
Electrical Accidents in Bangladesh
অপেশাদার মানুষের মাধ্যমে তৈরি অরক্ষিত বিদ্যুৎ লাইনের জন্য আর কত প্রাণ যাবে ?
সাম্প্রতিক সময়ের কয়েকটি সংবাদ শিরোনামঃ
“ভাত খেতে রান্নাঘরে ঢুকতেই বিদ্যুতায়িত হয়ে স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু”
“চাটমোহরে ফ্যান চালু করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শিশুর মৃত্যু”
“সাঘাটায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ গেল পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রের”
“গাইবান্ধায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শ্বশুর–জামাইয়ের মৃত্যু”
“শিবচরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেল কিশোরের”
“নোয়াখালীতে বিটিসিএলের খুঁটিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে স্কুলছাত্রের মৃত্যু”
“ধান মাড়াইয়ের যন্ত্রে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ষাটোর্ধ্ব কৃষকের মৃত্যু”
আরও আছে।
এগুলোর প্রায় সব অন্যের গাফিলতির জন্য বিশেষ করে ইলেকট্রিশিয়ানদের অদক্ষতা, স্বল্প সময়ে কাজ করে অধিক পারিশ্রমিক নেয়ার লালসা, নিম্নমানের তার/সুইচ/হোল্ডার/প্লাগ/সকেট প্রভৃতি দায়ী। কয়েকমাস আগে আমার টেবিলল্যাম্পটা হঠাৎ জ্বলা বন্ধ হয়ে যায়। আমি সব খুলে-টুলে দেখার চেষ্টা করলাম সমস্যা কোথায় ! পুরো বডি স্টিলের, ভিতরে তার খুবই নিম্নমানের, কানেকশানগুলো যাচ্ছেতাই মানে যে কোন সময় পুরো বডি বিদ্যুতায়িত হয়ে যেতে পারে। আমি দোকান থেকে আলাদা তার এনে লাগিয়ে নিলাম নিজের মতো করে। মাঝে মাঝে ঘোরে সুইচ বোর্ড খুলি সমস্যা হলে। সেখানে দেখি কত অরক্ষিত জোড়া-তালি দেয়া। কোন কারনে দুইটা তার কাছাকাছি আসলেই শর্ট সার্কিট। পুড়ে যেতে পারে সবকিছু, এমনকি মারা যেতে পারে মানুষও। প্রায় সব নামী দামী মাল্টিপ্লাগের ভিতরের লাইন খুবই অপেশাদার হাতে অরক্ষিতভাবে তৈরি। খুলে দেখলে চমকে যেতে হয়।
ইলেকট্রিক লাইন সে ঘরের হোক আর বাইরের, সবখানে কিছু নির্দিষ্ট স্ট্যান্ডার্ড মানতে হয়, প্রটোকল মানতে হয়। কে আর মানে ! আমাদের দেশে মিস্ত্রীদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থাকে না। হাতের কাজের পাশাপাশি যে কিছু থিওরি, ম্যাকানিজমটা কি, নৈতিকতার মান এসব শেখাটাও জরুরী। আপনি যখন অন্যের কাজ করবেন তখন কল্পনায় ধরে নিতে হবে সেই জিনিসটি আপনি বা আপনার নিজে শিশু/বৃদ্ধ বাবা-মা ব্যবহার করতে পারে। আপনি যদি অরক্ষিত রাখেন তবে আপনার নিজের বা পরিবারের কারো যেমন ক্ষতি এমনকি জীবনও হারাতে হতে পারে তেমনি যার বাসায় কাজ করছেন তাদের জীবনও মূল্যবান। সামান্য কিছু সময় বাঁচাতে দয়া করে ফাঁকি দিবেন না।
দেশে তৈরি অনেক সুইচ, সকেট, প্লাগ, হোল্ডার, তার খুবই নিম্নমানের। সেগুলো ব্যবহার করা আদৌ নিরাপদ না। এমনকি অনেক ব্র্যান্ডের জিনিসও দেখেছি স্ট্যান্ডার্ড মেনে বানানো হয় না।
এদিকে কারো নজর নেই। কিন্তু বাস্তবতা হলো প্রতিদিন দেশে অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে বিদ্যুতায়িত হয়ে। বাইরের পিডিবি’র লাইনগুলো দেখলেই বুঝবেন কি পরিমান নোংরা জোড়াতালি দেয়া থাকে। সবাই তো বাঙালি, ঘাটে/মাঠে/পথে/বাসায় সবখানে তো একই মানুষ থাকে ! যতক্ষন পর্যন্ত মানুষকে মানবিক বোধসম্পন্ন করা না যাবে ততক্ষন পর্যন্ত দেশের কোন গুণগত পরিবর্তন আসবে না, সে সকল সেক্টরেই। মানবিক মানুষ তৈরি হলে এমনিতেই আলো ছড়াবে সবখানে।
Related Posts

What are the main obstacles to Bangladesh’s development?
Bangladesh is a promising country in South Asia, with significant growth in economic progress, humanRead More

বাংলাদেশের উন্নয়নের পথে প্রধান সমস্যাগুলো কী কী?
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি সম্ভাবনাময় দেশ, যার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, মানব উন্নয়ন সূচকে অগ্রগতি এবং বৈশ্বিকRead More

What was the number of martyrs in the 1971 Liberation War?
The claim of 3 million martyrs is entirely unrealistic – there’s no logical basis toRead More
Comments are Closed