Is Rape Statistics Right ?
আমেরিকা/ইউরোপ/কানাডা এসব দেশে কেন ধর্ষণ বেশী আর সৌদি আরব/ভারত/বাংলাদেশ এসব দেশে কম ?
ইউরোপ, আমেরিকায় শত শত ম্যারিটাল রেপের অভিযোগ লিপিবদ্ধ হয়। সৌদি আরব ম্যারিটাল রেপ স্বীকারই করে না। ইউরোপে কেউ কারো শরীরে অনধিকার স্পর্শ করলেও সেটা যৌন হয়রানি হিসাবে লিপিবদ্ধ হয়। বাংলাদেশ, ভারতে কয়টা যৌন হয়রানি বা ধর্ষণ লিপিবদ্ধ হয় ? সৌদিতে তো ধর্ষনের প্রতিকার চাইতেই কেউ যায় না, কারন সেখানে অনেক রেকর্ড আছে যেখানে উল্টো ধর্ষিতাকেই শাস্তি পেতে হয়েছে – এমনকি মৃত্যুদন্ডও। ডাক্তারি পরীক্ষাও অনেক দেশে গ্রহনযোগ্য নয়, ৪ জন পুরুষ সাক্ষী হাজির করতে হয় যা অসম্ভব। এই অসম্ভব কে সম্ভব করতে গিয়ে কোন মেয়ে নিজের মাথা হারাবে ?
প্রথমে আসি ভারত প্রসঙ্গে। মজার কথা হচ্ছে প্রতি হাজারে ধর্ষণের পরিসংখ্যানে (২০১০) ভারত হচ্ছে ধর্ষণের হারে ন্যূনতম ১০ টি দেশের মধ্যে দশম, ধর্ষণের হার মাত্র ১.৮%। এটা শুনে নিশ্চয়ই আপনার হাসি পাচ্ছে, আমারও তাই। আমাদের এই হাসাহাসি প্রমাণ করে ধর্ষণ পরিস্থিতি বিবেচনায় পরিসংখ্যান এর গুরুত্ব অপরিসীম ভাবে গুরুত্বহীন কারণ আমরা সকলেই জানি ভারতে ধর্ষণের চিত্রটা শোচনীয়, তবে সুখের কথা এই যে, তারা এজন্য পোষাক দে দায়ী করে না, বিচারহীনতা এবং ধর্ষকের কুরুচি কে দায়ী করে এবং বিচারের দাবীতে লক্ষ লক্ষ ভারতীয় রাস্তায় নেমে আন্দোলন করে, পুলিশ-প্রশাসন কে বিচারের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে প্রবল চাপ প্রদান করে। এখন প্রশ্ন জাগতে পারে হার টা পরিসংখ্যানে এত কম কেন? এই আলোচনায় আবার ফিরব তার আগে সৌদি-ইউ এস তুলনাটা নিয়ে দুটো কথা বলে নেই।
লক্ষ লক্ষ নারী শ্রমিক সৌদি থেকে ফিরে নিজ নিজ দেশে যেয়ে জানিয়েছেন তাদের বীভৎস সব অভিজ্ঞতার কথা। প্রতিদিন তারা ধর্ষিত হয়েছেন গৃহকর্তার কাছে, বারংবার, বাবা-ছেলে একসাথে ধর্ষণ করেছে, বন্ধুরা মিলে ধর্ষণ করেছে, শারিরীক মানসিক নির্যাতন করেছে, এসবে সেইসব পরিবারের মেয়ারাও কোন বাঁধা দেয় নি। বাংলাদেশের সৌদি ফেরত সহস্র নারী তাদের আহাজারি তুলে ধরেছে গণমাধ্যমে, সকল মেইনস্ট্রিম মিডিয়ায় আমরা এসব খবর দেখেছি। যারা ফিরে আসতে পেরেছে তারা জানিয়েছে যারা ফিরে আসতে পারে নি তারা আছে জলজ্যান্ত নরকে। তারা বাঁচতে চায়, কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ চায়। তারপরেও দেখা যাচ্ছে পরিসংখ্যান বলছে সৌদিতে ধর্ষণ নাই। কারন সেগুলো ধর্ষণ হিসাবে রেকর্ড হয়নি। সৌদির অনেক গৃহকর্তা মনে করে দাসীদের সঙ্গে সেক্স করা তাদের অধিকার, কারন তাদের তারা কিনে নেয়। পরিসংখ্যান আরও বলছে বাংলাদেশেও কোন ধর্ষণ নাই। মু হা হা হা হা। হাসার জন্য একটু বিরতি নেন। অন্যদিকে আমরা সবাই জানি পশ্চিমা বিশ্ব অনেক উন্নত এবং নিরাপদ অথচ তাদের পরিসংখ্যান দেখলে মনে হয় তারা ধর্ষণ ছাড়া আর কিছুই করে না।
এখন ফিরে আসি পরিসংখ্যানের এই টালমাতাল অবস্থা কেন সেই প্রসঙ্গে। উত্তরটা সক্ষমতায়, রাষ্ট্র ব্যবস্থায় এবং নারী স্বাধীনতায়। আমেরিকার পরিসংখ্যানে আস্থা রাখা যায় কারণ আমেরিকার নারী স্বাধীন, সক্ষম, আমেরিকার রাষ্ট্র ব্যবস্থা বিচার গ্রহণ এবং সুবিচার প্রদানে পরাঙ্গম, আমেরিকায় তাই একজন যৌনকর্মীর সাথেও কেউ জোর খাটালে তার রেকর্ড থাকে, যৌনকর্মীও বিচার পায়, একজন স্ত্রীও স্বামীর বিরুদ্ধে জোরপূর্বক যৌন সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগ নিয়ে আদালতে যেতে এবং বিচার পেতে পারে। আমেরিকার পরিসংখ্যান তাই বাস্তবতা ফুটিয়ে তোলে, এর উপর কাজ করে, ধর্ষণ কমাতে কার্যকরী উদ্যোগ নেবার ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে পারে।
অন্যদিকে সৌদি আরবে একজন মৃত্যুশয্যায় শায়িত নারীও একা হাসপাতালেও যেতে পারবে না স্বামী বা পরিবারের কর্তার অনুমতি ছাড়া, পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে শাস্তির মুখোমুখি করবে তা তার অবস্থা যতই খারাপ হোক না কেন , তার প্রসব বেদনা উঠুক বা গলা কেটে চৌচির হয়ে যাক, কিচ্ছু আসে যায় না। তাই ধর্ষিত হোক আর যাই হোক বিচার দেবার ই সুযোগ নাই, পরিসংখ্যান আসবে কোথা থেকে! তারপরেও কোনমতে বিচার পৌঁছাতে পারলে ধর্ষণ প্রমাণের জন্য আইন অনুযায়ী লাগবে চারজন পুরুষ সাক্ষীর সাক্ষ্য, কোথায় পাবে একজন ধর্ষিতা চারজন সাক্ষী? যদি পেয়েও যায় তাহলেও সাক্ষীদের মহা সমস্যা, তারা দেখেও কেন প্রতিবাদ করল না আর তারা দৃষ্টি সংযত না রেখে দেখল কেন এই অভিযোগে তারাও অভিযুক্ত হবে বা হতে পারে। তো কে দেবে সাক্ষী মার খাবার জন্য? যেহেতু সাক্ষী নাই সেহেতু অপরাধের তীর এবার ধর্ষিতার ঘাড়েই, তারপর দোররা, পাথর বর্ষণ ইত্যাদি। আর পরিসংখ্যান বলে বেড়াবে সৌদি ধর্ষণ মুক্ত অথচ কেবল ইউটিউব ঘাটলেই সৌদিতে যৌন নিপীড়নের অজস্র ভিডিও পাবেন।
বাংলাদেশ, ভারতের একই রকম চিত্র। পুলিশ মামলা নেয় না, মামলা নিলেও বিচার হয় না। নোয়াখালির ঘটনা প্রমান করে ধর্ষিতা মামলা করার সাহস পায়নি। ভিডিও ভাইরাল না হলে এটা গোনায় আসতো না। আপনার কি মনে হয় যে ধর্ষনের চিত্র আমরা দেখি বাস্তবতা এমন ? আর ধর্ষিতা মানেই এই অঞ্চলে অপরাধী, বেশ্যা, মাগী তাই বিচার নিতে কেউ যেতেও চায় না, মুখ খুলতে চায় না। ফলে পরিসংখ্যান দেখায় বাংলাদেশে ধর্ষণ শূন্য, ভারতে কতিপয়। Rape in the United States is defined by the Department of Justice as “Penetration, no matter how slight, of the vagina or anus with any body part or object, or oral penetration by a sex organ of another person, without the consent of the victim. এই সংজ্ঞা অনুসারে যদি বাংলাদেশ বা ভারত বা সৌদির পরিসংখ্যান দাড় করানো যেত তাহলে সেটা সদর্পে লেটার মার্কস পেয়ে যেত কোন সন্দেহ নাই।
Related Posts
এই ধর্মীয় উন্মাদনা এখনি থামাতে হবে, সভ্যতার পথে হাঁটুন
বাংলাদেশের সমাজটা অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে বিগত ২০/৩০ বছরে। এই পরিবর্তনের সবচেয়ে জঘন্য অনুঘটক ছিলRead More
Under the cover of development, the real image of India, Pakistan, and Bangladesh
India has sent a spacecraft to the moon and successfully landed there. There is noRead More
উন্নয়নের আড়ালে ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশের প্রকৃত করুন চিত্র
ভারত চাঁদে নভোযান পাঠিয়েছে এবং সেটা সেখানে সফল অবতরণও করেছে। ভারতের এতে গর্বের সীমা নেই,Read More
Comments are Closed