট। শুধুমাত্র মুসলিম ধর্মীয় মানুষ ছাড়া অন্যদের মৃত্যু তাদের বিবেককে নাড়া দেয় না, বরং তারা উল্লাস করে। কারন ইসলাম ধর্মটাই তাদেরকে এই শিক্ষা দিয়েছে। কোরান, হাদীসে অনেক জায়গাতেই ইহুদীদের হত্যা করার কথা বলা আছে, ঘৃনা করার কথা বলা আছে, তাদেরকে বিতাড়িত করার কথা বলা আছে। নবী মোহাম্মদ নিজ হাতেই শত শত ইহুদীকে হত্যা করেছে, এমনকি শিশুদেরকেও। আরব থেকে ইহুদীদের বিতাড়িত করার জন্য অবশ্য মুসলমান শাসকদের পাশাপাশি অন্য অনেকে ভূমিকা রেখেছে যদিও। তবে এখন শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মের অনেক অনুসারী মনে মনে ভয়ংকর ইহুদী বিদ্বেষ পুষে রেখেছে, যার প্রতিফলন আমরা দেখি তাদের কার্যকলাপ, কাজকর্মে।
এটা মনে করার কোন কারন নেই আমি ফিলিস্তিনি জণগনের নায্য অধিকারের বিপক্ষে। ফিলিস্তিনি জণগনেরই অধিকার আছে তাদের শাসন, দেশের ধরন বেছে নেয়ার। প্রসঙ্গক্রমে ভারতের কাষ্মীরের উদাহরণটা একটু দেই। কাষ্মীরের অনেক মুসলমান কাষ্মীরকে স্বাধীন দেশ বানাতে চায়, অনেকে জঙ্গি হামলাও চালায়। আমি দুইবার কাষ্মীরের গিয়েছি, অনেকদিন থেকেছি সেখানে। আমি মনে করি কাষ্মীরের মানুষ ভারতের সঙ্গে থাকলেই তারা সুখে থাকবে। কাষ্মীর স্বাধীন হলে দেশটি আজ পাকিস্তান বা আফগানিস্তানের চেয়ে দূর্যোগপ্রবন হয়ে যেতো, মানুষের সৃষ্ট দূর্যোগ। তবে এখানেও আমি মানুষের অধিকার আদায়ে তাদের কথা বলার, সংগ্রাম করার অধিকারের পক্ষে, আমার নিজের মতামতের চেয়ে বড় তাদের নিজেদের সংখ্যাগরিষ্ঠের অবস্থান। আমি দেখি বাংলাদেশও দেশ হিসাবে ব্যর্থ, আগামী ২০/৩০ বছরেও বাংলাদেশের অবস্থা ভাল হওয়ার সম্ভাবনা নেই। একটা দেশের কোটি কোটি মানুষ গোঁড়া হয়ে যাচ্ছে, মানহীন হয়ে যাচ্ছে, লক্ষ লক্ষ মানুষ লুটপাট, দুর্নীতিসহ নানান অনিয়মে জড়িত। এখানের শাসকেরা নিজেরাই এই চক্রের অংশীদার। সেজন্য বাংলাদেশেরও আমেরিকা, জাপান, ইউরোপের কোন দেশের সঙ্গে মিশে যাওয়া ভালো যদি তারা নিয়ে তাদের মতোই মানসম্মত শাসন, শিক্ষা ব্যবস্থা এখানে চালু করে। কেউ না নিতে চাইলে ভারতের সঙ্গে মিশে যাওয়াও ভালো বাংলাদেশের জন্য, ভারতের মানুষের গড় মান বাংলাদেশের চেয়ে অনেক ভালো।
Related Posts

১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারির নির্বাচন – বি এন পি যেভাবে গনতন্ত্র ধ্বংস করেছিল
২০২৪ এর ঐতিহাসিক গণ-অভভুত্থানের আগে ১৯৯০ সালে ছাত্র জনতার ত্যাগের বিনিময়ে দেশে গণতন্ত্র বিকাশের যেRead More

This Religious Frenzy Must End Now – Walk the Path of Civilization
Bangladesh’s society has changed dramatically over the past 20–30 years. One of the most destructiveRead More

স্বৈরাচার যখন দানব হয়ে যায় তখন মানুষের লাশের গন্ধ তাদের কাছে প্রিয় হয়
আমি আওয়ামী লীগের কোন পর্যায়ের কমিটির কখনোই কেউ ছিলাম না, এখনো নেই। আওয়ামী লীগ বাRead More
Comments are Closed