Deadly Coronavirus !
উপসর্গহীন মানুষেরা সচেতন না হলে করোনার বিস্তার ও মৃত্যুর মিছিল থামানো যাবে না
মানুষকে বোঝানো যাচ্ছে না যে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে বৃদ্ধদের। মৃত্যুর হারও তাদের বেশি। যিনি বৃদ্ধ তিনি তো ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। তাহলে তিনি কীভাবে আক্রান্ত হচ্ছেন? এই জিনিসটা কিন্তু মানুষ বোঝে না। আমরা অনেকে বলি, নিম্ন আয়ের মানুষ, খেটে খাওয়া মানুষ তারা তো সংক্রমিত হচ্ছে না। তাদের মৃত্যুর হার কম। কিন্তু ব্যাপারটা কি তাই? ব্যাপারটা হচ্ছে, যারা খেটে খাওয়া মানুষ, যারা বয়সে তরুণ, তারা করোনায় সংক্রমিত হলেও উপসর্গ থাকে না। তাঁরা বুঝতে পারেন না যে, তারা করোনায় সংক্রমিত। এরা সব থেকে বিপজ্জনক।
এই যে বৃদ্ধ মানুষগুলো মারা যাচ্ছেন তারা সবাই মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের। এই দেশ সৃষ্টি ও গঠনে তাদের অনেক অবদান। আজ যে মানুষ দু-বেলা পেট ভরে খেতে পারছেন সেগুলো তাদের অবদান, তাদের যুবক বয়সের শ্রম ও ঘামের অবদান। অথচ আজ তরুণ, কর্মজীবী মানুষেরা নিজদের উদাসীনতার কারনে তাদের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছেন !
আমি যেমন নিজের উদাসীনতায় আক্রান্ত হয়েছি এটা বলা যাবে না। আমার চারিপাশের অন্যরা আগেই উপসর্গহীন বা মৃদু উপসর্গ নিয়ে আক্রান্ত হয়েছে। আমার এড়ানোর সুযোগ ছিল না। কিন্তু যে কোন কারনে হোক আমি দীর্ঘমেয়াদে কর্ম-অক্ষম হয়ে বসে গেলাম। আমার প্রচন্ড শারীরিক দূর্বলতা ছাড়া আর তেমন কোন উপসর্গ ছিল না/নেই যা বাহ্যিকভাবে অনুভব করা যায়। আমাদের বাসার দারোয়ান চাচা বিশ্বাসই করেন না যে করোনা নামে কিছু আছে, পাশের বস্তির মানুষজনও বিশ্বাস করেন না। এখন নানান প্রয়োজনে দারোয়ান চাচা বাসায় আসেন, গেইটের মুখে দেখা হয়, উনি সবার বাচ্চাদের কোলে নেন। বস্তির মানুষ ও ভ্যানে আসা বিক্রেতাদের সঙ্গে তার দহরম-মহরম। এখন আমরা কিভাবে সংক্রমন এড়াবো ? কাল সন্ধ্যারাতে বস্তিতে তুমুল ঝগড়াঝাটি হলো, দা-বাটি নিয়ে তেড়ে যাওয়া থেকে ধস্তাধস্তি করলো প্রায় শ’খানিক মানুষ। কারো মাস্ক নেই, কেউ করোনাকে পাত্তা দেয় না। এখন কিভাবে করোনার বিস্তার থামবে ?
গতমাসে ঢাকা জিপিও’তে গিয়েছিলাম এক কাজে। সেখানে অনেকেই মাস্ক পরা ছিল না। জিপিও’র এক কর্মী মাস্ক পরার অনুরোধ জানালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা এক ভদ্রলোক জানালেন গতবছর তার করোনা হয়ে গেছে, করোনা-ফরোনা কিছু না, সরকার স্কুল কলেজ বন্ধ রাখার জন্য করোনা বাড়ার বাহানা করছে। একজন ইউনিভার্সিটি গ্রাজুয়েট হয়েও তিনি মনে করছেন করোনা বাড়ার তথ্য একটা ষড়যন্ত্র যা সরকার করছে বিভিন্ন স্বার্থে ! এই যখন অবস্থা তখন করোনার বিস্তার থামাবেন কিভাবে ? মধ্যে পড়ে আমরা একজন স্বজন হারালাম, আমি নিজে অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকলাম কতদিন ! কারো পরিবারে কেউ আক্রান্ত হয়ে পড়ে না থাকলে বা কেউ তার স্বজন না হারালে বুঝবে না করোনা কত ভয়াবহ একটা ভাইরাস ! কারো জন্য হয়তো এটা কিছুই না আবার অন্য একজনের জন্য সেটা সাক্ষাৎ মৃত্যু ! যারা সুরক্ষা না মেনে, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলাফেরা করেন তারা চান না সমাজের দূর্বল মানুষগুলো বেঁচে থাক !
প্রথম আলোর এই প্রতিবেদনটি পড়ে দেখুন।
Related Posts
স্বৈরাচার যখন দানব হয়ে যায় তখন মানুষের লাশের গন্ধ তাদের কাছে প্রিয় হয়
আমি আওয়ামী লীগের কোন পর্যায়ের কমিটির কখনোই কেউ ছিলাম না, এখনো নেই। আওয়ামী লীগ বাRead More
Crimes against humanity in Israel-Palestine and the inhumanity of Islam
I occasionally speak with a fairly wealthy American who is of British origin. The gentlemanRead More
ইসরায়েল-ফিলিস্তিনে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ও ইসলামের অমানবিকতা
একজন মোটামুটি সম্পদশালী আমেরিকানের সঙ্গে মাঝে মাঝে কথা হয়, ব্রিটিশ অরিজিন। ভদ্রলোকের অনেক বয়স, যদিওRead More
Comments are Closed