BLOOD
blood donation and close relatives

Blood Donation and Close Relatives

কেউ তার পরিবারের সদস্য থেকে রক্ত নিলে কি সমস্যা হতে পারে?

ব্লাড ডোনেশন সম্পর্কে এটা বহুল জিজ্ঞাসিত ও অত্যন্ত গুরত্বপূর্ন একটা প্রশ্ন। ছোট করে উত্তর শুনতে হলে বলি, আপনজনের কাছ থেকে রক্ত নিলে “Transfusion-associated graft versus host disease” (TA-GvHD) ছড়ানোর সম্ভাবনা বেড়ে যায়। প্রক্রিয়াটি একটু জটিল কিন্তু এটাকে সহজভাবে ব্যাখ্যা করা যায় কিছুটা।

যখন আপনি কোন র‍্যান্ডম ডোনারের থেকে এক প্যাকেট রক্ত নেন, আসলে আপনি যা নেন তা হচ্ছে প্যাকেট ভর্তি লোহিত রক্ত কনিকা । প্লাজমা, শ্বেত রক্তকনিকা , অনুচক্রিকা সরিয়ে ফেলা হয় যতটা পারা যায়। একেবারে নিখুত করা যায় না, কিছু পরিমান লোহিত রক্তকনিকা আর প্লাটিলেট প্যাকেটে থেকেই যায়। এগুলো রক্ত গ্রহীতার জন্য ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায় এবং মাঝে মাঝে জীবন বিপন্ন করে ফেলে। এই ঝুঁকিগুলোর একটা অংশ আসে ডোনারের শ্বেত রক্তকনিকা থেকে। নির্দিষ্ট করে বললে T-cells থেকে।

T-cell হচ্ছে আমাদের প্রতিরক্ষা সিস্টেমের বস। T-লিম্ফোসাইট এর অপর নাম। এইটা লাস্ট লাইন ডিফেন্স সিস্টেম কিন্তু সবচাইতে শক্তিশালী লাইক ম্যানুয়েল নয়ার। এরা বোঝে কোন কোষটা আমাদের দেহের কোনটা বাইরের। যখন আমাদের দেহে বাইরে থেকে রক্ত আসে, ডোনারের দেয়া রক্তে থাকা T-cell গুলো রোগীর দেহে এসে তার দেহের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করবে কারণ সেটা তো তার চেনা না।

এখন দেখেন, আপনার অজান্তেই একটা এটাক্যার ঢুকে গেছে। ডিফেন্ডার হিসেবে আপনি যদি তাকে না আটকান তবে কি হবে? ফাকতালে গোল দিয়ে আসবে। ঠিক এভাবেই যখন ডোনারের রক্ত থেকে আসা T-cell গুলোকে না আটকে ছেড়ে দেয়া হয়, তারা সংখ্যা বৃদ্ধি করে আপনার বডির T-cell গুলোকে ধ্বংস করে দেবে। এটাকে “Graft versus host effect” এখানে graft হচ্ছে ডোনারের দেয়া ব্লাড আর host হচ্ছে পেশেন্ট। যখন রক্ত সঞ্চালনের সময় এটা হয় তখন এটাকে আর এই নামে না ডেকে “Transfusion-associated graft versus host disease” (TA-GvHD) নামে ডাকা হয়।

blood donation and close relatives

এর ফলে যেটা হতে পারে, আমাদের বডি ডিফেন্সে ভয়াবহ ক্ষতি হতে পারে। বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে যেমন কেমোথেরেপি বা অন্য কোন চিকিৎসা বা রোগ থাকলে রক্ত নেয়া ভেজাল হবে কারণ তখন ডিফেন্স এমনিতেই দুর্বল থাকে আর ডোনারের রক্তের টি সেল এই সুযোগটা কাজে লাগায়। একবার ডোনারের টি লিম্ফোসাইড জিতে গেলে খেল খতম। TA-GvHD তে ভুগতে হবে। কোন সেকেন্ড লেগ মানে রিকভারের অপশন নেই।

এখন দেখেন, যিনি রক্ত নিবেন, তারও দেহে তো T-cell আছে। এবং তার দেহে T-cell এর সংখ্যা ডোনারের রক্তের সাথে আসা T-cell এর থেকে অনেক অনেক বেশি। সে তো আর এট্যাকারকে ফেলে রাখবে না! (ম্যাগুয়ের টাইপ ডিফেন্ডার না হইলে! 🙂 ) সে কি করবে? এট্যাকারকে তার ডিফেন্স দিয়ে ধরে অকার্যকর করে ফেলবে।

একটা সাধারণ প্রশ্ন, মাঠে ২২ টা প্লেয়ার থাকে, ২ ভাগে ভাগ করে কি দিয়ে? জার্সি দিয়ে? এখন মনে করেন আপনার এট্যাকার আপনার হাফে আপনার জার্সি নিয়ে ঘুরছে। আপনি কি তাকে এট্যাকার ভাববেন? অবশ্যই না!

এটা হবে যখন আমরা ফার্স্ট ডিগ্রি রিলেটিভের কাছ থেকে রক্ত নিব! তাদের রক্তের আর আমাদের রক্তের গঠন তো প্রায় একই। ফলে আপনার ডিফেন্ডার মানে আপনার দেহের T-cell বিপরীত পক্ষের এট্যাকার অর্থাৎ ডোনারের T-cell কে চিনতে পারবে না। চিনতে না পারলে আটকানোর প্রশ্ন আসে? বিষয়টা এমন হবে আপনার দলের জার্সি পরে বিপক্ষ দলের এট্যাকার আপনার হাফে আর আপনার ডিফেন্ডার কিছু করার আগেই বিপক্ষ দলের গোল! অর্থাৎ (TA-GvHD) হয়ে যাবে!

তো কথা হচ্ছে আমরা কি এটা আটকাতে পারিনা? অবশ্যই পারব! কেন না? দেখেন ঘটনার মূল কোথায়? আপনার হাফে এট্যাকার না আসলে গোল হবে? তাই আমরা যে প্যাকেট থেকে রক্ত নিচ্ছি তা 25 Gy Gamma radiation দিয়ে দিলে আর ঝুকি থাকছে না।

এখন অনেকে বলবেন, আমরা তো পরিচিত জনের মধ্যে রক্ত দেই, সমস্যা হয় না। কেন হয় না? দেখেন, সবসময় তো এমন না যে আপনার ডিফেন্স ডোনারের টি সেল কে চিনতে পারবে না! চিনবে কিন্তু কিছু কিছু সময় মিস হওয়ার চান্স থাকে। আর ক্যান্সার বা এইডস বা দেহের প্রতিরক্ষা সিস্টেম দূর্বল থাকলে তো নিজেদের মধ্যে রক্ত দেয়ার প্রয়োজোন নেই। র‍্যান্ডম ডোনারের থেকে নেয়াই বেটার। তবে অবশ্যই ক্রসচেক করে নিতে হবে।

এখন আরো একটা প্রশ্ন চলে আসতে পারে। একজন মানুষের শরীরের রক্ত যখন অন্য আরেক জনের শরীরে দেওয়া হয় হয় তখন তো অন্য জনের DNA আরেকজনের শরীরে চলে আসে। তখন যদি সেই ব্যাক্তির রক্তে থাকা DNA পরীক্ষা করা হয় তখন কি আলাদা ফল আসবে বা এটার জন্য ফলাফলে কোনো সমস্যা হবে কি ? উত্তর হলো, হ্যা, রক্ত নিলে অন্য কারো DNA চলে আসে। লোহিত কনিকায় ডিএনএ না থাকলেও শ্বেতকণিকা ও অণুচক্রিকায় DNA থাকে যা রিসিভার এর দেহে চলে আসে। কিন্তু এই DNA এর পরিমাণ খুবই কম, মিলিয়নে একটা ফরেইন DNA, তাই টেস্ট করে আলাদা করা সম্ভব নয়। আর যেহেতু WBC ও অণুচক্রিকার আয়ু অনেক কম, তাই অল্প সময়েই সেগুলো ধ্বংস হয়ে যায়, সেইসাথে চলে যায় অন্য কারো DNA ও।

Related Posts

Sunlight and Human Body

Sunlight: A Natural Medicine, Cultural Wisdom, and the Key to Healthy Longevity

For thousands of years, many civilizations have worshipped the sun as a deity – notRead More

Sunlight and Vitamin-D

সূর্যের আলো: প্রাকৃতিক ঔষধ, সাংস্কৃতিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকর দীর্ঘায়ুর চাবিকাঠি

হাজার হাজার বছর ধরে অনেক সভ্যতা সূর্যকে দেবতা মানে; শুধু বৈদিক, পৌরাণিক, এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য,Read More

Evolutionary Biology and Women

Protecting women is a man’s responsibility – this is a lesson rooted in evolutionary psychology

A common tendency across all societies is to take extra care of women. This isRead More

Comments are Closed