
Investing in Children !
শিশুদের জন্য বিনিয়োগ করুন, এই বিনিয়োগ কয়েকগুণ রিটার্ণ সহ একসময় ফেরৎ পাবেন
সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় ৫০০ দ্বিতল এসি বাস নামান ঢাকার রাস্তায়, অন্যান্য শহর ও গ্রামাঞ্চলেও যেখানে সম্ভব নামান। ছাত্র-ছাত্রীরা ও নারীরা ফ্রি’তে বা খুবই সামান্য ভাড়ায় চলাচল করুক। বাংলাদেশের এই সামর্থ্য আছে। যে কোন একটা সেক্টরের দুর্নীতি একটুখানি কমালেই খরচ বের হয়ে যাবে। বেসরকারী সেক্টর এমনিতেই বাপ বাপ করে পথে আসবে। এগুলো দেশের ফিউচারের জন্য ইনভেস্টমেন্ট হিসাবে ধরতে হবে। টাকা তো আর কেউ নিজের ঘর থেকে দিবে না, দিবে এই দেশেরই জনগন, আগেও যেমন দিয়েছে, এখনো দিচ্ছে, ভবিষ্যতেও দিবে। তাদের টাকা কোথায় কিভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে সেটার হিসাব না নিয়েই তারা দিয়ে চলেছে।
সাধারন মানুষ তো ট্যাক্স দিয়েই যায়। বাসে চড়ে পকেটের টাকা দিয়ে, বিভিন্ন সেবা সংস্থায় ফি দিয়ে, ঘুষ দিয়ে সার্ভিস নেয়, ভাঙ্গাচোরা রাস্তায় পা ভাঙ্গে, উচ্চমূল্যের বাজারে নিজের শরীরের পুষ্টির চাহিদা কমিয়ে মানিয়ে নেওয়ার যুদ্ধ করে, চাকুরী নেয়ার আগেই উচ্চ অংকের ফি দেয়, প্রায় সব সার্ভিস তাদের কিনতে হয় পকেটের টাকা দিয়ে। ট্যাক্সের টাকা দিয়ে পালা হয় বিশাল সরকারী কর্মচারী বাহিনী যাদের বড় অংশই আদতে তাদের উপকারে খুব কমই লাগে।
দুইদিন আগে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। আপনি যদি সিঙ্গেল মা হয়ে থাকেন, বা সিঙ্গেল বাবা, অথবা আপনি কোন এতিমের অভিভাবক হয়ে থাকেন তবে আপনার শিশু সন্তানকে এদেশে স্কুলে ভর্তি করতে পারবেন না যতক্ষন পর্যন্ত না সেই শিশুর বাবা-মায়ের এনআইডি আপনি না জানবেন। কোন শিশু যে নিজেই জানে না তার মা-বাবা কে বা কারা, টোকাই বলেন যাদের, এমন অনেক আছে, সে কোন স্কুলে ভর্তি হতে পারবে না। এই অমানবিক, মানবাধিকার পরিপন্থী নীতিগুলোও তৈরি করেছে তারা যাদের আমরা ট্যাক্স দিয়ে পেলে পুষে রাখি।
আমার মতো একজন ক্ষুদ্র মানুষও এই রাষ্ট্রের কাছে কয়েক লক্ষ টাকা পাই। এটা ঠিক ঐ হিসাব না যে আমি এই সেবা দিলাম, ঐ কাজ করে দিলাম – তার মূল্য। এটা সত্যি সত্যি আমার আর্থিক পাওনা। আমার ব্যাংক একাউন্ট থেকে প্রতিবছর টাকা কেটে নেয়া হয় এ্যাডভান্স ইনকাম ট্যাক্স হিসাবে। গাড়ির ফিটনেস বা ট্যাক্স টোকেন করতে গেলে আগেই নিয়ে নেয় ২৫,০০০ এ্যাডভান্স ইনকাম ট্যাক্স। কিন্তু বছর শেষে রিটার্ণ দাখিলের সময় আমার করযোগ্য আয়ই থাকে না। সুতরাং এই অগ্রীম কেটে নেয়া ইনকাম ট্যাক্স আমার ফেরৎ পাওয়ার কথা। উন্নত দেশে এগুলো অটোমেটিক ব্যাক্তির ব্যাংক একাউন্টে ফেরৎ আসে। কিন্তু আমাদের দেশে ঐ যে কথায় আছে, একবার গেলে তা আর ফেরৎ পাওয়া যায় না, সরকারও একবার নিলে আর দিতে চায় না। কেউ যদি এই টাকা ফেরৎ চায় তবে তার ইহজীবন শেষ হবে, তাও ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে ক্ষীন।
যা বলছিলাম, এভাবে কিন্তু আমার মতো অনেকেই ট্যাক্স দেই যা আমাদের দেয়ার কথা না। অন্য সবকিছুতে তো ভ্যাট, ট্যাক্স দিচ্ছিই। বাড়তি যা দিচ্ছি আমরা তা দিয়েই এই দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা আমূল বদলে দেয়া যায়। বাজেট যা আছে তাই-বা কতটা কাজে লাগে ? কদিন আগে বাস মালিক সমিতি জানালো দেশে শিক্ষা খাতের বাজেট প্রতিবছর ফেরৎ যায়, মানে কাজে লাগাতে পারে না কর্মচারীরা। সুতরাং সদিচ্ছা থাকলে টাকার অভাব হবে বলে মনে হয় না। আজকের শিশুদের যদি আপনি সঠিকভাবে একটু আরাম-আয়েশে রেখে শিক্ষা দিতে পারেন তবে তারা দেশের জন্য অনেক কাজে লাগবে। এখান থেকে ২০ বছর পরে যদি সার্বজনীন পেনশন চালু হয় দেশে তবে সেই পেনশনের হাজার হাজার কোটি টাকার ভার কারা নিবে ? এখন যারা শিশু তাদের ঘাঁড়েই চাঁপবে দেশের কোটিখানেক বৃদ্ধ, বৃদ্ধা কর্ম-অক্ষম বা অবসরে যাওয়া মানুষের জীবন চালিয়ে নেয়ারা ভার। সব দেশ তাই করে। বর্তমান মানুষের ট্যাক্সের টাকায় সাবেক ট্যাক্সপেয়ারদের খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা চলে। এজন্য শিশুদের জন্য, শিশুদের শিক্ষা, উন্নত যাতায়াত, সুন্দর পরিবেশের জন্য রাষ্ট্র এখন বিনিয়োগ না করলে উন্নত রাষ্ট্র শুধু স্বপ্নেই থেকে যাবে।
এদেশে শিশুরা সবচেয়ে বেশী অবহেলিত। সেইসঙ্গে শিশু থেকে বয়স পেরিয়ে যাওয়া কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাও। রাজনৈতিক দূর্বৃত্তরাও তাদের টার্গেট করে, তাদের বিপথে নেওয়ার পরিবেশ এখানে অনেক, শিক্ষাবিমুখ করে রাখার সহস্র উপাদান সবখানে। একেবারে শৈশব থেকে শিক্ষাকে আনন্দদায়ক করে, শিশুদের সামনের প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করে, তাদের জন্য একটু বাড়তি সুযোগ সৃষ্টি করে দিলে কয়েক বছর পরে দেশের অনেক বড় বড় সমস্যা এমনিতেই চলে যাবে। দেশের জন্য দরকার কর্মক্ষম, সৎ, দক্ষ ভাল মানুষ – আজকের শিশুদের সেই মানুষ বানাতে হবে।
[ Picture: WikiPedia, CC BY-SA 4.0 ]
Related Posts

Are religion, country, race, patriotism, and nationalism all racist concepts?
The only uncontacted human tribe left in the world today are the Sentinelese of NorthRead More

ধর্ম, দেশ, জাতি, দেশপ্রেম, জাতীয়তাবাদ সবই কি বর্ণবাদী কনসেপ্ট?
পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত একমাত্র আন কন্টাক্টেড মনুষ্য প্রজাতি আমাদের বঙ্গোপসাগরের নর্থ সেন্টিনেল দ্বীপের সেন্টিনেলীরা। তারাRead More

Durga or Mahishasura – who is the true hero of the mythological legend?
Bhagura (Indian extremist goat – Indian Shit) have, in 2025, created a Mahishasura effigy inRead More
Comments are Closed