
Science Storytelling is Needed in Bengali
বাংলা ভাষায় এখন সবচেয়ে বেশী দরকার বিজ্ঞানের গল্প শোনানো ও শোনার অনেক মানুষ
বাংলা ভাষায় যে জিনিসটি সবচেয়ে অপ্রতুল সেটা হলো সহজ ভাষায় শিশুদের ও মানুষকে বিজ্ঞানের গল্প শোনানোর প্রচেষ্টা। ইউটিউব, ফেসবুক খুললে হাজার হাজার ওয়াজ-নসিয়ত দেখতে পাবেন কিন্তু বিজ্ঞানের গল্প শোনানোর বা শোনার তেমন মানুষ পাবেন না। বাংলাদেশের বেশীরভাগ মানুষ এখন ৪০০ বছর আগের ইউরোপের মানুষের মতো উগ্র, অন্ধ, প্রগতিবিরুদ্ধ আচরনে উৎসাহিত হচ্ছে। ইউরোপ আজকের ইউরোপ হতে পেরেছে কারন তারা সে সময়ের প্রচন্ড প্রতাপশালী চার্চের কর্তৃত্ব খর্ব করতে পেরেছিল।
এই যে বন্যা আহমেদ এতো প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন সহজ ভাষায় মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক করা জন্য, তার কি কম মূল্য দিতে হয়েছে। তার স্বামী অভিজিৎ রায়কে হত্যা করা হয়েছে বিজ্ঞান প্রচার ও প্রসার করার অপরাধে। বন্যা আহমেদের কল্লাটাও কোনমতে রক্ষা পেয়েছে চিকিৎসার কারনে। অভিজিৎ রায়ের হত্যার এখনো বিচার হয়নি, বাংলাদেশের প্রসাশন মূল সাক্ষী বন্যা আহমেদকে খুঁজে পায় না।
বিজ্ঞানের কোন বক্তব্য ধর্মের সঙ্গে মিল না পেলেই একদল উঠে পড়ে লাগে তাদের কল্লা কাটতে। আমি সামান্য মানুষ, জাকির নায়েকের সমালোচনা করে একটু লেখায় আমাকে মৃত্যু হুমকিও দিয়েছে মানুষ, বাপ-মা, জন্ম তুলে গালি তো সাধারন ব্যাপার। তারা দীর্ঘদিন ধরে আমার প্রোফাইলে ঘোরে, বন্ধু তালিকাতেও আছে কেউ কেউ। অথচ এই লোকগুলি ভারতের সমালোচনা করলে, সরকারের নিন্দা করলে, ডাক্তারদের কসাই বললে মহা উৎসাহে বাহবা দেয়। তাদের নিশ্চিত ধারনা বিজ্ঞানকে ধর্মের সঙ্গে মিলতেই হবে। না মেলা মানেই যিনি বিজ্ঞান প্রচার করবেন তাকে শেষ করে দিতে হবে। তাদের চিন্তা ও কথার সঙ্গে না মিললেই আপনাকে তারা একেবারে চিবিয়ে খাবে।
ভিনদেশের শিশুরা যখন মহাকাশ নিয়ে গল্প শোনে, তাদের তরুণেরা যখন জেনেটিক্স নিয়ে গবেষণা করে আমরা তখন হাগার সঠিক নিয়ম নিয়ে ঝগড়া দেখি বয়স্কদের, কে কি কাপড় পরবে, ভাস্কর্য থাকলে বা না থাকলে কি লাভ/ক্ষতি এসবের হিসাব শুনি। দিনশেষে নিজেদের পিছিয়ে থাকার জন্য অভিশাপ দেই, দোষ দেই সেই ভিনদেশী কোন মানুষকে, সব কিছুতেই তাদের ষড়যন্ত্র খুঁজি।
সবকিছুর প্রথমে দরকার একজন মানবিক মানুষ হওয়া, বিজ্ঞানমনস্ক হওয়া, বর্তমান জীবনকে শান্তিপূর্ণ করার জন্য কাজ করা।
এই সমস্ত ভিডিও দেখার মানুষ খুবই কম। কারন আমাদের দেশে শৈশব থেকেই মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক করা হয় না। মানুষ এগুলোতে কোন মজা খুঁজে পায় না। দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি মূহুর্ত্তে বিজ্ঞানের সুযোগ গ্রহন করে সেই বিজ্ঞানকেই ক্ষতিকর জ্ঞান করে। অন্য কে কি বলছে, কেন বলছে সেটা ভাবার সময়ও তাদের নেই। তাদের বিশ্বাস, চিন্তার প্রতিফলন না থাকা মানেই দুনিয়াতে অন্য কারো কোন অধিকার নেই কথা বলার ! এমন কিছু হিপোক্রেট দেখি, তাদের সবাই পটেনশিয়াল ক্রিমিনাল, সামনে সামনে খুব ভদ্রতার মুখোশ পরে থাকবে কিন্তু তাদের চিন্তার বাইরে গেলেই আপনার জীবনের উপরে উঠতেও দ্বিধা করবে না।
যতদিন একটা বিজ্ঞানমনস্ক প্রজন্ম তৈরি না হবে ততদিন বিজ্ঞান প্রযুক্তিতে উন্নত দেশগুলোর দাসত্ব করেই পার করতে হবে এদেশের মানুষের। উগ্রতা, ধর্মান্ধতা নিয়ে পড়ে থাকলেও বিদেশীরা কিছু বলবে না। কারন অন্ধদের কাছে জিনিস বিক্রি করা সহজ। অন্ধরা খুব সহজ কাস্টমার। যতদিন মানুষ এমন অন্ধ হয়ে থাকবে ততদিন তারা আমাদের স্রেফ তাদের বাজার ভাববে, বন্ধু নয়।
Related Posts

Sunlight: A Natural Medicine, Cultural Wisdom, and the Key to Healthy Longevity
For thousands of years, many civilizations have worshipped the sun as a deity – notRead More

সূর্যের আলো: প্রাকৃতিক ঔষধ, সাংস্কৃতিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকর দীর্ঘায়ুর চাবিকাঠি
হাজার হাজার বছর ধরে অনেক সভ্যতা সূর্যকে দেবতা মানে; শুধু বৈদিক, পৌরাণিক, এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য,Read More

Protecting women is a man’s responsibility – this is a lesson rooted in evolutionary psychology
A common tendency across all societies is to take extra care of women. This isRead More
Comments are Closed