Don't be cruel on Animals

পশুদের প্রতি সদয় হোন, অযথা পশু জবাই নয় যেখানে সেখানে !

উনি একজন মস্তবড় সেলিব্রেটি। কয়েক বছর আগে এই ছবি উনি কেন কি উপলক্ষে দিয়েছিলেন সেটা নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন।

কিছু লোক গরু, খাঁসির সঙ্গে নিজের সেলফি তুলে সেটা ফেসবুকে প্রকাশ করে। পশু জবাইয়ের ছবি, রক্তের ছবি, মাংস কাটার ছবি এসবও প্রকাশ করে। ব্যাপারটা এমন যেন পশু জবাই ও তার মাংস কাটাকাটিতেই তাদের আনন্দ।

চরম অমানবিক ও অবমাননাকর এই বিষয়টা নিয়ে তেমন কেউ কথা বলে না। মানুষের আমিষের প্রয়োজন, মানুষ মাংস খায়। খাবেও, প্রানীজগতে মানুষই এমমাত্র প্রানী নয় যারা অন্য প্রানীর মাংস খায়। কিন্তু একটা পশুর কষ্টকে আনন্দের বিষয় হিসাবে দেখাটা মানুষের জন্য অশোভন। এসব ছবি আমার সামনে আসলে আমি ঐ ব্যক্তিকে ব্লক না করলেও ঐ ছবিটি ব্লক করে দেই। ফেসবুক ও সভ্য দেশের আইনেও এ সমস্ত ছবি প্রকাশ নিষিদ্ধ।

একটি পশু জবাই করা হচ্ছে। কেবল মাত্র ছুরি গলায় লাগিয়ে প্রবল শক্তিতে সামনের দিকে ঠেলে দিয়েছে জবাইকারী। ফিনকি দিয়ে রক্ত ছুটছে প্রানীটির। এমন একটি দৃশ্যের ছবি তোলাটা আমার কাছে চরম মর্মান্তিক ও ঘৃনিত মনে হয়। কয়েকটি মাংশাসী প্রানী একটি নিরীহ তৃনভোজী প্রানীকে হত্যা করছে; এমনটাই মনে হয়।

একটি খাওয়ার উপযোগী জীবন্ত প্রানীকে জবাই করার অধিকার মানুষের আছে বলেই আমরা জবাই করতে পারছি। কিন্তু এই জবাইয়ের মুহুর্তকে ক্যামেরায় ধারণ করার দৃশ্য কোনভাবেই মানবিক হতে পারে না।

দয়া করে পশু জবাই এর দৃশ্য আপনার শিশুকে দেখাবেন না। সকল প্রাণী ও জীবের প্রতি একটা বড় মায়া ও দায়িত্ববোধ নিয়ে বেড়ে উঠুক আপনার শিশু। আমাদের দেশে যেখানে সেখানে পশু জবাই হয় কিন্তু বেশীরভাগ দেশে নির্ধারিত স্থানে এই কাজ করা হয়। এতে পরিবেশ দূষন কম হয়। উন্নত বিশ্বের মানুষ মাংস খায় ঠিকই কিন্তু তারা পশু থেকে মাংস কোথায়, কিভাবে, কাদের দ্বারা প্রস্তুত হয় তা জানে না। বেশীরভাগ শিশু, কিশোর তো দূরে থাক বেশীরভাগ বয়স্ক মানুষও সারা জীবনে এই দৃশ্য দেখেনি কোনদিন। গবেষণায় দেখা গেছে যারা পশু, পাখি, গাছপালা ও অন্যান্য জীবের প্রতি সদয় তারা মানুষের প্রতিও সদয় হয়। তাদের শিশুরা এজন্য প্রাণীদের প্রতি সদয় হয়। কুকুর দেখলে অনর্থক লাথি দেয় না, লাঠি দিয়ে বাড়ি তো দূরে থাক। তারা ব্যাঙকে রশিতে ঝুলিয়ে মজা পায় না। গিরগিটি দেখলেই মারতে হবে, কালো কুকুর দেখলেই তাকে পিটাতে হবে এমন ধারনা তারা করে না। সুতরাং পশু জবাই এর স্থানে আপনার শিশুকে নিবেন না, এটা কোন অনন্দের বিষয় না।

কসাইখানায় বা নির্ধারিত স্থানে প্রশিক্ষিত মানুষ ছাড়া গরু, ছাগল এসব পশু জবাই কঠোরভাবে নিষিদ্ধ হওয়া উচিৎ। অন্য অনেক কারনের সঙ্গে মানুষ নামের খুনিদের নির্দয় হওয়ার যাত্রাটা শুরু হয় পশু জবাই থেকে। জঙ্গিরা দেখবেন, তাদের জিহাদের প্রচার চালায় এলাকায় আগ বাড়িয়ে মানুষের পশু জবাই করে দেওয়ার উৎসাহ দিয়ে, এভাবে তারা মায়া মমতা বিসর্জন দিয়ে নির্দয় হতে বলে। আমাদের এই রকম দেশগুলো ছাড়া উন্নত ও সভ্য দেশে এমনকি মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশে, ইন্দোনেশিয়া এমন অনেক দেশেও প্রকাশ্যে কোন প্রাণী জবাই করা হয় না, মুরগীও না। উন্নত ও সভ্য দেশে প্রাণী জবাই ও মাংস প্রসেস করার জন্য আলাদা স্থান থাকে যা লোকালয় থেকে দূরে, সেখানে প্রশিক্ষিত লোকজন থাকে।

ইন্দোনেশিয়ার এই কাজ করে উপাসনালয়ের সন্নিকটে নির্দিষ্ট কমিটি। তাদের সর্বোচ্চ প্রায়োরিটি থাকে প্রাণীটি যাতে খুব কম কষ্ট পায়। অনেক দেশে পশুর মাথায় একটা গুলি করে প্রথমে, এতে ২/৪ সেকেন্ডের মধ্যে পশুদের নার্ভ সিস্টেম অকেজো হয়ে তাদের ব্যাথার অনুভূতি দূর হয়ে যায়।

শিশুদের সামনে কোন প্রাণী হত্যা করাই উচিৎ না, কোন উৎসবেও না। একটি জনগোষ্ঠীর পরিবর্তনের জন্য তার শিশুদের সুন্দর একটি পরিবেশে বেড়ে উঠার সুযোগ দেয়াটা খুব জরুরী। যেসব শিশুরা পশু, পাখি, গাছপালার প্রতি সদয় হয় ছোট থেকে তারা বড় হয়ে মানুষের প্রতিও সদয় থাকে সবসময়। মানবিক মানুষ হওয়ার একটা শর্ত হল সকল জীবের প্রতি ভালোবাসা দেখানো। আপনি কোন বেওয়ারিশ কুকুরকে একটি পাউরুটি খাওয়ালেন, পাশ থেকে হয়ত একজন টিপ্পুনি কাটবে – কত মানুষ না খেয়ে আছে, অথচ কুকুরকে খাওয়াচ্ছে। আপনি নিশ্চিত থাকুন টিপ্পুনি দেওয়া মানুষটা কোন ক্ষুধার্ত মানুষকে কোনদিন খাওয়ায়নি। আমাদের শিশুরা ছোট থেকেই শেখে কুকুর, সাপ, শুকর এগুলো নিকৃষ্ট প্রাণী। এদের দেখলেই মারতে হবে, পিটিয়ে মেরে ফেলতে হবে। ব্যাঙ রশিতে ঝুলিয়ে খেলা তো গ্রামের শিশুদের মাঝে খুব জনপ্রিয়।

প্রাকৃতিক খাদ্য শৃঙ্খলের অংশ হিসাবে মানুষ মাংস খাবে কিন্তু গোষ্ঠীশুদ্ধ সবার তো জানার দরকার নেই কিভাবে কত নৃশংস উপায়ে সেগুলোকে হত্য করা হচ্ছে। গবেষনায় দেখা গেছে যেসব দেশে প্রকাশ্যে পশু জবাই করা হয় সেখানে মানুষের মাঝে সহিংসতার পরিমানও বেশী। আমাদেরও সময় এসেছে এই বিষয়গুলো নিয়ে সচেতন হওয়ার। উন্নতি মানে শুধু অর্থনৈতিক উন্নতি নয়, মানবিক মননের উন্নতিই প্রকৃত উন্নতি।

Related Posts

North Sentinelese

Are religion, country, race, patriotism, and nationalism all racist concepts?

The only uncontacted human tribe left in the world today are the Sentinelese of NorthRead More

North Sentinelese

ধর্ম, দেশ, জাতি, দেশপ্রেম, জাতীয়তাবাদ সবই কি বর্ণবাদী কনসেপ্ট?

পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত একমাত্র আন কন্টাক্টেড মনুষ্য প্রজাতি আমাদের বঙ্গোপসাগরের নর্থ সেন্টিনেল দ্বীপের সেন্টিনেলীরা। তারাRead More

Durga vs Mahishasura

Durga or Mahishasura – who is the true hero of the mythological legend?

Bhagura (Indian extremist goat – Indian Shit) have, in 2025, created a Mahishasura effigy inRead More

Comments are Closed