Disaster
Development Disaster

Development Disaster

উন্নয়নের নামে ‘ডেভেলপমেন্ট ডিজাস্টার’ তো কাম্য নয়। লুটপাটের জন্য স্রেফ ডিজাস্টার এগুলো

আন্ডারগ্রাড করার সময় ‘ডেভেলপমেন্ট ডিজাস্টার’ নামে একটা টার্ম শিখেছিলাম ‘ডেভেলপমেন্ট ইকোনমিক্স’ ও অন্য কিছু সাবজেক্টে। তখন উদাহরন হিসাবে আমাদের সামনে শিক্ষকেরা তথ্য-উপাত্ত-প্রমান দিয়ে হাজির করতেন বিল ডাকাতিয়ার উদাহরন। একদা কৃষি সমৃদ্ধ জনপদ ভুল প্ল্যানে উন্নয়নের জন্য আজীবনের জন্য পাল্টে গেছিল খারাপভাবে। যেটাকে রিসার্চচাররা নাম দিয়েছিলেন ডেভেলপমেন্ট ডিজাস্টার।

কিন্তু আজকের দিনে ডেভেলপমেন্ট ডিজাস্টার এতো এতো বেশী হয়ে গেছে যে কোনটা রেখে কোনটা বলবো ভেবে পাই না। আগামী ১০ বছর পরে ঢাকা শহরের ২/৪ টা ফ্লাইওভার ভেঙ্গে ফেলা হলেও অবাক হবো না। বলা হয় সবকিছু ‘জনস্বার্থে’। নিয়োগ, বদলি, টেন্ডার আদেশ সব হয় ‘জনস্বার্থে’। তবে কোথায় কতটা জনগনের স্বার্থ উদ্ধার হয় সেটা প্রশ্নসাপেক্ষ, অন্তত কেউ আস্থা নিয়ে পজিটিভলি বলতে পারবেন না একবারে। বরং সবাই একবাক্যে বলে দিবেন নেতা-গোতা, সরকারী কর্মচারীদের দুর্নীতি করে টাকা কামানোর জন্যই নেয়া হয় এক একটি প্রজেক্ট। অন্তত সেটিকে মূল স্বার্থ হিসাবে দেখেন বেশীরভাগ মানুষ।

ঢাকা শহরের শ্যামলীতে একটি নামকাওয়াস্তের শিশুপার্ক ছিল, আশা টাওয়ারের পিছনে। সেখানে শিশু, তরুণ, যুবক, বৃদ্ধ সবাই আড্ডা দিতো। শীতকালে ও বর্ষাকালে ফুলে ফুলে ছেয়ে যেতো রাস্তার দুইধার। শিশুদের জন্য খেলার সামগ্রীগুলো নিম্নমানের উপাদানে তৈরি হওয়াতে ও বুড়োরা সেগুলো ব্যবহার করতে শুরু করায় সেগুলো যদিও বেশীদিন টেকেনি। তবে গত ২ বছর যাবৎ সেই পার্কটি টিনের বেড়া দিয়ে ঘেরা। ভিতরে কি বাল হয় কেউ জানে না। মাঝে মাঝে উঁকি দিয়ে দেখি একটা গ্যালারি, সামনে কিছু খোলা ময়দান বানিয়ে মাঠের খোলামেলা পরিবেশের তেরটা বাজিয়েছে। আজ পাশের এক ডাব বিক্রেতার সঙ্গে কথা হচ্ছিল, সেও বললো আগেই ভাল ছিল পার্কটি, এখন যা করছে তাতে খেলার বা হাঁটার জায়গাই নেই, শিশুরা খেলবে কোথায় ? নেতারা সামনে চ্যালা চামুন্ডা নিয়ে সভা করতে পারবে, এই হবে সুবিধা !

শ্যামলী, আদাবর, মনসুরাবাদ এলাকায় শিশুদের খেলার বা ঘোরার মতো আর কোন উন্মুক্ত ময়দান নেই। যাও একটা ছিল সেটাও তথাকথিত উন্নয়নের নামে ২ বছর ধরে ঘেরা। ভিতরে যেসব স্থাপনা হচ্ছে তা সদিচ্ছা ও সৎভাবে বানালে বড়জোর ২/৩ মাস লাগার কথা। গ্যালারী, ফ্যালারি, রুম এগুলো দিয়ে শিশুরা কি করবে ? সেখানে বিকালে কেউ আর শখ করে হাঁটতে যাবে বলে মনে হয় না। কেউ ভাবে না এগুলো যে একটি শহরে খোলা জায়গার কত বেশী প্রয়োজন, শিশুদের জন্য খেলার মাঠ বা পার্কের কত বেশী দরকার! ব্যবসায়ী, নেতা, ইঞ্জিনিয়ার এদের পকেট ভরলেই শেষ ! কি কাজ হচ্ছে, কতদিনে হচ্ছে, কিভাবে হচ্ছে, কতদিন টিকবে এসব ভাবা বাংলাদেশের জনপ্রতিনিধিদের কাজ নয়। এজন্য চারিদিকে এখন দেখা যায় ‘ডেভেলপমেন্ট ডিজাস্টার’, আজ বা কালের জন্য অপেক্ষা মাত্র।

শ্যামলী শিশু পার্কের ৪ বছর আগের একটি ভিডিও। এই পার্কটিতে ইট-কংক্রিটের ঘরবাড়ি করে স্রেফ ডেভেলপমেন্ট ডিজাস্টারে পরিনত করা হচ্ছে। এই ভিডিওটি যদিও নিয়েছিলাম ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। তবে এখন এই খোলামেলা পার্কটিকে আর এমন খোলামেলা দেখা যাবে না।

Related Posts

Evolutionary Biology and Women

Protecting women is a man’s responsibility – this is a lesson rooted in evolutionary psychology

A common tendency across all societies is to take extra care of women. This isRead More

Mitochondrial Eve

নারীকে সুরক্ষা দেয়াটা পুরুষের কর্তব্য, এটা বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানের শিক্ষা

সব সমাজের একটা কমন টেন্ডেন্সি হলো নারীকে এক্সট্রা কেয়ার নেয়া। এটা প্রকৃতির একটা নিয়ম। মাইটোকন্ড্রিয়ালRead More

Evolution through mutation

Evolution through mutation: Nature’s perfect strategy

Evolution is the gradual process of change in the living world through which species adaptRead More

Comments are Closed