
Necrophilia, a Serious Disease
ভয়ংকর রোগ নেকরোফিলিয়া, যারা মৃতদেহকে ধর্ষণ করে পুলক অনুভব করে
২০১৫ সালে এই নিউজ শেয়ার করে লিখেছিলাম বলে অনেকেই আমাকে ফেসবুকে গালিগালাজ করেছিল ধর্মীয় জোশে। কারন ঘটনাটা ছিল পাকিস্তানের এবং ধর্ষক ও মৃত মেয়ে সবাই ছিল মুসলিম। অথচ সেই একই ঘটনা এখন বাংলাদেশের সংবাদ শিরোনাম হয়েছে।
সংবাদটি কি ?
“পাঁচটি আত্মহত্যার ঘটনা। আত্মহত্যাকারী প্রত্যেকে ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সী কিশোরী। ময়নাতদন্তের জন্য তাদের লাশ এসেছিল রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে। লাশগুলোর সুরতহাল প্রতিবেদনে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না, ছিল না ধর্ষণের আলামতও। অথচ সিআইডির ল্যাবরেটরিতে ডাক্তারের পাঠানো প্রতিটি মরদেহের ‘হাই ভেজাইনাল সোয়াবে (এইচভিএস) ’ পাওয়া গেল একই পুরুষের শুক্রাণুর উপস্থিতি। অনুসন্ধানে জানা গেলো, মরদেহগুলো মর্গে আসার পর সেগুলোর সঙ্গে শারীরিক সংসর্গ করেছিলেন ডোমের সহযোগী মুন্না ভক্ত (২০)।”
মরদেহের সঙ্গে শারীরিক সংসর্গ, ডোমের সহযোগী গ্রেপ্তার
এটি একটি ভয়ংকর রোগ, নাম নেকরোফিলিয়া। আরো অনেকেই থাকতে পারেন এ রোগে আক্রান্ত। যেমন ২০১৫ সালের মার্চ মাসে কর্নাটকে এক জনসভায় মুসলিম নারীদের লাশ কবর থেকে তুলে ধর্ষণ করতে হিন্দুদের প্রতি আহবান জানিয়েছিলেন ভারতদের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির নেতা ও সংসদ সদস্য যোগী আদিত্যনাথ। সন্দেহ হয় তিনিও হয়তো এই রোগে আক্রান্ত।
নেকরোফিলিয়া কি?
ভয়াবহ এক মানসিক ব্যাধির নাম নেকরোফিলিয়া । থানাটোফিলিয়া বা নেকরোল্যাগ্নিয়া নামেও পরিচিত। এ রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তি মৃতদেহের প্রতি প্রচন্ডভাবে যৌন আকর্ষন অনুভব করে। হতে পারে এটা ফ্যান্টাসি কিংবা বাস্তবে।
নেকরোফিলিয়া রোগের ইতিহাস বেশ পুরোনো যদিও শব্দটি ততো পুরোনো নয়। ইতিহাসের জনক হিরোডোটাসের ইতিবৃত্ত গ্রন্থে মৃতদেহের সাথে যৌন সঙ্গমের উল্লেখ রয়েছে।
প্রাচীন মিশরে সুন্দরী কিংবা প্রখ্যাত মহিলা মারা গেলে তাদের মমি করার পূর্বে তিন/চার দিন রেখে দেওয়া হতো যাতে উক্ত মৃতদেহ যৌন সঙ্গমের উদ্দেশ্যে কেউ ব্যবহার করতে না পারে। তাছাড়া পেরুতে মনে করা হতো এর মাধ্যমে মৃতদেহের সাথে জীবিতের যোগাযোগ স্থাপিত হয়।
নেকরোফিলিয়ায় আক্রান্ত রোগী যে শুধু মৃতের সাথে যৌন সহবাস করে তা নয় অনেক সময় সে সহবাসের উদ্দেশ্যে ভিকটিমকে হত্যা করে। পরিসংখ্যানে দেখা যায় নেকরোফিলিয়ায় আক্রান্ত সব রোগীই পুরুষ যাদের বয়স ২০ বছর হতে ৫০ বছর পর্যন্ত। ডাঃ জোনাথন রসম্যান ও ডাঃ ফিলিপ রেসনিক তিন প্রকারের নেকরোফিলিয়া রোগীর উল্লেখ করেছেন –
ক. নেকরোফিলিয়া হোমিসাইডঃ যারা ভিকটিমের মৃতদেহের সাথে সহবাসের উদ্দেশ্যে ভিকটিমকে হত্যা করে।
খ. রেগুলার নেকরোফিলিয়াঃ যারা যৌন আনন্দের জন্য মৃতদেহকে ব্যবহার করে।
গ. নেকরোফিলিক ফ্যান্টাসিঃ যারা মৃতদেহের সাথে কল্পনায় সহবাস করে যৌ্ন আনন্দ লাভ করে কিন্তু বাস্তবে করে না।
পরিসংখ্যানে দেখা যায় ক এবং গ এর চেয়ে খ ক্যাটাগরির নেকরোফিলিয়া রোগীর সংখ্যাই অধিক। নেকরোফিলিয়া রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তির ৫০%- ই মর্গে চাকুরী করতো, কিছু সংখ্যক রোগী গোর খোদক কিংবা সমাধিক্ষেত্রের পহারাদার। বেশকিছু সংখ্যক কুখ্যাত সিরিয়াল কিলারও নেকরোফিলিয়া রোগে আক্রান্ত ছিল।
নেকরোফিলিয়া আক্রান্ত ব্যাক্তির ইতিহাস বেশ পুরোনো। খ্রিষ্টপূর্ব ৩৭ সালে রোমান সম্রাট কিং হ্যারড এ রোগে আক্রান্ত ছিলেন বলে জানা যায়। তিনি ছিলেন স্বেচ্ছাচারী ও নিষ্ঠুর প্রকৃতির শাসক। ঈর্ষাবশত যে কাউকে খুন করতে তিনি দ্বিধা করতেন না। তার স্ত্রী হ্যাসমোনিয়েনকে হত্যার পর বিশেষ প্রক্রিয়ায় তার মৃতদেহ সংরক্ষণ করে সাত বছর ধরে তার সাথে যৌনক্রিয়া চালিয়ে যান।
আরেকজন কুখ্যাত নেকরোফিলিয়া রোগী স্যার প্রাইস। তার প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর তিনি দ্রুতই দ্বিতীয় বিয়ে করেন কিন্তু ১ম স্ত্রীকে মমি করে দ্বিতীয় স্ত্রীকে সাথে নিয়ে একই বিছনায় ঘুমাতেন।
দ্বিতীয় স্ত্রীর মৃত্যুর পরও তাকে একইভাবে মমি করে বিছনায় রেখে দেন। তৃতীয় স্ত্রী দুটো মৃতদেহ নিয়ে একই বিছনায় ঘুমাতে অস্বীকার করলে এ নিয়ে বিরোধ বাঁধে। তিনি মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তার এ অস্বাভাবিক আচরন অব্যাহত রাখেন।
যুক্তরাষ্ট্রে হ্যারি ব্যালট নামে এক গোর খাদককে গ্রেপ্তার করা হয় অসংখ্য মৃতদেহের সাথে সহবাস করার কারনে। গ্রেপ্তারেরর পর তার সহজ স্বীকারোক্তি – “আমার পক্ষে জীবিত কোন মেয়ের সাথে সম্পর্ক করা সম্ভব নয়, তাই আমি মৃতদেহের সাথে সহবাস করি। এতে কারো কোন ক্ষতি হয়না, কিন্তু আমি পুলক লাভ করি।”
নেকরোফিলিয়ার আর এক আলোচিত ব্যাক্তি হলেন ডাঃ কার্ল ভ্যান ক্যাসল। ১৯৩০ সালে ফ্লোরিডায় তিনি ডাক্তারী পেশায় থাকাবস্থায় মারিয়া এলেনা উজ নামীয় এক সুন্দরী টিবি রোগীর চিকিৎসা করেন। চিকিৎসা করতে করতে গভীরভাবে ঐ মেয়ের প্রেমে পড়ে যান ডাঃ ক্যাসল। ডাঃ ক্যাসল মেয়েটিকে বাচাঁনোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন কিন্তু ব্যর্থ হন।
মারিয়ার মৃত্যুর পর তাকে জাঁকজমকপূর্ণভাবে সমাহিত করা হয়। মারিয়ার সমাধির পর তার দেহে যেন পঁচন না ধরে সেজন্য ডাঃ ক্যাসল তার সারা গায়ে মোম দিয়ে দেন এবং পারফিউম ছড়িয়ে দেন। প্রতিদিনই ডাঃ ক্যাসল মারিয়ার সমাধিতে যেতেন এবং সমাধির উপরের অংশ সরিয়ে মৃত মারিয়ার সাথে মিলিত হতেন।
এভাবে প্রতিদিন ডাঃ ক্যাসলের মারিয়ার সমাধি পাশে যাওয়া নিয়ে প্রতিবেশীরা সমালোচনা শুরু করলে ডাঃ ক্যাসল একদিন সবার অলক্ষ্যে মারিয়াকে নিজ গৃহে নিয়ে আসেন।
মারিয়ার দেহে মোম ও পারফিউম দিয়ে নববধুর গাউন পরিয়ে মৃত মারিয়ার সাথে নিয়মিত মিলিত হতে থাকেন ডাঃ ক্যাসল। প্রকৃতপক্ষে মারিয়ার শরীরে তখন মাংস অবশিষ্ট ছিল না কেবল হাঁড় ছাড়া।
ডাঃ ক্যাসল মারিয়ার শরীরের বিশেষ অঙ্গে একটি টিউব বসিয়ে নিয়মিত যৌন কার্য করতেন। প্রতিনিয়ত মোম ও পারফিউম দেয়ার পরও মারিয়ার পঁচন এবং দুর্গন্ধ ঠেকানো যাচ্ছিল না।
প্রতিবেশীরা এ নিয়ে আপত্তি জানায় এবং পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ এসে ডাঃ ক্যাসলের রুম থেকে মারিয়ার মৃতদেহ উদ্ধার করে এবং মারিয়ার পরিবারের আবেদন মতে মারিয়াকে পুনরায় সমাধিস্থ করে। পরবর্তীতে ডাঃ ক্যাসল একটি পুতুলকে মারিয়ার মুখোশ পরিয়ে তার সাথে বসবাস করতে থাকেন।
এভাবে আমৃত্যু মারিয়ার প্রতি তার ভালবাসা অব্যাহত ছিল। এরকম বৈসাদৃশ্য ও অস্বাভাবিক আচরণ করলেও ব্যাক্তি জীবনে ডাঃ ক্যাসল ছিলেন নিপাট ভদ্রলোক।
Related Posts

Evolution through mutation: Nature’s perfect strategy
Evolution is the gradual process of change in the living world through which species adaptRead More

মিউটেশনের মাধ্যমেই বিবর্তন: প্রকৃতির নিখুঁত কৌশল
বিবর্তন (Evolution) হলো জীবজগতের ধাপে ধাপে পরিবর্তনের প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে প্রজাতিগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অভিযোজিতRead More

What can be the problem if someone takes blood from his family member?
This is a frequently asked and very important question about blood donation. If you wantRead More
Comments are Closed