Rapeland!
Are women responsible for rapping

নিকট অতীতে রেপিস্ট হিসাবে কোন চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো, সাঁওতাল, হাজং, ব্যোম, খুমি এদের নাম শুনেছেন ? আমি তো মনে করতে পারি না। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মেয়েরা বাঙালিদের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হলেও তাদের কোন পুরুষ ধর্ষণ করে, এমনটা চোখে পড়ে না। অথচ তাদের মেয়েরা, বিশেষ করে একেবারে গহীনে, গায়ে তেমন পোশাক পরে না বললেই চলে। সমানতালে মেয়ে-ছেলে সবাই ক্ষেতে কাজ করে। প্রতিদিন অজস্র মেয়ের স্তন, শরীরের বেশীরভাগ অংশ দেখেও তাদের মনে ধর্ষণের ইচ্ছা জাগে না। এমন না যে সেখানে আইনের খুব কড়াকড়ি প্রয়োগ হয়।

আফ্রিকায় অনেক উপজাতি আছে যাদের মেয়েরা সম্পূর্ণ নগ্ন থাকে। একই সময়ে তারা পুরুষদের সঙ্গে কাজ থেকে শুরু করে আনন্দ উৎসব সবই করে। কেউ কিন্তু ধর্ষিত হয় না।

আমাদের দেশের মানুষ শাস্তি হিসাবে মৃত্যুদন্ড চেয়ে মনে করে অনেক কিছু হয়ে গেছে। মাদক, ধর্ষণ কতকিছুর জন্য তো মৃত্যুদন্ড আছে। মাদক কমেছে ? এত ক্রসফায়ারেও কমেছে ? সমাজে অপরাধের শত শত উপাদান বজায় রেখে শুধু শাস্তির পরিমান বাড়ালে অপরাধ কমে না। এই যে নোয়াখালির ভদ্রমহিলা, যাকে নিয়ে সবাই এখন প্রতিবাদী, তিনি কিন্তু এতদিন ধর্ষকদের বিরুদ্ধে মামলা করতে বা চিহ্নিত করতে সাহস পাননি। এই যে অবস্থা এতে শত শত অপরাধ চাপা পড়ে যায়। এটা অনেক বড় সংকট একটা দেশ ও সমাজের জন্য।

এদেশে অপরাধী অপরাধ করে পার পেয়ে যায়। এদেশে ধর্ষিতার পোশাক, তার চলাফেরা কে দোষ দিয়ে ধর্ষকের পক্ষ নেয়ার অনেক মানুষ আছে। সবাই সমাধান খোঁজে মধ্যপ্রাচ্যের উদাহরন দিয়ে যেখানে ধর্ষিতারা ধর্ষণের অভিযোগ করারই সাহস পায়না। এমন অনেক উদাহরন আছে যেখানে উল্টো ধর্ষিতাকেই শাস্তি পেতে হয়েছে। বাংলাদেশের শত শত নারী গৃহকর্মী ধর্ষণের শিকার হয়ে, পেটে বাচ্চা নিয়ে প্রতিনিয়ত ফিরে আসে, একটারও বিচার হয় সেখানে ?

যে সমাজে নারীকে দেখা হয় ছলনাময়ী, নারীকে বলা হয় শয়তানের প্রতিভূ, যে সমাজের মানুষ নারীকে কুলক্ষনা, অলক্ষী, অপয়া, পতিতা বলে গালি দেয় সেখানে পুরুষরা তো ধর্ষকামী হবেই। সমাজের বেশীরভাগ মানুষ তো নারীকে মানুষ হিসাবেই দেখে না। যেদিন মানুষ এই বোধ নিয়ে সমাজে বাস করবে যে – একটা মেয়ে ড্রাংক অবস্থায় মাঝরাতে একা নগ্ন হয়ে রাস্তা দিয়ে হাঁটলেও তার গায়ে স্পর্শ করার অধিকার কারো নেই – সেদিন ধর্ষণ একেবারে কমে যাবে।

ধর্ষণ হলেই একটি মেয়ের জীবন শেষ! মোবাইলে উলঙ্গ নারীর ভিডিও ধারণ করে প্রচার করলেই তার জীবন শেষ! কত মেয়ে এই ব্লাকমেইলে পড়ে আত্মহত্যা করল। সমাজের উচিত অভিনেত্রী প্রভার কাছ থেকে শেখা। সে মরেওনি লজ্জ্বিতও হয়নি। মিথিলার ভিডিও প্রকাশ করা পুরুষ ভেবেছিলো মিথিলাকে জব্দ করা হবে। মিথিলা থোড়াই কেয়ার করেছে। উল্টো জব্দ হয়েছে সেই পুরুষই। পুরুষতন্ত্রের শেখানো সতীত্ব আর আব্রুর ফানুস ভেঙ্গেই কেবল ধর্ষণকে ভোঁতা করা সম্ভব। নারীকে জব্দ করার অস্ত্রগুলো নারীদের মগজে এমনভাবে সেট করে দেয়া হয়েছে যে সে আত্মসন্মান যাবার অনুশোচনায় নিজের জীবনকে শেষ করে দিতে চায়। অথচ ধর্ষণ একটি অপরাধ আর এর জন্য অপরাধীই হবে লজ্জ্বিত। সমাজের চোখে হবে ঘৃণিত। অথচ নারীকে মুখ ঢেকে থাকতে হয়।

Related Posts

DUCSU election 2025

Was this unexpected victory of Shibir in the DUCSU election actually expected?

At Dhaka University, Shibir is winning simply by securing votes – that’s the reality. AcrossRead More

DUCSU Election 2025 and Shibir

ডাকসু নির্বাচনে শিবিরের এই অপ্রত্যাশিত বিজয় কি প্রত্যাশিতই ছিল?

ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে শিবির ভোট পেয়েই জিতছে, এটাই বাস্তবতা। বাংলাদেশের সবক্ষেত্রে ম্যানেজমেন্ট কিছু না কিছু ভুলRead More

Muslims in Israel

Israel’s Minority Religious Communities: Hatred, Reality, and Rights

When people hear the name Israel, the first reaction many have is – hatred. ThisRead More

Comments are Closed