
Death penalty: Does it actually deter rape?
ধর্ষণের ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড আরো ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে – গবেষণাও তাই বলে
আমরা যে কোন ক্রাইমের প্রতিবাদ করার সময় অপরাধীর মৃত্যুদন্ড চাই। এখন যেমন ধর্ষণের প্রতিবাদের সময়ও চাচ্ছি। কিন্তু আপনার কি মনে হয় যে এতে অপরাধ কমবে ? অন্তত বিভিন্ন দেশের, এমনকি আমাদের পাশের দেশ ভারতের গবেষণায়ও দেখা গেছে ধর্ষণের জন্য মৃত্যুদন্ড প্রয়োগ করে বরং ভিন্ন নেতিবাচক ফল পাওয়া গেছে। সুতরাং একটা শাস্তি দাবী করলেই হয়না, অনেক প্রেক্ষিত ভেবে দেখতে হয়।
কঠিন এবং বর্বর শাস্তি প্রয়োগ করে অপরাধ কমানো যায়, এটি আমাদের মতো দেশগুলোর জন্য একটি জনপ্রিয় মিথ। কিন্তু বিভিন্ন তথ্য, গবেষণা, উপাত্তে এটার প্রমান মেলেনি। আমাদের দেশেই এত এত ক্রসফায়ারের পরেও মাদক বিস্তার কমেছে ? বিশ্বের অধিকাংশ দেশ এখন শাস্তি হিসাবে মৃত্যুদন্ড উঠিয়ে দিচ্ছে, আমাদের দেশে এখনো সেই সময় এসেছে কিনা সেটা আমি জানিনা। তবে গবেষণায় বরং প্রমান হয়েছে বর্বর শাস্তি যেসমস্ত দেশগুলোতে দেয়া হয়, সেসব দেশেই অপরাধের মাত্রা বেশী । ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট অপরাধ কমায় না। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, যেসব দেশ অপরাধীদের ওপর শারীরিক নির্যাতন এবং মৃত্যুদণ্ড প্রথা উঠিয়ে দিয়েছে, সেইসব দেশে অপরাধী সংখ্যা কমে গেছে। এমনকি, অনেকগুলো দেশের জেলখানাগুলো পর্যন্ত অপরাধীর অভাবে বন্ধ করে দিতে হচ্ছে । এর অন্য কিছু প্রেক্ষিতও থাকতে পারে।
এখন আসি, ধর্ষণের ক্ষেত্রে কি মৃত্যুদন্ড কাজ করে ? ধর্ষণের ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড আরো ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে – ইন্ডিয়ার গবেষণাও তাই বলে। প্রথমে বুঝতে হবে সুস্থ, স্বাভাবিক চিন্তার মানুষ ধর্ষণ করে না। যে ধর্ষক সে আইনের চিন্তা কি আসলেই করে ? একজন ধর্ষক যখন ধর্ষণ করে, সে সাধারণত ভাবে যে, সে হয়তো এই কাজের জন্য বিচারের সম্মুখীন হবে না। কিন্তু তার মনে যদি এই আতঙ্ক থাকে যে, তার মৃত্যুদণ্ড পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, বা খুব ভয়াবহ শাস্তির সম্ভাবনা আছে, সে খুব দ্রুত ধর্ষিতাকে হত্যা করতে পারে। সে তখন আশা করবে যে, তার অপরাধটি আর প্রমাণ হবে না। একজন অপরাধীর মানসিকতা এভাবেই কাজ করে – অপরাধটি করার পরে দ্রুতগতিতে হাতের কাছে যেই প্রমাণ আছে তা মুছে ফেলতে চেষ্টা করে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গবেষণাতে এটিই দেখা গেছে যে, ধর্ষণ রোধ করতে গিয়ে কঠোরতম শাস্তির ব্যবস্থা করতে গিয়ে হিতে বিপরীত হয়েছে। আগে ধর্ষণ করে মেয়েদেরকে ছেড়ে দেয়া হতো, কিন্তু মৃত্যুদণ্ড বা শিরোচ্ছেদের শাস্তি আনার পরে বেশিরভাগ ধর্ষিতা আর অভিযোগ করার জন্য জীবিত থাকে না। ধর্ষক তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া এবং আতঙ্কের কারণে খুব দ্রুততার সাথে ধর্ষিতাকে মেরে ফেলে। কারণ ঐ সময়ে তার স্বাভাবিক বোধবুদ্ধি কাজ করে না, ধর্ষক ভয়ে এমন সিদ্ধান্ত নেয় যা সে হয়তো স্বাভাবিক অবস্থায় নিত না। মৃত্যুদন্ড হবে, এই আতঙ্ক তখন তার ওপর প্রভাব বিস্তার করে। এবং সমস্ত আতঙ্কের শোধ সে সেই ধর্ষিতার উপরই তোলে। অপরাধীদের মনস্তত্ত্ব এভাবেই গড়ে উঠে।
দেখা যাবে, ধর্ষিতা মেয়েটি ধর্ষণের শিকার হয়েও বেঁচে থাকতে পারতো, কিন্তু তাদেরকে মেরে ফেলা হলে তো আর কিছুই করার থাকে না। প্রমাণ করা দুঃসাধ্য হয়ে যায়, এবং মেয়েটির পরিবারও ভেঙ্গে পড়ে। তাই মৃত্যুদণ্ড বা শিরোচ্ছেদ ধর্ষণ রোধে সহায়ক নয়, বরং অন্তরায় বলেই অপরাধবিজ্ঞানী এবং সমাজ বিজ্ঞানীদের অভিমত। গুগলে ইংরেজীতে লিখে সার্চ দিতে পারেন জানার ইচ্ছা থাকলে, অনেক আর্টিকেল পাবেন।
Related Posts

Are religion, country, race, patriotism, and nationalism all racist concepts?
The only uncontacted human tribe left in the world today are the Sentinelese of NorthRead More

ধর্ম, দেশ, জাতি, দেশপ্রেম, জাতীয়তাবাদ সবই কি বর্ণবাদী কনসেপ্ট?
পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত একমাত্র আন কন্টাক্টেড মনুষ্য প্রজাতি আমাদের বঙ্গোপসাগরের নর্থ সেন্টিনেল দ্বীপের সেন্টিনেলীরা। তারাRead More

Durga or Mahishasura – who is the true hero of the mythological legend?
Bhagura (Indian extremist goat – Indian Shit) have, in 2025, created a Mahishasura effigy inRead More
Comments are Closed