
Galen and Hippocrates
যারা বলছে সংক্রামক রোগ বলে কিছু নেই – তাদেরকে পাত্তা দিবেন না
বই-পুস্তকের মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন করেই শিখেছে। মানে তখনকার বিজ্ঞানীরা এগুলো বুঝেছিলেন, বই আকারে লিখেও গেছিলেন। আর এখন এই একবিংশ শতাব্দীতে মানুষ যখন আর কিছুদিন পরে মঙ্গল গ্রহে বসতি স্থাপন করবে তখনও কিছু কিছু বোকা ও ধান্দাবাজ লোকজন বলে বেড়ায় সংক্রামক বা ছোঁয়াচে রোগ বলে কিছু নেই। ভাইরাস হলো গজব। এদের প্রচার প্রচারনায় উৎসাহিত হয়ে ভারতে করোনাভাইরাস সংক্রমন রাতারাতি দ্বিগুণ, তিনগুণ হয়ে গেল।
আরবের লোকেরা প্লেগের মত রোগকে ভয়ানক ছোঁয়াচে জানত। প্রাচীন গ্রীসের তখনকার চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিশেষ অবদান রাখা গ্যালেন বা হিপোক্রেটিসের সময় তাদের লিখিত ডাক্তারী বইগুলোতে এইসব রোগগুলোকে সংক্রমক হিসেবে রায় দিয়েছিলো। তাই কোন প্লেগ রোগীর কাছাকাছি আসলে সুস্থ মানুষও প্লেগে আক্রান্ত হবে এটা মোটামুটি গ্রিসের মানুষ জানত। আরবের ডাক্তাররা প্রাচীন গ্যালেন লিখিত ২৬টি মেডিকেল বই অধ্যয়ন করেই ডাক্তারি পাশ করত। সে থেকে আরবরাও ছোঁয়াচে রোগ সম্পর্কে জ্ঞান রাখত। সেও এখান থেকে প্রায় দুই হাজার বছর আগের কথা।
সেই আরবের রেফারেন্স দিয়ে যারা বলে সংক্রামক রোগ বলতে কিছু নেই, তারা আসলে প্রাচীন আরবের মানুষের সেই জ্ঞান গরিমাকে অবজ্ঞা করে, বর্তমান বিজ্ঞানী, ডাক্তারদের তো তোয়াক্কাই করে না।
সংক্রামক রোগের অস্তিত্ব এখন শুধু তত্ত্ব নয় – এটা জিনতত্ত্ব, ভাইরোলজি, এবং জনস্বাস্থ্য গবেষণায় বারবার প্রমাণিত। COVID-19, HIV, কলেরা, যক্ষ্মা – সবই সংক্রামক রোগের বাস্তব উদাহরণ। যারা এগুলো অস্বীকার করে, তারা শুধু নিজেদের নয়, সমাজেরও ক্ষতি করছে।
বিশ্বাসের জায়গা থাকতেই পারে, কিন্তু যখন সেই বিশ্বাস জনস্বাস্থ্য বা বৈজ্ঞানিক সত্যকে অস্বীকার করে, তখন সেটা বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। প্রাচীন জ্ঞানকে সম্মান করতে হলে, তার প্রেক্ষাপট, বিকাশ এবং আধুনিক ব্যাখ্যাও বুঝতে হবে। বর্তমান যুগে আধুনিক বিজ্ঞান অস্বীকার করা মানে তারা মূর্খ, বেকুব, তাদের পাত্তা দিলে মানুষের উন্নয়ন তো হবেই না, বরং কোভিডের মতো সংক্রামক রোগ আরো মানুষের মৃত্যু ডেকে নিয়ে আসবে।
ছবিতে দেখছেন গ্যালেন ও হিপোক্রেটিস কে। এগুলো শিল্পীর আঁকা। নেটে সার্চ দিলে তাদের সম্পর্কে শত শত পৃষ্ঠার তথ্য পাবেন। হিপোক্রেটিস (৪৬০ – ৩৭০ BCE) “হিপোক্রেটিক কর্পাস”- সংক্রামক বা ছোঁয়াচে রোগের প্রকৃতি ও পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। গ্যালেন (১৩০ – ২০০ CE) ছিলেন রোমান যুগের চিকিৎসাবিদ, যিনি সংক্রমণ, শরীরের চার রস (humors), এবং রোগের বিস্তার নিয়ে বিশদভাবে লিখেছেন। তাঁর লেখা ২৬টি বই – যা আরব চিকিৎসাবিদরা অনুবাদ ও অধ্যয়ন করতেন -যা পরবর্তীতে ছিল মধ্যযুগীয় চিকিৎসাবিদ্যার ভিত্তি।
ছবিঃ উইকিমিডিয়া কমনস থেকে সম্পাদনা করা। CC4
Related Posts

১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারির নির্বাচন – বি এন পি যেভাবে গনতন্ত্র ধ্বংস করেছিল
২০২৪ এর ঐতিহাসিক গণ-অভভুত্থানের আগে ১৯৯০ সালে ছাত্র জনতার ত্যাগের বিনিময়ে দেশে গণতন্ত্র বিকাশের যেRead More

This Religious Frenzy Must End Now – Walk the Path of Civilization
Bangladesh’s society has changed dramatically over the past 20–30 years. One of the most destructiveRead More

স্বৈরাচার যখন দানব হয়ে যায় তখন মানুষের লাশের গন্ধ তাদের কাছে প্রিয় হয়
আমি আওয়ামী লীগের কোন পর্যায়ের কমিটির কখনোই কেউ ছিলাম না, এখনো নেই। আওয়ামী লীগ বাRead More
Comments are Closed