Coronavirus ! Stand for Humanity.
লোকালয়, সমাজ ও প্রতিবেশীর সুস্থতাই আজ আমার-আপনার সুস্থতার শর্ত
মহামারি সহানুভূতিকেও হত্যা করে। সমাজ চুপসে যায়। প্রতিবেশীর ঘরে আগুন লাগলে নিজেরটাও পুড়তে পারে। তেমনি লোকালয়, সমাজ ও প্রতিবেশীর সুস্থতাই আজ আমার-আপনার সুস্থতার শর্ত।
এ পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে যত মানুষ মারা গেছে তার চেয়ে অনেক বেশী মানুষ মারা যায় সাধারন সর্দি, কাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জায়। তাহলে করোনা নিয়ে সারা বিশ্বে মানুষ এত উদ্বিগ্ন কেন ? কারন চিকিৎসা ব্যবস্থার অপ্রতুলতা, ডাক্তার, নার্সের স্বল্পতা। আমাদের দেশে একটা প্লাস পয়েন্ট আছে, যেমন; ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কোন রোগী গেলে তাকে সাধারনত ফেরৎ দেয়া হয়না। বারান্দায়, করিডোরে, ফ্লোরে হলেও রাখা হয় যদিও করোনার ক্ষেত্রে সেটা সম্ভব না । কিন্তু বিদেশে ঠিক যতগুলো বেড ততোজন রোগী নেয়া হয়। করোনা ভাইরাসের রোগীদের আবার আলাদা করে রাখতে হয়। সুতরাং বিশ্বের কোন দেশেরই সক্ষমতা নেই মহামারি আকারে দেখা দিলে লক্ষ লক্ষ মানুষের একইসঙ্গে ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা করে চিকিৎসা দেয়ার।
শুনলাম ইতালিতে বৃদ্ধদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছেনা। কারন তাদের আইসিইউ তে দীর্ঘদিন রাখতে হয়। মারাও যায় বেশী। অন্য রোগী ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়না। বৃদ্ধরা দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখেনা এখন, বরং দেশের সোস্যাল ওয়েলফেয়ারে ভাগ বসায়। তার চেয়ে যুবকদের চিকিৎসা দিলে তারা দ্রুত সুস্থ হয়, অন্য একজনকে ভর্তি করানো যায়। যুবকদের সামনে পড়ে থাকে অবারিত ভবিষ্যৎ। তারা উৎপাদন করবে, ট্যাক্স দিবে। বিশ্বের অনেক দেশ হয়ত অমানবিক কিন্তু বাস্তবতা বিবেচনা করে এই নীতি গ্রহন করবে।
ভাবতে পারেন ? আপনার পরিবারের বয়োবৃদ্ধ মানুষটি যিনি আদর স্নেহে আপনাদের এতোদিন আগলে রেখেছেন তার চিকিৎসা ছাড়াই মৃত্যু হবে, আপনারা কাছে ঘেষতে পারবেন না। আজকের যে ইউরোপ, যে সমৃদ্ধ ইউরোপ আমরা দেখছি তার নির্মান করেছে আজকের এই বৃদ্ধরাই। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসস্তুপের পরে তারাই তাদের যৌবন বিলিয়ে দিয়েছেন আজকের সুখী প্রজন্মের জন্য। তাদের বিদায়বেলা এমন অমানবিক পরিস্থিতিতে যাচ্ছে ! খুবই কষ্টের বিষয়। চীন, কোরিয়া, ইরান সবখানেই বৃদ্ধরাই মৃত্যুর মুখে পড়ছেন বেশী। আজকের চীন, কোরিয়া, ইরান গড়ার পিছনে তাদের অবদান অনেক।
মনে হচ্ছে, করোনা ভাইরাস কোনো বয়োজ্যেষ্ঠকে ধরলে সহজে ছাড়বে না। তাই, বয়োজ্যেষ্ঠদের ক্ষেত্রে এর প্রতিরোধই একমাত্র উপায়। একটু সতর্ক রাখবেন পরিবারের বৃদ্ধদের। যতই বেশী বোঝে ভাব নিক, আপনাদের কঠোর নিয়ন্ত্রনে রাখবেন তাদের। আমাদের দেশের আজকের বৃদ্ধদের অনেক অবদান। তারা মুক্তি সংগ্রাম করে, যুদ্ধ করে এদেশ নিয়ে এসেছেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ তারাই গড়েছেন যৌবন বিলিয়ে দিয়ে। দয়াকরে হলিডে মনে করে ঘুরতে বের হবেন না, ছুটির দিনে একসঙ্গে সকালে বাজারে গিয়ে অযথা ভীড় করবেন না।
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী, উন্নত, আধুনিক চিকিৎসা-ব্যবস্থা সম্পন্ন, পরিচ্ছন্ন আর স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের দেশগুলো, যেখানে জনসংখ্যার চাপও সহনশীল, এমন দেশগুলোতেই করোনা ভাইরাস সংক্রমণের পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সেখানে সবাই সচেতন ও ত্যাগ স্বীকার না করলে বাংলাদেশের পরিস্থিতি কিন্তু কেউ নিয়ন্ত্রন করতে পারবে না।
Related Posts
 
								In the Shadow of Famine: Bengali Food Habits – History, Practice, and Bodily Burden
About 10-12 days ago.I went to a large wholesale store, where products are usually soldRead More
 
								দূর্ভিক্ষের ছায়ায় বাঙালির খাদ্যাভ্যাসঃ ইতিহাস, অভ্যাস ও শরীরের দায়
প্রায় ১০-১২ দিন আগের ঘটনা। একটি বড় বিপণিবিতানে গিয়েছিলাম, যেখানে সাধারণত বক্স ধরে পণ্য কিনতেRead More
 
								Are religion, country, race, patriotism, and nationalism all racist concepts?
The only uncontacted human tribe left in the world today are the Sentinelese of NorthRead More

Comments are Closed