No Human Child is Illegal
যে সমাজ একটি সত্যজাত শিশুকে নাম দিয়েছে ‘জারজ’ সেই সমাজই বরং ‘জারজ’
প্রত্যেক বাবা-মা’র উচিৎ তাদের সন্তানদের এই শিক্ষা দেয়া যে অনেক ব্যাপারে সমাজকে থোড়াই কেয়ার করবে তারা, বরং তাদের জীবনব্যাপী যে কোন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে তারা সঠিক অবস্থান না নিতে পারলে তাদের বাবা-মা’র সাহায্য তারা নিতে পারবে। বাবা-মা কে শাসক না নয়ে এই নির্ভরতার জায়গাটুকু অর্জন করতে হবে।
ধরুন, একটি মেয়ে অপ্রাপ্ত বয়সে তার কোন অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে বন্ধুর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে বসলো। এখন সেটা সমাজে জানাজানি হয়ে গেল। বিশেষ করে মেয়েটিকে সমাজ সারাজীবন ধরে কালেক্টিভ শেইমিং এ রাখবে। ডোন্ট কেয়ার মেয়ে, যে সমাজ অপ্রাপ্ত বয়সে যৌন সম্পর্ক করার কুফল শিক্ষা দিতে পারেনি সেই সমাজকে গোনায় ধরার দরকার নেই। বরং সবচেয়ে ভাল বন্ধু হবে বাবা-মা যদি সেই বাবা মা’ও তথাকথিত সমাজকে বুড়া আঙুল দেখাতে সমর্থ্য হন।
যে কোন বয়সে যৌন সম্পর্ক হলে সেক্ষেত্রে যদি মেয়েটি কোন কারনে শারিরীক দূর্ঘটনায় পড়ে, যেমন যদি ভয়াবহ রক্তপাত হয় তবে সে যেনো বাবা-মা অথবা রাষ্ট্রের চিকিৎসা সেবার সর্বোচ্চ সুবিধা পায় সেটা নিশ্চিত করা ও সেই নির্ভরতা পাওয়ার পরিবেশ থাকা বাঞ্চনীয়। যে সমাজ মৃত্যুমুখে পতিত হতে যাওয়া একটি মেয়ের চিকিৎসার চেয়ে তার দোষ খোঁজায় ব্যস্ত থাকবে, তার বাবা-মা’র দোষ খুঁজবে, সেই সমাজকে লাথি দিয়ে বেরিয়ে এসে চিকিৎসার দারস্ত হতে হবে। সেক্ষেত্রে বাবা-মা কে হতে হবে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সাহায্যকারী।
কোন কারনে বিবাহ বহির্ভূত যৌন সম্পর্কের ফলে সন্তান গর্ভে আসলে অনেক সময় দেখা যায় সোস্যাল শেইমিং এর ভয়ে মেয়েটি আত্মহত্যা করে, না হলে শিশুটিকে গর্ভপাত করে ফেলে দেয়, জন্মের পরেও হত্যা করে শিশুকে, অনেক সময় রাস্তায় ফেলে আসে শিশুটি। যে সমাজ একটি সত্যজাত শিশুকে নাম দিয়েছে ‘জারজ’ সেই সমাজই বরং ‘জারজ।’ সেই সমাজকে কাচকলা দেখানো শিখতে হবে। একজন একাকী মা’কে সাহায্য করার মূরোদ যেই সমাজের নেই সেই সমাজকে পাত্তা দেয়ার কিছু নেই। প্রতিটি মানব শিশুই বৈধ, মা/বাবা দায়িত্ব না নিতে পারলে সেই শিশুর দায়িত্ব নিবে রাষ্ট্র, বিশ্ব। কোন শিশুকে ‘জারজ’, ‘অবৈধ’ বলা সমাজকে লাথি দেওয়া শিখতে হবে।
দরকার প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সঠিক ও নিরাপদ যৌন শিক্ষা। তাহলে প্রতিটি শিশু অনিরাপদ বা অপ্রাপ্ত বয়সের যৌনতার কুফল সম্পর্কে জানবে। তারা জানবে কি কি ধরনের সমস্যা হতে পারে, কিভাবে তার প্রতিকার পাওয়া যায়, কিভাবে ও কোথায় তার চিকিৎসা পাওয়া যায়। ধর্ষণের মতো বড় অপরাধ করার আগে মানুষ ১০ বার ভাববে। কারন শুধু শাস্তির পরিমান নয়, ধর্ষণের ফলে মানুষের জীবনভর যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে এই মানবিক চিন্তার বোধ তাদের জাগাতে হবে।
যে সমাজ মানুষের প্রয়োজনে, মানবিকতার প্রয়োজনে পরিবর্তিত হতে পারে না, তাকে পাত্তা না দিলে একদিন সে ঠিকই পরিবর্তনের পথে হাঁটবে।
Related Posts
 
								In the Shadow of Famine: Bengali Food Habits – History, Practice, and Bodily Burden
About 10-12 days ago.I went to a large wholesale store, where products are usually soldRead More
 
								দূর্ভিক্ষের ছায়ায় বাঙালির খাদ্যাভ্যাসঃ ইতিহাস, অভ্যাস ও শরীরের দায়
প্রায় ১০-১২ দিন আগের ঘটনা। একটি বড় বিপণিবিতানে গিয়েছিলাম, যেখানে সাধারণত বক্স ধরে পণ্য কিনতেRead More
 
								Are religion, country, race, patriotism, and nationalism all racist concepts?
The only uncontacted human tribe left in the world today are the Sentinelese of NorthRead More

Comments are Closed