Immigration from Bangladesh !
বাংলাদেশ থেকে প্রফেশনালরা সবাই চলে যাচ্ছে একে একে, কিন্তু কেন এতো মাইগ্রেশান ?
ইদানিং দেখছি অনেক আইটি’র লোকজন তার্কি চলে যাচ্ছে একেবারে সেটেল হওয়ার জন্য। রিসার্চ করে দেখলাম ওখানে কোয়ালিটি লাইফ লিড করার সুযোগ আছে অনেক কম খরচে। ২০০০০ বাংলাদেশী টাকায় বেশ ভালভাবে একটা সংসার চলে যাবে সেখানে। বাসাভাড়া সহ জিনিসপত্রের দাম বাংলাদেশের চেয়ে অনেক কম। সেক্যুলার দেশ, মানুষের শৃঙ্খলাবোধ ও মানবিক বোধ উন্নত। কয়েক বছর আগেও যাদের দেখতাম দেশের জন্য কিছু করতে চেয়ে উদগ্রীব, সংবাদপত্রগুলোও তাদের সাফল্যের কীর্তি তুলে ধরতো একের পর এক। তারা সবাই একে একে চলে যাচ্ছে। দেশপ্রেম, দেশসেবা, দেশের মানুষের জন্য কিছু করার ইচ্ছাগুলো তাদের মরে যাচ্ছে। তাদের কোন দোষ নেই। ক্রিয়েটিভ, সৎ, নিরীহ, ক্ষমতাহীন মানুষদের দেশ বাংলাদেশ নয়। বাংলাদেশে তারাই সফল হবে যারা রাজনীতিতে সফল হবে, দলীয় রাজনীতি বলে কথা নয়, সবখানে রাজনীতি করে টিকে যেতে হবে। আর সফল হবে ক্ষমতাবানেরা, ভয়াবহ সব দুর্নীতি করেও যারা কিছু সামাজিক, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে অনুদান দিয়ে নাম কামাতে পারবে।
একটা সময়ে হাজার হাজার তরুন যাদেরকে জীবনের আইডল মনে করতো তাদের প্রায় সবাই একে একে দেশ ছাড়ছে। যারা ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার বন্দোবস্ত করতে পারছে না তারা যাচ্ছে তার্কি, মালয়েশিয়া, এমনকি থাইল্যান্ড, আফ্রিকার কিছু সম্ভাবনাময় দেশে। একদা আফ্রিকার গৃহযুদ্ধ বিদ্ধস্ত দেশ রুয়ান্ডাও এখন অনেকের স্বপ্নের দেশে পরিনত হচ্ছে তাদের রাষ্ট্রীয় নীতি ও সৃজনশীল মানুষদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশের নিশ্চয়তা দেয়ায়। অনেকেই এখন রুয়ান্ডাতে গিয়ে ব্যবসা দাঁড় করানোর স্বপ্ন দেখছে। রিসার্চ করে দেখলাম আফ্রিকার উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হতে যাচ্ছে রুয়ান্ডা।
উদ্যোক্তা হবেন ? কি গ্রাম, কি শহর, কোথাও উপযুক্ত পরিবেশ নেই। সবখানে চাঁদাবাজি, ঘুষ, ভেজাল ওপেন সিক্রেট। গ্রামেও আপনার খামারের গাছ রাতের আঁধারে যে কেউ কেটে দিয়ে যাবে না, পুকুরে বিষ মিশিয়ে মাছ মেরে দিবে না, গরুকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলবে না, ছাগল যে কেউ চুরি করে নিয়ে যাবে না এর কোন নিশ্চয়তা নেই। আপনি কোথাও কোন প্রতিকারই পাবেন না। দেশ ছাড়ছে এমন কয়েকজন সম্ভাবনাময় তরুন উদোক্তার লেখা বিশ্লেষন করে এগুলোও পেলাম তাদের দেশ ছাড়ার কারন হিসাবে। শুধু আইটি নয়, শিল্প, সাহিত্যের অনেকেও চলে গেছেন ও যাচ্ছেন।
মানুষের দেশ ছাড়ার আর একটি বড় কারন পদে পদে অসম্মান। এখানে একটা বড় প্রতিষ্ঠান তৈরি করেও আপনি কিছু সরকারী কর্মচারীর সামনে গিয়ে চুপসে যাবেন, কারন তারা তাদের অযোগ্যতা ও অপদার্থতাকে ঢেকে রাখার জন্য আপনার সঙ্গে অহেতুক ক্ষমতা প্রদর্শন করবে। আপনাকে বুঝিয়ে দিবে তারা কতো গুরুত্বপূর্ণ। অথচ একটি দেশের সবচেয়ে সম্মানিত ও গুরুত্বপূর্ণ তাদেরই হওয়ার কথা ছিল যারা দেশের জন্য সম্পদ সৃষ্টি করে, দেশের অর্থনীতিকে বড় করে, দেশের মানুষের কাজের ব্যবস্থা করে। দুঃখজনক হলেও সত্য তাদেরকে এই দেশ কখনই উপযুক্ত সম্মান তো দেয়ই না, বরং পদে পদে নাজেহাল করে তাদের চিন্তা চেতনার মৃত্যু ঘটায়।
বর্তমানের এই গ্লোবালাইজেশানের যুগে মানুষকে হতে হবে বিশ্বনাগরিক। নিজের দেশের শত শত অন্যায়, দুষ্কর্ম, অপকর্মকে মেনে নিয়ে নিজের দেশকে বিশ্বের সেরা বলা স্রেফ অমানবিক পাগলামি। অন্ধ দেশপ্রেম একপ্রকার ভয়ংকর বর্ণবাদ।
Related Posts
স্বৈরাচার যখন দানব হয়ে যায় তখন মানুষের লাশের গন্ধ তাদের কাছে প্রিয় হয়
আমি আওয়ামী লীগের কোন পর্যায়ের কমিটির কখনোই কেউ ছিলাম না, এখনো নেই। আওয়ামী লীগ বাRead More
Crimes against humanity in Israel-Palestine and the inhumanity of Islam
I occasionally speak with a fairly wealthy American who is of British origin. The gentlemanRead More
ইসরায়েল-ফিলিস্তিনে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ও ইসলামের অমানবিকতা
একজন মোটামুটি সম্পদশালী আমেরিকানের সঙ্গে মাঝে মাঝে কথা হয়, ব্রিটিশ অরিজিন। ভদ্রলোকের অনেক বয়স, যদিওRead More
Comments are Closed