Religious blindness !
সবকিছু একদিন নষ্টদের দখলে যাবে, সেদিন কি খুব বেশী দূরে ?
সরকারি বরিশাল কলেজের নাম পরিবর্তন করে অশ্বিনী কুমার দত্তের নামে করার প্রস্তাবে ফুঁসে উঠেছে বরিশালের ছাত্র সমাজ। ওই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের ছাত্র সমাজ। মানববন্ধনে আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। এই এক ব্যাপারে সবাই এক হয়ে যায়। দেশ বিদেশ থেকে বাংলা মূলকে আসা অনেক ব্যাক্তির নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামকরন হলেও এই সমস্ত নামে আপত্তি তোলার জন্য সব রাজনৈতিক দলের মানুষ এক হয়ে যায়।
একদিন হয়তো কালিগঞ্জ, নারায়নগঞ্জ এসব নাম পরিবর্তনের দাবীও মানুষ করবে। মানব সভ্যতা, জ্ঞান বিজ্ঞানের বিকাশের পথে সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয় কিছু বিষয়কে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে মানুষের সার্বজনীন অবদানকে খাটো করে দেখার একটা রেওয়াজ এখানে দিন দিন প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।
অশ্বিনীকুমার দত্ত বরিশালের গৌরনদীর বাটাজোর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন সাব-জজ ব্রজমোহন দত্ত। কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে এফ এ পাশ করেন ও ১৮৭৯ সালে এলাহাবাদ থেকে মাত্র ২৩ বছর বয়েসে আইন (বি.এল) পাশ করেন তিনি। ওই বছর তিনি শ্রীরামপুরের চাতরা উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।
বরিশালে বিভিন্ন সমাজহিতৈষী ও কল্যাণমূলক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে তিনি সুপরিচিত ছিলেন। জাতীয়তাবাদী রাজনীতি, জনকল্যাণ ও উন্নয়নমূলক কাজকর্মের জন্যে তাকে মহাত্মা অশ্বিনীকুমার বা আধুনিক বরিশালের রূপকার বলে অভিহিত করা হতো। দুর্নীতি, সামাজিক গোঁড়ামি, কুসংস্কার ইত্যাদির বিরুদ্ধে ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নিবেদিত প্রান ছিলেন তিনি। দুর্ভিক্ষে অতুলনীয় সেবাকাজে, চা বাগান শ্রমিকদের ওপর অত্যাচারের প্রতিবাদে তিনি ছিলেন নিবেদিতপ্রান, ক্লান্তিহীন নেতা। চারণকবি মুকুন্দ দাস ও রাজনীতিবিদ আবুল কাশেম ফজলুল হকের খ্যাতি ও প্রতিষ্ঠায় তার সর্বাত্মক অবদান ছিল। বরিশাল শহরে নিজের দান করা এলাকায় পিতার নামে ব্রজমোহন বিদ্যালয় ও ব্রজমোহন কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। গভীর নিষ্ঠার সঙ্গে কুড়ি বছর বিনা বেতনে কলেজে শিক্ষাদান করেছেন। তিনি বরিশাল শহরে স্ত্রী শিক্ষার্থে একটি বালিকা বিদ্যালয়ও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ১৯০৫-১৯১১ সালের বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময় জাতীয় নেতার স্থান লাভ করেন তিনি। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস দলের মাদ্রাজ অধিবেশনে বাংলার প্রতিনিধিত্ব করেন। জাতীয় কংগ্রেসকে প্রাসাদ রাজনীতি থেকে সাধারণ জনগনের মধ্যে নিয়ে আসার প্রথম কারিগর অশ্বিনীকুমার দত্ত। তার প্রতিষ্ঠিত স্বদেশ বান্ধব সমিতির স্বেচ্ছাসেবকদের সাহায্যে বরিশালকে স্বদেশী আন্দোলনের একটি শক্তিশালী কেন্দ্রে পরিণত করেছিলেন। জেলার সর্বত্র এর ১৬০ টিরও বেশি শাখা ছিল এই সমিতির। ব্রিটিশ পুলিশ তাকে বরিশালে গ্রেপ্তার করে ও ১৯০৮ সালে তার সমিতি নিষিদ্ধ করে। তাকে ১৯১০ সাল পর্যন্ত লক্ষ্মৌ জেলে বন্দি রাখা হয়। ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধী প্রথম বরিশালে এসে অশ্বিনীকুমার দত্তকে জেলার অদ্বিতীয় নেতা হিসেবে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছিলেন। উল্লেখ্য যে, বর্তমান বরিশাল সরকারী কলেজ তার বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত।
Related Posts
What is the main purpose of people coming to Earth?
Many people are confused by this question. In the swing of this wandering, they tryRead More
নবী মোহাম্মদ কি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ ?
Is Prophet Muhammad the Best Person in the World? কিছু মুমিন দাবী করে বিধর্মী বড়Read More
কোরান কি আসলেই নির্ভুল? বৈজ্ঞানিকরা কি কোরান নিয়ে গবেষণা করেন?
পাকিস্তানের এক তথাকথিত স্কলার একবার জীন দিয়ে বিদ্যূৎ উৎপাদন নিয়ে গবেষণা করেছিলেন নাকি! মোল্লা তারিকRead More
Comments are Closed