A Sad Story!
উন্নয়নের আড়ালে ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশের প্রকৃত করুন চিত্র
ভারত চাঁদে নভোযান পাঠিয়েছে এবং সেটা সেখানে সফল অবতরণও করেছে। ভারতের এতে গর্বের সীমা নেই, ভারতীয়রা তো বটেই, দক্ষিণ এশিয়ার আমরাও খুশিতে বাকবাকুম। বাংলাদেশ খরস্রোতা পদ্মার উপরে ব্রীজ বানিয়েছে, এতে বাংলাদেশের মানুষের গর্বে বুক ভরে উঠে। ভারতের মানুষও এই ব্রীজ নিয়ে খুব কৌতূহলী। পাকিস্তানও এই ব্রীজ দেখিয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি তুলনা করে। কিন্তু এই ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান এখনো শত বছর পিছিয়ে আছে তাদের নিজেদের দেশের বাস্তবতা পাল্টাতে। সীমাহীন অদক্ষতা, দুর্নীতি, লুটপাট, জ্ঞান প্রবাহের স্বল্পতা এই অঞ্চলের পৌনে দুইশত কোটি মানুষের জীবনকে এখনো ততোটা স্বস্তি দিতে পারেনি। ভাগ্যিস এই অঞ্চলে ভগবান, ঈশ্বর, আল্লা নামক কিছু বস্তর অস্তিত্ব ছিলো। না হলে কোন শাসক গোষ্ঠীই জেলে যাওয়া ছাড়া মৃত্যুবরণ করতে পারতো না। জনগণ নিতান্তই ভগবান, ঈশ্বর, আল্লার উপরে নির্ভর করে থাকে বলে শাসকগোষ্ঠী তাদের অপকর্ম, অদক্ষতা, অযোগ্যতা, লুটপাটের কাহিনী চেপে রাখতে পারে।
একটি সত্য ঘটনা শুনুন তবে। এটা ভারতের, তবে বাংলাদেশ, পাকিস্তানে পরিস্থিতি এর চেয়ে আরো খারাপ। ঘটনাটি একটি শিশুর, ওর নাম ইমরান। ভারতের ফারাক্কার দশ বছরের বালক ইমরানের ছোট্ট জীবনের করুণ পরিণতির কথা নিয়েই সে গল্প।
ইমরান সাপের কামড় খায়। সাপে কামড়ানোর দেড় দিন পর তাকে নিয়ে আসা হয়েছিল স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। ওখানে তারা বলেছেন, এতো দেরী করে এসেছে, আমরা কিছু করতে পারব না। ছেলেটাকে তারা ওখান থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে তারাপুর শ্রমিক হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছে। ভারতের কেন্দ্র সরকারের ঐ হাসপাতালটি বিড়ি শ্রমিকদের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল। ওখানে সাপের এন্টিভেনম থাকে না। তারা কোন চিকিৎসা দিতে না পারায় সাথে সাথে হাসপাতালের আম্বুলেন্সে ছেলেটিকে জঙ্গীপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছিল। সেখান থেকে তাকে আবার বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে। বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকেরা ইমরানকে দেখে বললেন বাচ্চাটির ডায়ালিসিস লাগবে। তাঁদের ওখানে বাচ্চাদের কিডনি বিশেষজ্ঞ নেই। তাই বাচ্চাটিকে তারা কোলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেছেন। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে খোঁজ করে এই বয়সের কোন সাপে কামড়ানো রোগী ভর্তির তথ্য পাওয়া গেল না। বাচ্চাটিকে নিয়ে নানা হাসপাতালে ঘুরছিল যারা তারা বাচ্চাটিকে আর কোলকাতায় না রেখে বাড়ী ফিরে এসেছিল। বাচ্চাটির বাড়ীর লোক জানিয়েছিল, বাচ্চাটি মারা গিয়েছে। তবে খবর আসে যে তারা আসলে মিথ্যে বলেছে। বাচ্চাটি নাকি তখনই মারা যায়নি, ওকে আবার ওঝার বাড়ী নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরদিন সরকারী লোকজন ছেলেটির বাসায় গেলে তারা দেখে ততক্ষনে ইমরানকে কবর দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এই যে ঘটনা এতে কী মনে হয়? গরীব দেশ, সম্পদের অপ্রতুলতা এসবের কারনে কী শিশু ইরমান মারা গেলো? তাহলে কী চাঁদে মিশন না পাঠিয়ে হাসপাতাল বানাতে হবে? তিন গুণ টাকায় পদ্মা ব্রীজ না বানিয়ে নার্সিং হোম বানাতে হবে? না ভাই, ওসব মিশন, ব্রীজ বানানো চালু রেখেও মানুষকে বাঁচাতে কাজ করা যায়। এতে একটুও বাজেট বাড়াতে হবে না। শুধু দরকার সরকার, সরকারী নীতি নির্ধারক, আমলা কামলাদের একটুখানি সদিচ্ছা। এই একবিংশ শতাব্দীতে এসেও এসব দেশগুলোর থানা/উপজেলা ও জেলা সদরের হাসপাতালগুলোতে পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য সুবিধা নেই! ভাবা যায়, এসব দেশের রাজনীতিবিদেরা অবার উন্নয়ন উন্নয়ন বলে গালভরা গল্প শোনায়।
তবে সবচেয়ে বড় যে সমস্যা এই সময়ের প্রযুক্তি ব্যবহারে সরকারের খুব অনীহা। সিম্পল একটা তথ্যভাণ্ডারই এদের নেই যে কোন চিকিৎসা কোথায় গেলে নিশ্চিত পাওয়া যাবে, কোথায় এখন রোগীর চাপ কেমন, কোথায় কোন ওষুধ, ভ্যাকসিন, যন্ত্রপাতির মজুদ আছে কেউ জানেনা। প্রান্তিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে থেকে শীর্ষ স্বাস্থ্যসেবা কর্তৃপক্ষ করো কাছে এই তথ্য নেই। এই যুগে এই হাসপাতাল, ঐ হাসপাতাল এমন করে রোগীর বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু মানে দেশের সরকার সেই মানুষের হত্যার জন্য দায়ী। সরকারের সুবিধা হলো দেশের মানুষগুলো সরকারের এই দায়িত্বে অবহেলা নিয়ে প্রশ্ন করে না। তারা ভগবান, ঈশ্বর, আল্লার দেওয়া নিয়তি হিসাবে তাদের জীবনকে সপে দেয়। এই অঞ্চলের রাজনীতিবিদদের জন্য ধর্ম তাই এক বড় আশীর্বাদ।
Related Posts
এই ধর্মীয় উন্মাদনা এখনি থামাতে হবে, সভ্যতার পথে হাঁটুন
বাংলাদেশের সমাজটা অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে বিগত ২০/৩০ বছরে। এই পরিবর্তনের সবচেয়ে জঘন্য অনুঘটক ছিলRead More
Under the cover of development, the real image of India, Pakistan, and Bangladesh
India has sent a spacecraft to the moon and successfully landed there. There is noRead More
A tragic example of Sharia law, the injustice of Islam to women!
A shocking and heartbreaking incident happened in 2004, and it happened in Iran. Sharia lawRead More
Comments are Closed