Planning
Is Dhaka Really Livable

Is Dhaka Really Livable ?

আপনার প্রিয় ঢাকা শহরটি কি আসলেই বসবাসের অযোগ্য ?

৪০০ বছরের পুরানো আপনার প্রিয় ঢাকা শহরটি কি আসলেই বসবাসের অযোগ্য ?

প্রায় প্রতি বছরই বসবাসের অযোগ্যতার দিক থেকে ঢাকা থাকে বিশ্বে তলানিতে। ৪০০ বছরের এই শহরটির অনেক সম্ভাবনা ছিল, কিন্তু তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছে এদেশের নীতিনির্ধারকেরা। একটি শহরের চারিদিকে নদী, এমন প্রাকৃতিক ও পরিবেশগত সুবিধা বিশ্বে অন্য কোন শহরে নেই। কিন্তু ঢাকা অভাগা, সেজন্য অবহেলিত ও পরিত্যাক্ত হওয়ার উপক্রম হয়ে গেছে।

শুনতে অনেকের কাছে খারাপ লাগলেও ঢাকা একটা বসবাসের অযোগ্য নগরী। একটা শহরের যে বিষয় গুলো বসবাসযোগ্যতায় ভূমিকা রাখে তার বলতে গেলে কোনটাই ঢাকায় নেই। বসবাস যোগ্যতা পরিমাপ করার জন্য যে বিষয়গুলো বিবেচনা করা হয় ওইগুলো একটু বলে নেই।

১। স্থিতিশীলতাঃ ঢাকা প্রচন্ড অপরাধপ্রবণ শহর, তাছাড়া কয়েক বছর আগেও ঢাকায় হরতালে গাড়ি পোড়ানো প্রতিদিনকার ঘটনা ছিল। নারীরা রাতে বাসার বাইরে যেতে অনেকবার চিন্তা করে।

২। সাস্থ্যসেবাঃ জনসংখ্যার তুলনায় সাস্থ্যসেবা অপ্রতুল ও ব্যয়বহুল।

৩। বিনোদনের সুযোগ সুবিধাঃ শহরে পর্যাপ্ত পার্ক, খেলার মাঠ নেই; যা আছে তাও দখলে দূষনে জর্জরিত। অনেকগুলো আবার ব্যবহারের অনুপযোগী। ঢাকার মানুষের একমাত্র বিনোদনের জায়গা রেস্টুরেন্ট বা শপিং মল।

৪। সাংস্কৃতিক সহণশীলতাঃ বড় শহর হওয়ায় বাংলাদেশের অন্যান্য জায়গার চেয়ে সহনশীল, কিন্তু বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে খুব একটা আধুনিক না। কোন কাপল হাত ধরে রাস্তায় হাটলে তার হেনস্থা হবার সম্ভাবনা আছে। অন্যের ব্যক্তিগত জীবনে নাক গলানো নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা।

৫। ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভাবঃ প্রায় দেড় কোটি মানুষের শহরে বিশ্বে পরিচয় দেয়ার মত কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নাই, গবেষণাগার নাই। স্কুলগুলোতে ক্রিটিকাল থিংকিং শেখানো হয়না, তাই বড় হওয়ার পরও অনেকে লজিক্যাল রিজনিং ধরতে পারে না, স্কুল পর্যায়ে ইংরেজি ও গণিতের অবস্থা ভয়াবহ। এর মধ্য থেকেও অনেক স্বশিক্ষিত মানুষ নিজের চেষ্টায় কীভাবে বের হয়ে আসে ওইটাই আমাকে অবাক করে।

৬। অবকাঠামোঃ অপরিকল্পিত নগরায়ণ, পর্যাপ্ত গণ পরিবহণ না থাকা, পর্যাপ্ত রাস্তাঘাট না থাকা, অস্বাভাবিক যানজট, সুপেয় পানির অভাব, বিদ্যুৎ অপ্রতুলতা এগুলো বসবাসযোগ্য নগর গঠণের অন্তরায়।

৭। জীবনযাত্রার ব্যয়ঃ ঢাকা অত্যন্ত ব্যয়বহুল শহর, উন্নত বিশ্বের অনেক জায়গা ঢাকার চেয়ে কম ব্যয়বহুল ( যেখানে মানুষের মাথাপিছু আয় ঢাকাবাসীর চে অনেক বেশি )।

৮। বায়ুদুষণ, শব্দদুষণ, অপরিচ্ছন্নতাঃ ঢাকা শহর বায়ুদূষণে বিশ্বে শীর্ষ স্থান দখল করেছে। এ শহরের বায়ু খুবই অস্বাস্থ্যকর। এ শহরের মতো শব্দদূষণ আর কোথাও আছে কিনা সন্দেহ। অপরিচ্ছন্নতা কতটা প্রকট তা চারপাশে তাকালেই বোঝা যায়।

৯। পরিবেশঃ ঢাকার প্রাণ বুড়িগঙ্গার পানিতে হাত চুবালে হাতে যে ফোসকা পড়ে না সেটাই মানুষের ভাগ্য। তবে এই ভয়ংকর দূষিত পানিতে কোন প্রাণীরই বেঁচে থাকার কথা নয়। পানি, পরিবেশ দূষণের মাত্রা কতটা ভয়ংকর তা গবেষণা না করে খালি চোখেই বুঝে নেয়া সম্ভব।

দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতা, অফিসে গিয়ে মানুষের ভোগান্তি, গণপরিবহনের অরাজকতা প্রভৃতি নিয়ে লিখতে গেলে পয়েন্ট ১০০ পার হয়ে যাবে।

এসব কারণে ঢাকা বসবাসের আরো অযোগ্য হয়ে গেছে।


তাহলে বাঁচার উপায় কি ?
সবক্ষেত্রে সুশাসন ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি রাজধানী সরিয়ে নেয়া। অনেক দেশই তাদের প্রয়োজনে রাজধানী সরিয়ে নিয়েছে। পাশের দেশ ভারত সরিয়েছে। পাকিস্তান, মায়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা, নাইজেরিয়া সবাই তাদের রাজধানী প্রয়োজনের তাগিদে সরিয়ে নিয়েছে। কিন্তু এদিকে বাংলাদেশ অনেক চেষ্টা করেও পল্টন থেকে সরকারী অফিসগুলো আগারগাঁও তে আনতে পারেনি। এখানে সংকট অনেক। তবুও রাজধানী সরানোর বিকল্প নেই। প্রাকৃতিকভাবে উঁচু জায়গা ছিল পূর্বাচল, সেখানে সরিয়ে নেয়া ছিল যথোপযুক্ত সিদ্ধান্ত, কিন্তু তা হয়নি। পূর্বাচল নিয়ে যে পরিকল্পনা করা হয়েছিল তাও কি কাজ করবে ? ঢাকা শহরটি অভিভাবকহীন অর্থাৎ পরিকল্পনার বাইরে থেকে এসে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে (ডিকটেটেড) দেয়া হয়েছে। পরিকল্পিত এবং চাপানো আলাদা বিষয়। চাপিয়ে দেয়া হতে পারে কিন্তু সেখানে যদি পরিকল্পনা থাকে তাহলে এক সময় ভালো কিছু হবেই। যারা ভাবছেন পূর্বাচল হবে আধুনিক শহর, তবে তাদের কিছু হতাশার কথা শোনাই, সেগুলো আমার কথা নয়, নগর পরিকল্পনাবিদদের কথা। [অবশ্য আমি নিজেও একজন নগর পরিকল্পনাবিদ]

রাজউকের বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার (ড্যাপ) প্রকল্প পরিচালক মো. আশরাফুল ইসলাম জানান, ইমারত নির্মাণ বিধিমালা-২০০৮ অনুসারে, পূর্বাচল প্রকল্পের ভেতর বসবাস করা মানুষের সংখ্যা প্রায় ২৭ লাখের মতো হয়ে যাবে। কিন্তু, এ প্রকল্পের নকশা মাত্র ১০ লাখ মানুষের কথা মাথায় রেখে করায় ইতোমধ্যে নির্মিত বা নির্মাণাধীন সুযোগ-সুবিধার ওপর বিশাল চাপ পড়বে।

বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানার্সের মহাসচিব আদিল মোহাম্মদ খান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বাস্তবায়নে দেরি এবং কোনো যথাযথ মূল্যায়ন না করেই শুধুমাত্র আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক জোন অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কারণে পূর্বাচল একটি পরিকল্পিত শহর হয়ে উঠতে ব্যর্থ হবে।’

তিনি বলেন, ‘নতুন শহর বলা হলেও, ঢাকা শহরের একটি অপরিকল্পিত বর্ধিত অংশ হিসেবে গড়ে উঠছে পূর্বাচল।’

https://thedailystar.net/bangla/node/229973

রাজধানী সরানো ছাড়া কি ঢাকাকে বাঁচানো যাবে ?

Related Posts

Splitting of the Moon and Islamic Myth

ফেবু মুমিনদের সহজ সরলতা, কুযুক্তি ও শেষে চাপাতির কোপ !

ফেসবুকীয় মুমিন মানেই ‘ছাগল” অন্যকথায় ছাগু (ফেসবুক আবার তাদের সম্মানার্থে ছাগু সরাসরি লিখলে গোস্বা করেRead More

Religious Sentiments and Science Education in Bangladesh

ধর্মীয় অনুভূতির দোহাই দিয়ে বাংলাদেশে বিজ্ঞান শিক্ষার পশ্চাৎযাত্রা

বাংলাদেশে সাইন্সের স্টুডেন্টদের অবস্থা খুবই শোচনীয়। সারাবছর বিজ্ঞানের জাহাজ মাথায় নিয়ে ঘুরবে, কিন্তু বিশ্বাস করবেRead More

C-Section and Evolution

সি সেকশান বা সিজারিয়ান প্রক্রিয়ায় বাচ্চা জন্মদানে বিবর্তন প্রক্রিয়ায় প্রভাব পড়ছে

বিবর্তনবাদ তত্ত্ব বলছে যে, মানুষ আর পথিবীর বুকে চরে বেড়ানো অন্যান্য বাদঁর কিংবা বন-মানুষেরা অনেকRead More

Comments are Closed