
ICT Freelancing, a New Profession
যে সফলতা গর্বিত করে! দেশের মর্যাদাবান এক পেশার গল্প
কিছুদিন আগেও যে ছেলেটি বা মেয়েটি অনলাইনে কাজের জন্য শিখতে চেয়ে একে বলছে একবার, ওকে বলছে আরেকবার। ঠিক সেই ছেলে বা মেয়েটি কয়েকমাস পরে এসে এক একজন এন্টারপ্রেনার হয়ে যাচ্ছে। এই দলে হাইস্কুলে পড়া থেকে কলেজে পড়া অসংখ্য ছেলেমেয়ে আছে। দীর্ঘ অনেক বছর কষ্ট করে পড়াশুনা করে ইউনিভার্সিটি থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রীধারী মানুষটি যখন চাকুরির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছে বা সীমিত বেতনে চাকুরী করে মনিবের ফাই ফরমায়েশ খাটছে তাদের চেয়ে এই ছেলেমেয়েগুলো নিঃসন্দেহে এগিয়ে। যে ছেলেটি একটি সরকারী চাকুরীর আশায় হাজার হাজার ফালতু সাধারন জ্ঞানের বই পড়ছে বা মামা খালু খুঁজে বেড়াচ্ছে বা বাপের ভিটেমাটি বিক্রি করে ঘুষের টাকা জোগাড় করছে তাদেরকে বিদ্রুপের হাসি উপহার দিয়ে এই ছোট টগবগে তরুনরা কুল সাইন দেখাচ্ছে।
এই যে প্রজন্ম যে সুযোগ পেয়েছে এখন এই সুযোগ যারা কাজে লাগাতে পারে না তারা নিতান্তই অভাগা। আমাদের মত গরীব দেশের মানুষের অর্থনৈতিক পূঁজি সীমিত। এই সীমিত পূঁজিতে আবার ভাগ বসাতে ব্যস্ত ভয়াল কিছু শকুন যারা হাইস্কুল কলেজ থেকেই রাজনীতি নামক এক পরজীবী পেশায় যোগ দেয় বা উপরতলার চেয়ারে বসা কিছু কুশিক্ষিত পেশাজীবী চাকর। এই ভয়ার্ত চোখের শকুনের দৃষ্টিকে অগ্রাহ্য করে যে প্রজন্ম এগিয়ে চলেছে তাদের একমাত্র সম্পদ ও পূঁজি তাদের মেধা ও অদম্য ইচ্ছাশক্তি।
এক গ্রুপ যখন জীবন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ দেখে হতাশ হয়, অন্য এক গ্রুপ যখন কলেজ বা ইউনিভার্সিটি ক্যান্টিনে ফাও খাওয়ার ধান্দায় থাকে বা পাশের দোকানে চাঁদাবাজি করতে যায় তখন এই সোনার ছেলেমেয়েগুলো নামী রেস্তোরায় খাবারের বিল কে উপেক্ষা করেই ইচ্ছামত খারাব অর্ডার করতে পারে। এটা তাদের অর্জন। বিল নিয়ে তাদের চিন্তা করতে হয় না।
এক গ্রুপ যখন পাড়ার মেয়েদের সঙ্গে ইভটিজিং এ ব্যস্ত, অন্য গ্রুপ যখন লাইসেন্স বিহীন চোরাই মোটরসাইকেলে মেয়েদের কলেজের সামনে মহড়া নিয়ে ব্যস্ত তখন এই সুযোগ্য ছেলেমেয়ে গুলো প্ল্যান করে দেশ ঘুরে দেখার, দেশের সীমা পেরিয়ে বিদেশ ভ্রমনের। কারন তাদের বাবা মায়ের উপর নির্ভর করতে হয় না। তারা নিজেরাই এ সমস্ত খরচ যোগাড় করতে পারে।
কেউ সাধের গরীবি সাজ দিয়ে অন্যের কৃপার অপেক্ষায় থাকে। তাদের বলি এখন পুরানো অনেক ল্যাপটপ পাওয়া যায় দশ হাজার টাকার মধ্যে। ক্ষুদ্র ঋন ও সহজলভ্য। ইন্টারনেটও আছে সবখানে। গরীবি সাজ কোন সমস্যা না। সমস্যা হল ইচ্ছা শক্তির অভাব। শেখাবে কে? ইন্টারনেটে পাওয়া যায় না এমন কোন শিক্ষার বস্তু বর্তমান দুনিয়ায় নেই। ইংরেজী? হ্যাঁ ইংরেজী শেখাটা জরুরী কিন্তু বাংলাতেই এখন সমস্ত শিক্ষার বিষয়গুলো পাওয়া যায়। অনেকে স্বেচ্ছাসেবার মনোভাব নিয়ে গাইডলাইনও দিবে। তবে একটা কথা মুখে তুলে কেউ খাইয়ে দিবে না, নিজের হাতেই সেটা খাইতে হবে।
দেশে অনেক পেশা আছে। প্রায় সব পেশায় মানুষকে ঠকানোর, কাঁদানোর নানাবিধ বন্দোবস্ত থাকে। কি মহান পেশা ডাক্তারি, কি জ্ঞানের পেশা প্রকৌশলী সবখানেই এখন মানুষকে কাঁদিয়ে, কষ্ট দিয়ে রক্ত চোষন এক ওপেন সিক্রেট বিষয়। রাজনৈতিক পেশাজীবী বা ঘুষখোর আমলাদের যন্ত্রনা তো ভোগ করছে পুরো দেশ। তখন দেশের একমাত্র ও নতুন পেশা হল আই টি ফ্রিল্যান্সিং যাতে মানুষকে কাঁদানোর তেমন সুযোগ নেই বা লাগে না। আবার এ কথাও সত্য আই টি ফ্রিল্যান্সার বলে কেউ দাবী করলেই তার এই পদবী ব্যবহার করার সুযোগ নেই। মেধা, যোগ্যতা, সততা, নিষ্ঠা দিয়েই সেটা অর্জন করতে হয়।
সব বাধা পেরিয়ে দেশের এই তরুন স্বপ্নবাজরা যে পাখা মেলেছে আকাশে, তাদের সে যাত্রা অনন্ত মহাকাশ পেরিয়ে যাবে একদিন সন্দেহ নেই।
Related Posts

Sunlight: A Natural Medicine, Cultural Wisdom, and the Key to Healthy Longevity
For thousands of years, many civilizations have worshipped the sun as a deity – notRead More

সূর্যের আলো: প্রাকৃতিক ঔষধ, সাংস্কৃতিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকর দীর্ঘায়ুর চাবিকাঠি
হাজার হাজার বছর ধরে অনেক সভ্যতা সূর্যকে দেবতা মানে; শুধু বৈদিক, পৌরাণিক, এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য,Read More

Protecting women is a man’s responsibility – this is a lesson rooted in evolutionary psychology
A common tendency across all societies is to take extra care of women. This isRead More
Comments are Closed