Movement
Fascist Sheikh Hasina

Bangladesh student movement

স্বৈরাচার যখন দানব হয়ে যায় তখন মানুষের লাশের গন্ধ তাদের কাছে প্রিয় হয়

আমি আওয়ামী লীগের কোন পর্যায়ের কমিটির কখনোই কেউ ছিলাম না, এখনো নেই। আওয়ামী লীগ বা সরকার থেকে জীবনে কোন সুবিধা গ্রহন করিনি, বরং শেখ হাসিনার জামানায় অন্যায়ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। অথচ এই শেখ হাসিনা ও আওয়ামীলীগকে নিয়ে এক সময় বড় বড় স্বপ্ন দেখেছিলাম। ভাবতাম বাংলাদেশ ও দেশের মানুষেরা হয়তো বঙ্গুবন্ধু কন্যার হাতেই প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ পাবে। খালেদা জিয়ার সরকার, বিষেষ করে তারেজ জিয়ার সীমাহীন অযোগ্যতা, অদক্ষতা ও দুর্নীতির কারনে আমাদের মতো লক্ষ লক্ষ তরুনের স্বপ্ন বাতাসে মিলিয়ে যেতে দেখেছি তারুণ্যে। বিএনপি’র দূবৃত্তায়নের রাজনীতি ও মৌলবাদের উত্থান দেখেছি। সেজন্য চেয়েছিলাম দেশের মানুষ মুক্তি পাক, তারা কষ্টে কেনা স্বাধীনতার স্বাদ পাক। সেজন্য ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের আগের কয়েক মাস আমি অনেক নির্ঘুম রাত কাটিয়েছি।

তখনো আমি পড়াশুনার গন্ডি পার করিনি পুরোপুরি। আওয়ামীলীগের একটা রিসার্চ সেল ছিলো বটে! নাম,পদবীতে কত কত মুখ ছিলো। কিন্তু কাজের কাজ করতো মাত্র দুই, তিন মানুষ। তাদেরই একজনের আবার আমার উপরে ছিলো অগাধ আস্থা। উনি যে কোন টেকনিক্যাল ব্যাপারে আমার দারস্ত হতেন। আমিও যেহেতু স্বপ্ন দেখতাম বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশের দুর্নীতি দূর করবেন, স্বজনপ্রীতি নাশ করবেন, শিক্ষাঙ্গনে শান্তি ফিরিয়ে আনবেন, বিদ্যুৎ দিবেন, সরকারী অফিসের সেবা মানুষের জন্য সহজ করবেন সেহেতু কোন রকম কিছু প্রাপ্তির আশা ছাড়াই আমি আমার সাধ্যমতো করেছি। ইউনিভার্সিটি থেকে ডাটা ম্যানেজমেন্ট, জিআইএস, এসপিএসএস এমন কিছু টুলসের ব্যবহার সদ্য শিখে এসেছিলাম তখন। সেগুলো বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করার একটা নেশা বাস্তবায়নের সুযোগও পেয়েছিলাম। ৩০০ সংসদীয় আসনে কোন দলর অতীত ভোটের রেকর্ড কত, কার সম্ভাবনা কেমন এমন অনেক এ্যানালিসিস, প্রেজেন্টেশান আমি করে দিয়েছিলাম সে সময়।


ভিডিওতে কিছু ডকুমেন্টস দেখালাম। আওয়ামী লীগ ও তাদের নির্বাচন সম্পর্কিত এমন শত শত ডকুমেন্টস আমার ল্যাপটপে এখনো আছে যেগুলোর বড় অংশের ড্রাফট আমি করেছিলাম। খেয়াল করে দেখবেন, সেগুলোর ক্রিয়েশান ডেট ও সময় দেখেন, সবই রাতে করা। সারাদিনের রুটি রুজির কর্মব্যস্ত সময় পার করে রাতে এগুলো নিয়ে বসতাম। দেখেন, আওয়ামী লীগ যে সমস্ত প্রতিষ্ঠানকে নির্বাচন পর্যবেক্ষনের জন্য কালো তালিকাভুক্ত করেছিলো তার মধ্যে এমন এক প্রতিষ্ঠানের কর্নধার আজ শেখ হাসিনার প্রেস সচিব। আওয়ামীলীগের নির্বাচনের এ্যাকশন প্ল্যানের কালো তালিকাতেও তার নাম ছিলো। কিন্তু আজ উনি আওয়ামী লীগের বড় শুভাকাঙ্ক্ষী। অফলাইন, অনলাইন ঘেটে তার কতো কলামের সন্ধান আমি করে দিয়েছিলাম, একটা কলাম তো এখনো আমার চোখে জ্বলজ্বলে যেখানে তিনি তারেক সাহেবকে দেশের ত্রাণকর্তা হিসাবে সর্বোচ্চ গুনকীর্তন করেছিলেন।

বলছি শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের সেই স্বপ্ন পূরনে কখনোই উদ্যগী হয়নি। তারা গতানুগতিক ধারায় পেশীশক্তি নির্ভর ছাত্র রাজনীতি, সন্ত্রাসী যুব শক্তির উপর আস্থা রেখেছে। শেখ হাসিনার চারপাশে চাটুকর। পুরো গণভবন, সচিবালয় আজ চাটুকর ও দুর্নীতিবাজদের খোয়াড়। শেখ হাসিনা একটানা ১৫ বছর সময় পেয়েছেন, এ সময়ে তিনি দেশের জন্য গঠনমূলক কিছুই করেননি। মেট্রোরেল, পদ্মা ব্রীজের কথা বলবেন? বিশ্বের কোন দেশ এমন উন্নয়ন এই সময়ে করেনি? শেখ হাসিনা একটা গনতান্ত্রিক, শান্তিপূর্ণ, বৈষ্যম্যহীন সমাজ তৈরিতে কী করেছেন? তিনি যাদের উপরে সর্বোচ্চ আস্থা রেখে এগিয়েছেন যেমন বেনজীর, আজিজ সবাই ভয়াবহ দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত। তার চারপাশের মানুষের দুর্নীতি, লাম্পট্য, লুটপাটে আজ দেশের বেহাল দশা। যার পরিনাম ভোগ করছে একেবারে প্রান্তিক সাধারন খেটে খাওয়া মানুষ। যারা তার রাজনীতি করে তাদের গায়ে লাগে না, কারন তাদের খেটে খেতে হয় না, তারা লুটপাটে সিদ্ধহস্ত।


মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বেঁচা একটা সরকার দীর্ঘ ১৫ বছরেও এমন কোন আদর্শ, দর্শন, চেতনা সত্যিকার অর্থে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি যে মানুষ, বিশেষ করে তরুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রকৃত চেতনা বুকে ধারন করতে পারে। বরং যতো দিন যাচ্ছে মানুষ সেগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। বলবেন, তাদের সবাই রাজাকার ও রাজাকারের উত্তরসূরী? সরাসরি মুক্তিযুদ্ধ করেছিলো কয়জন? এক লক্ষের কিছু বেশী হবে। কিন্তু দেশের সাড়ে ৭ কোটি মানুষ তাদের নানাভাবে সহযোগীতা করেছে, তারাও জীবনের রিস্ক নিয়েছে, নিহত হয়েছে, ধর্ষিতা হয়েছে। ৩০ লক্ষ শহীদ যে বলেন, তারা কারা? এই দেশের কয়েক হাজার রাজাকার বাদে বাকী সবাই মুক্তিযুদ্ধের জন্য কিছু না কিছু করেছে। প্রায় সবার পরিবারেই লতায় পাতায় জড়িয়ে হলেও কোন না কোন শহীদ আছে, ৩০ লক্ষ শহীদ, সাড়ে ৭ কোটি মানুষের ৪% মানুষ তো জীবন দিয়েছিলো। বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ যারা পড়ে তাদেরকে রাজাকার বলার কোন কারন নেই। রাজাকার পরিবারের লতায় পাতায় ধরলেও সেটা কয়েক হাজারের গন্ডি পার হবে না।

উপরে শেখ হাসিনার যে তৈলাক্ত প্রেস সচিবের কথা বললাম উনি নিজেই বলেছেন উনার বাবা একাত্তরে শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন, মানে প্রধানমন্ত্রী নিজেই রাজাকারের সন্তানকে তার দপ্তরে গুরুত্বপূর্ণ পদে পুনর্বাসন করেছেন যার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধাচারন করার ডকুমেন্টেড প্রমান স্বয়ং আওয়ামী লীগই দেখিয়েছে। অনেকে বলাবলি করেন প্রধানমন্ত্রীর মেয়ের সাবেক শ্বশুর পরিবার রাজাকার ছিল। আওয়ামী লীগে অনেক যুদ্ধাপরাধী রাজাকারের পুনর্বাসনও করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের অনেক বড় বড় নেতাই রাজাকারদের সঙ্গে আত্মীয়তা করেছে, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলে। একই সঙ্গে আপনি নিজে রাজাকারদের সামাজিকভাবে গ্রহনযোগ্যতা দিবেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে দুর্নীতি, লুটপাট করার সুযোগ দিবেন আপনাদের লোকজনকে – তখন মানুষ ও বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম তো তাদের সামনে কোন আদর্শস্থানীয় কাউকে দেখে না।

এখন যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তারা জ্ঞান হওয়ার পর থেকে দেখছে বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই, নির্বাচন হয় না, দুর্নীতিবাজরা এখানে সর্বোচ্চ সম্মানিত, লুটেরারা এখানে সিস্টেমের নিয়ন্ত্রক। এই প্রজন্ম তো আপনাদের সময়ে বড় হয়েছে। এদের জন্য আওয়ামী লীগ কী নীতি আদর্শ দেখাতে পেরেছে? ছাত্র লীগকে তো তারা দেখছে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ধর্ষক, দখলদার হিসাবে। ফেসবুকসহ অন্যান্য সোস্যাল মিডিয়ায় খেয়াল করে দেখেন, আওয়ামী লীগ, ছাত্র লীগের পক্ষে কেউ এখন কথা বলা নিরাপদ মনে করে না, অনেকে লজ্জা পায়। ১৫ বছর একটানা ক্ষমতায় থেকেও আপনারা কেন আপনাদের নিজেদের হাতে গড় প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক চেতনায় দীক্ষিত করতে পারলেন না? তারাও এখন জানে আওয়ামী লীগের বর্তমান চরিত্র আসলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সমর্থক নয়। আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধকে এখন ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে তাদের দুর্নীতি, লুটপাট, অযোগ্যতাকে প্রটেকশান দিতে। কেউ বাঁধা দিতে এলে তাকে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী ট্যাগ দেয় এবং তাদেরকে এই অযুহাতে পেটায়।

আপনারা ১৫টা বছর সময় পাইছিলেন। ২০০৯ সালে জনগন সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়ে সংসদে পাঠাইছিল আপনাদের। সুযোগ ছিল বাহাত্তরের সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার, আপনারা করেননি। সমাজে ধর্মীয় বৈষ্যম্য চাঙ্গা করলেন। সুযোগ ছিল দুর্নীতিকে অন্ততঃ সহনশীল পর্যায়ে এনে সুশাসন কায়েম করার, উল্টোপথে হেঁটে দুর্নীতিকে লাগামহীন করলেন। মানবাধিকার মাটিতে মিশিয়ে দিলেন। কমোডিটি মার্কেট তুলে দিলেন ৫-৬টা কোম্পানীর হাতে। নিত্যপন্য দ্রব্যের দামে যথেচ্ছাচার করলো তারা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মত করে। যারা সংসার চালায় তারা জানে কত ধানে কত চাল চলে। মানুষ আপনাদের কারনে সেক্যুলার আদর্শ থেকে দূরে সরে গেলো। এখনো আপনাদের লোকজনের ব্যাংক লুট থামাতে পারছেন না, বরং তাদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করছেন। অনেক বিশেষজ্ঞ এও আশংকা করছেন নিকট ভবিষ্যতে গ্রাহক ব্যাংকে রাখা তার টাকা ৫/১০ হাজারের বেশী তুলতে পারবে না, কারন ব্যাংকে টাকা থাকবে না।

তুরস্ক এক সময় স্যেকুলার, উন্নয়নমুখী দেশ ছিলো। তাদের দেশে ইউরোপ ও এশিয়ার সংস্কৃতির এক উজ্জ্বল মিশ্রন ছিলো। সেই তুরস্কের মানুষ এতো বছর পরে আবার ধর্মভিত্তিক মৌলবাদী শক্তিকে বেছে নিয়েছে। কারন লিবারেল স্যেকুলাররা এতো বেশী দেশের মানুষের অধিকারকে অবহেলা করেছে, এতো বেশী দুর্নীতি করেছে যে মানুষ এখন উপায় না পেয়ে সেটা করতে বাধ্য হচ্ছে। বাংলাদেশেও আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মতো তথাকথিত প্রগতিশীল দলগুলোর ক্রমাগত ব্যর্থতা, সীমাহীন দুর্নীতি, লুটপাটের কারনে এক সময় অতিষ্ট হয়ে মৌলবাদী শক্তিগুলো জনপ্রিয় হয়ে যাবে। তার লক্ষন এখন সবখানে দৃশ্যমান। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক, ছাত্রদের দেখলেই বুঝবেন তারা গত ২০ বছর আগের তুলনায় কী পরিমান মৌলবাদী বেশ ও চিন্তা ধারন করে। শেখ হাসিনা বাংলা সংস্কৃতিকে মেলতে দেয়নি; স্যেকুলার, প্রগতিশীল লেখক, শিল্পী, কার্টুনিস্টদের দেশ ছাড়া করেছে; তেতুল হুজুরের পরামর্শ নিয়ে দেশ চালিয়েছে; গ্রামে গঞ্জে ওয়াজের বাড় বাড়ন্ত হতে দিয়েছে; ছাত্র লীগ, আওয়ামী লীগকে ফ্রাংকেনস্টাইন দানব রুপে প্রেজেন্ট করেছে। তাহলে হবেটা কী? মানুষ তো বিএনপিকেও দেখেছে, তারাও তো আওয়ামী লীগের চেয়ে খারাপ বৈ ভালো হবে না। তখন মানুষ বৈষ্যম্য, অবিচার, দুঃশাসন থেকে মুক্তি পেতে অনেক সময় মৌলবাদী, ডানপন্থী শক্তিকে বেছে নেয়। তুরস্ক, ভারত, ফ্রান্সসহ বিশ্বের দেশে দেশে এটার প্রমান পাওয়া যাচ্ছে।

বাংলাদেশে যে কোটা সংস্কার আন্দোলন হচ্ছে তারা সবাই কি সুশিক্ষা পাচ্ছে? তারা কি সরকারী চাকুরী পেয়ে সিস্টেমকে বদলে ফেলবে? দুর্নীতি দূর করবে? সে লক্ষন কিন্তু নেই। তাদের বড় অংশই বরং আওয়ামী লীগ, বিএনপি’র লুটপাট ও দুর্নীতির দোসর হতেই সরকারী চাকুরীর প্রতি লালায়িত। কারন তারা জানে সেখানে অফুরন্ত অর্থ প্রাপ্তির সঙ্গে ক্ষমতা প্রয়োগের অবারিত সুযোগ থাকে, যার বিনিময়ে তারা সম্মানটাও বেশী পাবে। সেজন্য কোটা সংস্কার করলে বা না করলে আমাদের মতো সাধারন খেটে খাওয়া মানুষের কোন উপকার হবে না। কিন্তু মানুষ হিসাবে তাদের নায্য দাবীর অধিকার আমরা সমর্থন করি। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ও ডিজ্যাবলদের জন্য শুধু সরকারী চাকুরী না, সকল সেক্টরের চাকুরীতেই কিছু কোটা বাধ্যতামূলক করা জরুরী, অন্যান্য দেশে তাই করে। তবে সেই সংখ্যা অবশ্যই একটা যৌক্তিক সীমায় আটকে রাখা আবশ্যক। এই কোটা সংস্কার প্রশ্নে আন্তরিকভাবে সমাধান চাইলে শেখ হাসিনা প্রথম দিনেই সেটা করতে পারতেন, উনার সিদ্ধান্তকে প্রশ্ন করবে সেই মানুষ কে? উনি কেন সেই আন্তরিকতা না দেখিয়ে শেষ পর্যন্ত লাশের স্বাদ নিলেন সেটা আমাদের বোধগম্য নয়। কিশোর, তরুন, নারীদের লাশ নিয়ে ও রক্তাক্ত করে তার রাজনীতির কী উন্নতি ঘটবে সেটা উনিই ভালো জানেন, তবে কাজটা তার জঘন্য হয়েছে, একজন পিশাচ, স্বৈরশাসকের পূর্ণ পরিচয় তিনি দিয়েছেন।


এতোজন ছাত্রকে মেরে ফেললেন, পিটিয়ে রক্তাক্ত করলেন শত শত, হাসপাতালের মতো জায়গায়ও সন্ত্রাসী পাঠিয়ে আহতদের আবারো আক্রমন করলেন এগুলো আর কতদিন চালাবেন শেখ হাসিনা? ডিডিওতে দেখলাম সাঈদ নামে ছেলেটাকে আপনার পুলিশ সামনে থেকে গুলি করে মারলো। আপনার কী এমন ক্ষতি সে করেছিলো যে তাকে মেরেই ফেলতে হলো! কম্প্রোমাইজ বা ইগো সেক্রিফাইসের রাস্তা কি বন্ধ ছিলো? বুক চেতিয়ে মৃত্যুকে যে আলিঙ্গন করতে পারে, বুঝতে হয় তার মাঝে স্ট্রং ইথিকস্ আছে, আছে দৃঢ় ব্যক্তিত্ব। সে সামান্য চাকুরীর জন্য মৃত্যু বরণ করেনি। যে যত কথাই বলুক না কেন একটি দু:সাহসী, অকৃত্রিম, পোড় খাওয়া উদ্দীপ্ত মানুষের চির বিদায় হলো আজ। আসলে ছাত্ররা তো এমনই হয়, এমনই হওয়া উচিৎ। বয়সটাই এমন, এই বয়সের এই আবেগের মানুষগুলো ছিলো বলেই এদেশে ৫২ এসেছিলো, ১৯৭১ এ দেশ স্বাধীন হয়েছিলো। রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম মৃত্যুবরণকারী আবু সাঈদের নামে একটি হল কিংবা স্মরণী হবে – বেরোবি প্রশাসনের কাছে এটা আমার প্রত্যাশা।


এই যে যারা কোটা আন্দোলন করছে, অন্যদিকে ছাত্রলীগ, যুবলীগ যারা তাদের পেটাচ্ছে সবাই কিন্তু আবার আমাদের মতো সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে একাট্টা। যদি কেউ জানায় তসলিমা নাসরিন আজ বেনাপোল বর্ডার দিয়ে দেশে ঢুকবেন তবে সবাই মারামারি থামিয়ে দিয়ে বেনাপোল রওনা দিবে এরা। যদি ওরা ধর্মের সমালোচক ও নবী মোহাম্মদের অপকর্ম দেখানো আমার মতো কাউকে সামনে পায় তবে সবাই মিলে সম্মিলিতভাবে গণপিটুনি দিয়ে আমাদের হাড় মাংস নিঃশ্চিহ্ন করে দিবে। কারন এরা মুক্তমত, বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা, মানবাধিকার এগুলো সম্পর্কে প্রকৃত শিক্ষা পায়নি। তবুও আমরা তাদের অধিকারের পক্ষে যাবো। এই যে তাদের কুশিক্ষা এজন্যও মোটাদাগে দায়ী এখন শেখ হাসিনা, কারন তিনি তার প্রয়োজনেই এদেরকে গোঁড়া করে রেখেছেন। আমাদের মতো মুক্তচিন্তার হলে সবাই মিলে আগে শেখ হাসিনাকেই বলবে ‘রাজা তুমি ল্যাংটা।’ এখন তো তাও কোটা সংস্কার মেনে নিলেই সবাই ঘরে ফিরে যাবে।

[Cartoon: Apus Creation]

Related Posts

Israel, Palestine and Islam

Crimes against humanity in Israel-Palestine and the inhumanity of Islam

I occasionally speak with a fairly wealthy American who is of British origin. The gentlemanRead More

Israel, Palestine and Islam

ইসরায়েল-ফিলিস্তিনে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ও ইসলামের অমানবিকতা

একজন মোটামুটি সম্পদশালী আমেরিকানের সঙ্গে মাঝে মাঝে কথা হয়, ব্রিটিশ অরিজিন। ভদ্রলোকের অনেক বয়স, যদিওRead More

Israel-Palestine Crisis

Where is the solution to the Israel-Palestine Crisis?

Gaza is a small part of Palestine, there is no control of the West Bank,Read More

Comments are Closed