
Don't care the society !
যে সমাজ মানুষের নিরাপত্তা দিতে পারে না সে সমাজকে পাত্তা দেয়ার কিছু নেই
গতকাল আমাদের পাশের উপজেলায় এক মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। কারন কি ? তার প্রেমিক দাবীদার এক ছেলে তার মুখ অন্য কোন নগ্ন মেয়ের মুখে লাগিয়ে বা ঐ মেয়েটিরই কোন নগ্ন ছবি সোস্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছে।
এই মেয়েটি কেন নিজের আত্মহননকে সমাধানের পথ হিসাবে বেছে নিল ? এখানে কি ঐ ছেলেটিই শুধু দায়ী ? আত্মহত্যা সে যে কারনেই হোক সঠিক কোন কাজ নয়। আত্মহত্যা একপ্রকার পরাজয় বরন ও কাপুরুষতা। কিন্তু এই মেয়েটির মতো ছোট একটি মেয়ের জন্য এই নীতিকথা খাটে না। সে এতো কিছু এখনো বুঝে উঠতে পারেনি। সে শুধু ভেবেছে সমাজে মুখ দেখাবে কি করে, বাবা-মা, আত্মীয় স্বজনকে সমাজের মানুষের নানান কথা শুনতে হবে। এই আত্মগ্নানি থেকে সে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে।
সন্ত্রাসী ছেলেটি সোস্যাল মিডিয়ায় মেয়েটির নগ্ন ছবি ছড়িয়ে দিয়ে মারাত্মক অপরাধ করেছে। এদেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যদি দয়া করে তাকে ধরে বিচারের মুখোমুখি করে তবে ভাল কাজ হবে। তার প্রাপ্য সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। কিন্তু ঐ ছেলেটির চেয়ে আমার কাছে এই অসভ্য সমাজ ও তার রীতি বেশী দায়ী। অন্য একটি মানুষের নগ্ন ছবি ছড়িয়ে দেয়া তো দূরের কথা, কারো অনুমতি ছাড়া তার যে কোন ভদ্র ছবিও সোস্যাল মিডিয়া বা যে কোন মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়াটা যে অন্যায়, শাস্তিযোগ্য অপরাধ এটাই বা এদেশের কতজন শিক্ষিত, সচেতন নামধারী মানুষ জানে ?
আর কারো নগ্ন ছবি সোস্যাল মিডিয়ায় আসলেই কেনবা তাকে সমাজের হেনস্তার শিকার হতে হয় ? মানুষের শরীরের অংশ, সেটা কেমন দেখতে, তার আকৃতি কেমন, সেখানে কি কি থাকে – তা তো সবাই জানে, চেনে। মানুষের চেহারা দেখে কল্পনায়ও সেগুলো ধারন করে মানুষ। তাহলে কাগজে, ভিডিওতে বা স্ক্রীনে সেই ছবি দেখলে এমন কি ক্ষতি হয় সমাজের ? মেয়েটি তো স্বেচ্ছায় দেয়নি ছবিটি। যে অন্যায় করেছে তাকে শাস্তি না দিয়ে সমাজ মেয়েটির দিকে হেনস্থার তীর কেন ছুড়ে দিবে ? এই প্রযুক্তির যুগে কত কি-ই তো করা যায়। একজনের মুখ অন্য কারো শরীরে জোড়া লাগানো খুব সামান্য প্রযুক্তি এখন।
ছোট থেকেই ছেলে-মেয়েকে শেখাতে হবে কারো ছবি, গান, কবিতা, লেখা, সম্পদ তার অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বা ছড়িয়ে দেয়াটা অপরাধ ও অনৈতিক। কেউ যদি কারো নগ্ন ছবি ছেড়ে দেয় তখন টেনশন না করে প্রশ্ন করতে হবে – ‘সো হোয়াট ?’ দিয়েছে তো কি হয়েছে ? মানুষ দেখলে দেখুক। এটা এমন কিছু না যা জীবনের চেয়ে বেশী মূল্যবান। এরপর পদক্ষেপ নিতে হবে সাইট বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেনো তার অনুমতি ছাড়া অন্যের শেয়ার করা তার ছবিটি সরিয়ে নেয়। যথাযথ স্ক্রীনশট ও প্রমান নিয়ে এবার নামতে হবে অপরাধীর বিরুদ্ধে আইনী লড়াইয়ে। রাষ্ট্র, সমাজ, পরিবারকে থাকতে হবে ভিক্টিমের পাশে।
যে সমাজ অন্যায়কারীকে কিছু বলে না, যে সমাজ ঘুষখোর, দূর্নীতিবাজ একটু দান করলেই তাকে মাথায় তুলে নিয়ে নাচে, যে সমাজের ধারনা পুরুষেরা শ্রেষ্ঠ, যে সমাজ মনে করে মেয়েদের শরীরের অঙ্গ দেখা গেলে জাত যায়, যে সমাজে দূর্বত্ত রাজনীতিবিদের পিছনে শত মানুষের মিছিল থাকে সে সমাজকে ব্যক্তিজীবনে তেমন পাত্তা দেয়ার কোন দরকার নেই। সমাজ বাল ছিঁড়ে আঁটি বাঁধুক। গরমে অতিষ্ঠ হয়েও ফুল প্যান্ট পরে ঘুরতে হবে কেন ? আপনার হাফ প্যান্ট বা লুঙ্গিতে স্বস্তি লাগলে সেটা পরেই চলে যান মার্কেটে, অফিসে। সমাজের উদ্ভট রীতিগুলোকে পাত্তা দিবেন তো সমাজ আপনার ব্যক্তিজীবনে বাম হাত ঢুকিয়ে কি করবে সেটা না বললেও চলে।
করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে আমি একটা নরমান প্লাস্টিকের স্পঞ্জ পরেই চলাফেরা করি যেটা বাসার বাইরেই থাকে। এমনকি সরকারী অফিসে ওয়ান-টু ওয়ান এ্যাপয়েন্টমেন্টেও গেছি। গেছি তো ঘুষখোরদের সঙ্গে দেখা করতে। মোজা পরে, সু পরে নিজের অস্বস্তি নিয়ে কেতাদূরস্ত হয়ে তাদের এতো সম্মান দেয়ার কি আছে ? ধূর্বাল, সমাজ, মানুষ কি মনে করলো – আই ডোন্ট কেয়ার! আমার নিজের জন্য যেটা ভাল মনে হবে, আমি যেটাতে স্বস্তি পাবো সেটাই করবো – অন্যের কোন ক্ষতি না হলেই হলো।
তো যা বলছিলাম – নগ্ন ছবি আসছে সোস্যাল মিডিয়াতে – তো ? সো হোয়াট ? এটা নিজের জীবন দেয়ার মতো কোন বড় কিছু না। প্রভার মতো সাহসী ও ডোন্ট কেয়ার টাইপের হতে হবে। বরং অন্য একজন অপরাধ করেছে – তার শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
Related Posts

How much longer will the Muslim extremists in Bangladesh continue to oppress Hindus?
Ever since I became aware of the world around me in Bangladesh, I’ve witnessed violenceRead More

বাংলাদেশের মুসলিম উগ্রবাদীরা হিন্দুদের উপর আর কতো অত্যাচার চালাবে?
বুদ্ধি জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই দেখে আসছি, ইসলাম ধর্ম বিশেষ করে ইসলাম ধর্মের নবীকে অবমাননারRead More

The Uncertain Lives of Freethinkers in Bangladesh: Fundamentalist Persecution of Atheist and Secular Bloggers
Over the past decade, freedom of expression in Bangladesh has been severely restricted, especially forRead More
Comments are Closed