
An Unhealthy Society
যুব সমাজের অধঃপতনের মূল কারন সানাইয়ের স্তন, অফু বাই এর টিকটক, সালমান মুক্তাদিরের কথন…
টিকটিক সেলিব্রিটি অফু বাই নামের এই কিশোরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমি তাকে এই প্রথম দেখলাম বা তার নাম শুনলাম। টিকটক আমি জীবনে কোনদিন ইন্সটল করিনি বা ব্যবহার করিনি। শুধু ইউটিউবে মাঝে মধ্যে টিকটক ভিডিও সামনে আসলে দেখা পড়ে ২/১ টা।
একটি নির্দিষ্ট শিক্ষিত বাঙালি সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক আত্মপরিচয়হীনতা প্রকট বলেই অশিক্ষিতদের তারা কোন দিক নির্দেশনা দিতে পারেনি। আয়োজন করে, লোক ডেকে ঘৃনা ছড়ানো, বিদ্বেষ ছড়ানো, হিংসা ছড়ানোর বিরোধিতা যেমন তারা করতে পারে না তেমনি বাঙালির সংস্কৃতিকে প্রায়শই ভিন্ন সম্প্রদায়ের জুজুর ভয়ে দূরে সরিয়ে রাখে। যেমন, পহেলা বৈশাখ আসলেই তাদের মূর্খ আস্ফালন দেখা যায় প্রতি বছর। এই দৈন্য বাংলাদেশের সাহিত্য, সিনেমা, সংগীত সবখানে চিহ্ন রেখে গেছে। তাই খুবই চুটুল একটা অডিয়েন্স তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের জন্মকাল ধরে। নেট দুনিয়ার বিপ্লবের ঢেউয়ে সেই অন্তঃসারশূন্য প্রজন্ম থেকেই এইসব সেলিব্রেটির জন্ম হয়, এটা অবধারিত ছিল। তবু এই ছেলের গ্রেফতারে এইসব হিসাবে নিকেশ বাদ দিয়ে অন্য হিসেব কষতে হয়, কেন তাকে গ্রেফতার জরুরী হয়ে পড়ল ?
বাঁশের কেল্লার মত জামাতী পেইজ যেমন অফু বাই গ্রেফতারে উচ্ছ্বসিত পোস্ট দিয়েছে তেমনি দলকানা অনেক লোকও খুশিতে পোস্ট দিয়েছে। এইসব পোস্টে সমাজ নষ্ট করার জন্য এইসব টিকটক সেলেব্রেটিকে দায়ী করে আমজনতার দোষারোপ করছে। এর আগেও ইউটিউব সেলেব্রেটি সালমান মুক্তাদির ও মডেল সানাইকে থানায় ডেকে নিয়ে থ্রেট করেছিলো পুলিশ।
কাউকে হত্যার হুমকি না দিয়ে, কোন সম্প্রদায়কে হামলা উচ্ছেদ করার প্রচারণা না করেও তাদের সমাজের জন্য ক্ষতিকর বলে আমজনতা রায় দিয়েছিল। কিন্তু অনেক প্রভাবশালী, যাদের নামে কিছু বলাই যায় না তারা লাগাতার হত্যার হুমকি, বিভিন্ন জাতি সম্প্রদায়ের উপর হামলা উচ্ছেদের উসকানি, ঘৃণা অভিশাপ করেও বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ায়। এই সাংস্কৃতিক আত্মপরিচয়হীন সমাজে তারা স্থান করে নিবে এতে অবাক হওয়ার কি আছে ?
পুলিশ যখন প্রকৃত কাজের কাজ কিছু করতে পারে না তখন এইরকম পাবলিক সেন্টিমেন্ট ধরে সুড়সুড়ি দিয়ে নিজের উপর চাপ কমায়। অফু বাইদের সাম্প্রদায়িক লোকজন পছন্দ করবে না কারণ তাদের ভয় তথাকথিত জনতার ইয়াং জেনারেশন না সাম্প্রদায়িকতার বিস্তার ভুলে টিকটক জেনারেশন হয়ে পড়ে ! দলকানাদের ভয় এই টিকটক, ইউটিউব নিয়ে মাতামাতি করে তারা না আবার ক্যাডার হতে ভুলে যায়! তখন চলাফেরার সময় পিছনের অযথা ২০০ লোকের সমাগম কমে যেতে পারে।
অফু বাই নামের এই সেলেব্রেটি নাকি রাস্তা আটকে শ্যুটিং করছিল। লোকজন প্রতিবাদ করায় নাকি তার লোকজন গিয়ে তাদেরকে মারধোর করেছিল। এই অভিযোগে তাকে গ্রেফতার যদি করা হয়ে থাকে বিতর্ক আরো বাড়ল বৈ কমল না। কারণ এইসব ফৈজদারী অপরাধ হরহামেশা এদেশে ঘটছে। সাধারণ নাগরিক অধিকার ক্ষুন্ন করে জোর যার মুল্লুক তার কায়েম করার নামই বাংলাদেশ। রোজ ব্যস্ত রাস্তায় প্রাইভেট কারকে দাঁড় করিয়ে রেখে ট্রাফিক জ্যাম করানো শিল্পপতি, আমলা, কামলার বিরুদ্ধে কে থানায় যায়? বিষয়টা সানাইয়ের বুক বড় করার মত একতরফা। দেশে একমাত্র নৈতিক অধঃপতনের জন্য দায়ী সানাইয়ের স্তন! এবারো বুঝানো হচ্ছে দেশের মোস্ট ক্রিমিনাল এই অফু বাই! তাকে ধরে সমাজের নিশ্চিত অধঃপতন ঠেকানো গেল !
একটা প্রজন্ম নিজের জীবন ও শারিরীক ক্ষতির বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। তার পরবর্তী একটি প্রজন্ম সুবিধাভোগী ও স্বার্থপরের মতো দেশে দূর্ণীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, অপশাসন, অসম্মান ও আত্মপরিচয়হীনতার উদাহরন তৈরি করেছে আজকের তরুণ প্রজন্মের সামনে। সামাজিকভাবে কোন আদর্শিক অবস্থান তাদের নেই। সেই শিক্ষা থেকে এখনকার তরুণেরা না পারে বের হতে, না পারে নিজেরা ভাল উদাহরন তৈরি করতে। এ দায় সেই স্বাধীনতা উত্তর প্রজন্মের। একজন অফু বাই তৈরি হওয়া বা তার গ্রেফতার দুটাই একটা অসুস্থ সমাজের চিত্র।
[ কিছু অংশ ধার করা ]
Related Posts

A Hero Alom: A Real Bangladeshi Hero
A Hero Alom: One Man’s Dream-Fulfilling Power Can Be an Inspiration for All While theRead More

হিরো আলমঃ এক উনমানবের স্বপ্ন পূরনের শক্তি সবার জন্য অনুপ্রেরনা হতে পারে
সেবার যখন সাউথ এশিয়ায় বলিউডের শীর্ষ নায়ক সালমান খানের নাম পিছনে ফেলে নেটিজেনরা হিরো আলমেরRead More

মুক্ত জীবনে আপনাকে স্বাগতম, শিশুদের নিরপেক্ষ শিক্ষা নিশ্চিত করুন
অভিনন্দন! আপনি জন্ম থেকে শুনে আসা, জেনে আসা বিশ্বাসের বাইরে চিন্তা করতে পেরেছেন। এটা খুবRead More
Comments are Closed