Evolution
Evolution and Medicine

Evolution and Medicine

বিবর্তনের আলোয় বিচার না করলে জীববিজ্ঞানের কোন কিছুরই কোন অর্থ হয় না

বিবর্তনের আলোয় বিচার না করলে জীববিজ্ঞানের কোন কিছুরই কোন অর্থ হয় না।
মানুষের জীবনরক্ষাকারী ওষুধগুলো উদ্ভাবনের শুরুতে ইঁদুরের উপর প্রয়োগ করে পরীক্ষা করা হয় কেন ?

মানুষও একটি প্রাণী। অন্য জীবের সঙ্গে মানুষের মূল পার্থক্য হলো তার গাণিতিক মেধা ও বুদ্ধিবৃত্তিক চেতনা। এ ছাড়া শরীরের অংশ, গঠন সবই অন্যান্য প্রাণীদের মতোই। শিম্পাঞ্জীদের সাথে আমাদের ডিএনএ প্রায় ৯৮.৬%, ওরাং ওটাং এর সাথে ৯৭%, আর ইঁদুরের সাথে ৮৫% মিলে যায়। মানে কোটি কোটি বছর পূর্বের কোন এক সময়ে ইঁদুর, মানুষ, শিম্পাঞ্জী, ওরাং ওটাং, বনোবো, বানর এদের পূর্বপুরুষ একই ছিল। এ কারণেই ইঁদুর বা বিবর্তন প্রক্রিয়ায় মানুষের কাছাকাছি অন্যান্য প্রাণীদের মধ্যে বিভিন্ন ওষুধের বা চিকিৎসার প্রাথমিক পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়ে তা পরবর্তীতে আবার মানুষের দেহে প্রয়ােগ করা হয়। আর এসব সাদৃশ্যের পিছনে কারণ একটাই, পৃথিবীর সব প্রাণীই একই আদি জীব বা পূর্বপুরুষ থেকে কোটি কোটি বছরের বিবর্তন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উৎপত্তি হয়েছে। যে জীব যত পরে আরেক জীব থেকে বিবর্তিত হয়ে অন্য প্রজাতি বা জীবে পরিণত হয়েছে তার সাথে ঐ জীবের ততই বেশী মিল খুজে পাওয়া যায়।

একটু লক্ষ্য করলেই বুঝতে পারবেন বিবর্তনবাদের দৃষ্টিকোণ থেকে জীবনকে না দেখলে আজকের এই আধুনিক জীবনযাত্রা থেকে অবশ্য প্রয়োজনীয় অগ্রগতি ও স্বাচ্ছন্দ্যের অনেকটুকুই বাদ দিয়ে দিতে হবে। আজকে বিবর্তন তত্ত্বকে বাদ দিলে – আধুনিক চিকিৎসাবিদ্যার অগ্রগতি বন্ধ হয়ে যাবে, মানুষ বা অন্যান্য জীবের ডিএনএ র গঠন বুঝে জটিল অসুখের চিকিৎসা বের করা এবং রােগ প্রতিষেধক ভ্যাকসিন তৈরির কাজ বাদ দিয়ে দিতে হবে, পরিবেশের ভারসাম্যতা রক্ষা, দূষণ রােধ, গ্লোবাল ওয়ারমিং সহ বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা বন্ধ করে দিতে হবে, উন্নত জাতের ফসল তৈরি করার কাজ বা কীটনাশকের ব্যবহার বন্ধ করে দিতে হবে – বন্ধ করে দিতে হবে আরাে হাজারটা গবেষণা ও আবিষ্কার যেগুলাে লিখতে গেলে সত্যিকার অর্থেই প্রমাণ আকারের ‘মহাভারত’ হয়ে যাবে। আমাদের প্রতিদিনের জীবনে বিবর্তন তত্ত্বের গুরুত্ব আজকে এতখানিই যে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পর্যন্ত এখন বিবর্তনীয় জীববিদ্যা, বিবর্তনীয় চিকিৎসাবিদ্যা ইত্যাদি নামে নতুন সব শাখারও সৃষ্টি করা হচ্ছে।

ধর্মীয় কুসংস্কার, গোঁড়ামি, নোংরা রাজনৈতিক কারণে আজও কিন্তু বিজ্ঞানের এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্বটিকে সামাজিকভাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। তাতে কি, আপনার জীবনে এর অনেক প্রভাব বর্তমান। ঠিক যেমন আজ এই বিবর্তন তত্ত্বের কারনেই করোনার মতো মহামারির প্রতিষেধক ভ্যাকসিন পাচ্ছেন, পোলিও দূর হয়েছে, স্মল পক্স আজ ইতিহাস, উন্নত প্রজাতির ফসলের কারনে আজ পেট ভরে খেতে পাচ্ছেন। স্বল্প পরিশ্রমে, কম সময়ে, কম খরচে অধিক ফসল পাচ্ছেন বলে আপনার বিশ্রামের সময় পাচ্ছেন ও লাভের টাকায় জীবনের মান বেড়েছে। আপনি মেনে নেন বা না নেন, এর সুফল ও প্রভাব আপনার জীবনে নিচ্ছেন প্রতিদিন। চোখের সামনেই বিবর্তনের শত শত প্রমান দেখা যায়, বিবর্তনবাদ একটি প্রমানিত বিজ্ঞান। একে অস্বীকার করা মানে বিজ্ঞানের একটি বড় অংশকে অস্বীকার করা।

ধর্মীয় কুসংস্কার, গোঁড়ামি, নোংরা রাজনৈতিক কারণে আজও কিন্তু বিজ্ঞানের এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্বটিকে সামাজিকভাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। তাতে কি, আপনার জীবনে এর অনেক প্রভাব বর্তমান। ঠিক যেমন আজ এই বিবর্তন তত্ত্বের কারনেই করোনার মতো মহামারির প্রতিষেধক ভ্যাকসিন পাচ্ছেন, পোলিও দূর হয়েছে, স্মল পক্স আজ ইতিহাস, উন্নত প্রজাতির ফসলের কারনে আজ পেট ভরে খেতে পাচ্ছেন। স্বল্প পরিশ্রমে, কম সময়ে, কম খরচে অধিক ফসল পাচ্ছেন বলে আপনার বিশ্রামের সময় পাচ্ছেন ও লাভের টাকায় জীবনের মান বেড়েছে। আপনি মেনে নেন বা না নেন, এর সুফল ও প্রভাব আপনার জীবনে নিচ্ছেন প্রতিদিন। চোখের সামনেই বিবর্তনের শত শত প্রমান (এভিডেন্স) দেখা যায়, বিবর্তনবাদ একটা ফ্যাক্ট, এটা এমন এক বিষয় যা ক্রমাগত ঘটেই চলেছে এবং যা প্রশ্নসাপেক্ষ নয়। বিবর্তন তত্ত্বটি আজকে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত এবং সুপ্রতিষ্ঠিত; এটি অত্যন্ত সফল একটি তত্ত্ব যা সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে আজকে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। একে অস্বীকার করা মানে বিজ্ঞানের একটি বড় অংশকে অস্বীকার করা।


মানুষ বানর থেকে এসেছে, তাহলে এখন কেন বানর মানুষ হচ্ছে না, এখনো কেন এতো বানর দেখা যায় ?

প্রশ্নকারীরা জানার জন্য এই প্রশ্ন করে না। তাদের ধারনা তাদের স্বল্পমাত্রার জ্ঞানের ভান্ডার দিয়ে দুনিয়ে উল্টে দিবে, এদের অধিকাংশ যুক্তি আবার লজিক্যাল ফ্যালাসির আওতাভুক্ত। এরা হলো নিখাঁদ গর্দভ। মানুষ, শিম্পাঞ্জী, ওরাং ওটাং, বনোবো এরা যে তাদের আদি কোন একই এ্যাপ বা এনসিস্টর থেকে এসেছে – এই সিম্পল জিনিসটাই তারা বোঝে না। তারা বলেই যায় মানুষ এসেছে বানর থেকে, এখন কেন বানর মানুষ হচ্ছে না, এমন নানা অদ্ভুত ও মূর্খতায় ভরা প্রশ্ন।

এই সমস্ত প্রশ্ন যারা করে তারা বিবর্তনের অ আ ক খ কিছুই বোঝে না।একটা উদাহরন দেই, একেবারে টাটকা উদারহন। চীনে শুরু হলো করোনার প্রাদুর্ভাব। সেটা সাউথ আফ্রিকায় গিয়ে বিবর্তিত হয়ে নতুন এক ভ্যারিয়েন্টের রুপ নিলো, ব্রাজিলে অন্য এক ভ্যারিয়েন্ট। একই সময়ে বিশ্বের অন্যদেশের করোনা কিন্তু আগের মতো বা ভিন্ন ভ্যারিয়েন্টে থাকলো। ভারতে বিবর্তিত হয়ে হয়ে গেল ডেল্টা, বাংলাদেশেরটা কিন্তু সেই ইটালির ভ্যারিয়েন্টই ছিল। আবার এখন আফ্রিকার কিছু দেশে নতুন করে বিবর্তিত হয়ে হয়েছে অমিক্রন, ভারতে কিন্তু সেই ডেল্টাই আছে। জীবের বিবর্তন চারিপাশের পরিবেশের সাপেক্ষে টিকে থাকার জন্য হয়। অনেকবার, অনেকভাবে বিবর্তিত হয়, কিন্তু সবাই টিকে থাকে না। করোনা ভাইরাসেরও তেমন হাজার হাজার বিবর্তন হচ্ছে, কিন্তু শুধুমাত্র শক্তিশালীগুলো যেমন, ডেল্টা, অমিক্রন এগুলো টিকে আছে। প্রাণীর বিবর্তন সবখানে একইভাবে হয় না। বড় বড় বিবর্তনের জন্য প্রয়োজন হয় হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ বছর। মানুষের ৬০/৭০ বছর বয়সে তা দেখতে পারার কথা নয়, তবে হাজার হাজার প্রমান আছে এর স্বপক্ষে।

ভিডিওতে যাকে দেখছেন তারা বনোবো। মানুষের সঙ্গে তাদের ডি এন এ ৯৮.৭% মিল।

Related Posts

Splitting of the Moon and Islamic Myth

ফেবু মুমিনদের সহজ সরলতা, কুযুক্তি ও শেষে চাপাতির কোপ !

ফেসবুকীয় মুমিন মানেই ‘ছাগল” অন্যকথায় ছাগু (ফেসবুক আবার তাদের সম্মানার্থে ছাগু সরাসরি লিখলে গোস্বা করেRead More

Religious Sentiments and Science Education in Bangladesh

ধর্মীয় অনুভূতির দোহাই দিয়ে বাংলাদেশে বিজ্ঞান শিক্ষার পশ্চাৎযাত্রা

বাংলাদেশে সাইন্সের স্টুডেন্টদের অবস্থা খুবই শোচনীয়। সারাবছর বিজ্ঞানের জাহাজ মাথায় নিয়ে ঘুরবে, কিন্তু বিশ্বাস করবেRead More

C-Section and Evolution

সি সেকশান বা সিজারিয়ান প্রক্রিয়ায় বাচ্চা জন্মদানে বিবর্তন প্রক্রিয়ায় প্রভাব পড়ছে

বিবর্তনবাদ তত্ত্ব বলছে যে, মানুষ আর পথিবীর বুকে চরে বেড়ানো অন্যান্য বাদঁর কিংবা বন-মানুষেরা অনেকRead More

Comments are Closed