Science
The Real Source of Oxygen

The Real Source of Oxygen

অনুজীবগুলোই কি একদিন একদা তাদের রাজত্বে থাকা পৃথিবীর পূনঃদখল নিবে ?

এই পৃথিবীতে মানুষ তো আর শুধু আমরাই ছিলাম না, আরও নানান জাতের মানুষ ছিল। নিয়ার্ন্ডার্থাল, ডেনিসোভান, হোমো ইরেক্টাস আরো কিছু। সব কটাকে মেরে ফেলেছি আমরা হোমো স্যাপিয়েন্সরা। কী ভয় কী ভয় ! আমরা ছাড়া অন্য কেউ রাজত্ব করতে পারবে না। নিজেদের এক সময় নাম দিলাম ‘সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব’। শিম্পাঞ্জির বংশধরেরা নাকি শ্রেষ্ঠ জীব! খুনোখুনি আর বর্বরতা করে শ্রেষ্ঠ সেজেছি। জীব জন্তু পশু পাখিকে মেরে ধরে সর্বনাশ করেছি, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা যেখানে গিয়েছি সেখানকার প্রাণী, গাছপালাকে ধ্বংস করেছি। লক্ষ লক্ষ প্রজাতি ধ্বংস করেছি আমরা এই হোমো স্যাপিয়েন্সরা। এখনো কত কি করছি, খাদ্যের জন্য এমন কোন প্রাণী নেই যা আমরা মারছি না, এর লোম দিয়ে ওভার কোট বানাবো, ওর চামড়া দিয়ে হ্যান্ডব্যাগ বানাবো, এর থাবা দিয়ে ছাইদানি বানাবো, ওর দাঁত দিয়ে গয়না বানাবো, আমাদের শখের শেষ নেই। এই পৃথিবী যে শুধু আমাদের নয়, ওদেরও – যেন ভুলেই গিয়েছিলাম।

এখন ওই ‘ইতর’ পশু পাখিগুলোই সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীবগুলোকে একঘরে করে রেখেছে, এতটাই ওদের শক্তি। আর আমরা জানিইনা ভবিষ্যত বলতে আমাদের কিছু আছে কি না।

এই পৃথিবীতে মানব প্রজাতির বিবর্তন ও টিকে থাকার পিছনেও ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়াদের আছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। বলতে পারেন, তাদের কারনে আজ পৃথিবী মানুষের বাসযোগ্য।

একসময় একশ কোটি বছর পৃথিবী শুধুমাত্র নানা ধরনের অণুজীবের দখলে ছিল। আদতে এইসব ব্যকটেরিয়া, ভাইরাস, হাইড্রা, প্রটোজোয়া এগুলোর অনেকে অনেক অবদান আমাদের পৃথিবীকে আমাদের উপযোগী করার জন্য। বিশেষ করে অক্সিজেন এর জন্য ! পৃথিবীটা মূলত ওদেরই, আমরা মানুষ ও অন্যান্য বড় জীবই প্রকৃত পরজীবী।

প্রায় ২৫০ কোটি বছর পূর্বে কিছু ‘বিশেষ’ ব্যাকটেরিয়া সূর্য থেকে আসা শক্তি ব্যবহার করে জীবন ধারণ করা শুরু করলো। জীবন ধারণের এ প্রক্রিয়ায় তারা পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ বর্জ্য পদার্থটি উৎপাদন ও নিঃসরণ শুরু করলো, যার নাম ‘অক্সিজেন’। সুতরাং আমরা এখন যে অক্সিজেনের সাহায্যে বেঁচে আছি তা আমাদের আদি-প্রাণের উচ্ছিষ্ট ছাড়া কিছুই নয়। সেইসব ব্যকটেরিয়ার কল্যানেই আমাদের বেঁচে থাকা।

সেসময় সমুদ্রের পানি ছিলো প্রচুর লৌহ উপাদানে পরিপূর্ণ। ব্যাকটেরিয়া নির্গত অক্সিজেন লৌহ উপাদানের সাথে বিক্রিয়া করে তৈরি করে ভারি ধাতব-অক্সাইড যা থিতিয়ে জমা হয় সমুদ্র তলদেশে। শত কোটি বছর ধরে জমতে থাকা অক্সাইডের স্তর তৈরি করে লোহার বিশাল সংগ্রহশালা যা সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে উত্থিত হয়ে এখন আমাদের কাছে “লোহার খনি” নামে পরিচিত। আপনার সুঁই থেকে শুরু করে জুতার পেরেক পর্যন্ত যত স্থানে লোহা রয়েছে তার সবার প্রাথমিক অবস্থান ও রূপান্তর একই।

পানিতে থাকা সকল অসম্পৃক্ত লৌহ উপাদান যখন অক্সাইডে পরিণত হলো, তখন অক্সিজেন মিশতে থাকলো সমুদ্রের পানিতে। সমুদ্রের পানি অক্সিজেনে পূর্ণ হবার পর অতিরিক্ত অক্সিজেন উঠে এলো সমুদ্র পৃষ্ঠ ছেড়ে বায়ুমণ্ডলে, বায়ুমণ্ডল পূর্ণ হলো পর্যাপ্ত অক্সিজেনে।

সেই অনুজীবগুলোই কি একদিন অন্যসব প্রাণী, উদ্ভিদকে হটিয়ে দিয়ে একদা তাদের রাজত্বে থাকা পৃথিবীর পূনঃদখল নিবে ? নাকি সৃষ্টির সেরা বলে দাবীদার মানুষের অহংকারের প্রতিশোধ নিচ্ছে তারা ?

Related Posts

Evolutionary Biology and Women

Protecting women is a man’s responsibility – this is a lesson rooted in evolutionary psychology

A common tendency across all societies is to take extra care of women. This isRead More

Mitochondrial Eve

নারীকে সুরক্ষা দেয়াটা পুরুষের কর্তব্য, এটা বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানের শিক্ষা

সব সমাজের একটা কমন টেন্ডেন্সি হলো নারীকে এক্সট্রা কেয়ার নেয়া। এটা প্রকৃতির একটা নিয়ম। মাইটোকন্ড্রিয়ালRead More

Evolution through mutation

Evolution through mutation: Nature’s perfect strategy

Evolution is the gradual process of change in the living world through which species adaptRead More

Comments are Closed