History
Civilization Timeline

Civilization Timeline

মানব সভ্যতা, ইতিহাস, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞানের শুরু, অতীত ও ভবিষ্যৎ

(-) অতীত | (০) বর্তমান | (+) ভবিষ্যৎ

-১৩৫০ কোটি বছরঃ

  • পদার্থ এবং শক্তির উদ্ভব। পদার্থবিদ্যার সূচনা। পরমাণু এবং অণুর উৎপত্তি। শুরু হলো রসায়নবিদ্যার।

-৪৫০ কোটি বছরঃ

  • তৈরী হল ‘পৃথিবী’।

-৩৮০ কোটি বছরঃ

  • প্রাণের আবির্ভাব। জীববিদ্যার সূত্রপাত।

-৬০ লক্ষ বছরঃ

  • মানুষ এবং শিম্পাঞ্জি দুজনের সর্বশেষ পূর্বপুরুষকে দেখা যায়।

-২৫ লক্ষ বছরঃ

  • আফ্রিকায় আদি মানুষের বিকাশ লাভ। পাথরের হাতিয়ারের উদ্ভাবন।

-২০ লক্ষ বছরঃ

  • মানুষ আফ্রিকা থেকে ইউরেশিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। মানুষের বিভিন্ন প্রজাতির আবির্ভাব।

-৫ লক্ষ বছরঃ

  • ইউরোপ এবং মধ্য প্রাচ্যে নিয়ান্ডার্থাল মানুষ বিকাশ লাভ করে।

-৩ লক্ষ বছরঃ

  • প্রাত্যহিক কাজে আগুনের ব্যবহার।

-২ লক্ষ বছরঃ

  • পূর্ব আফ্রিকায় আধুনিক মানুষের বিকাশ।

-৭০ হাজার বছরঃ

  • বুদ্ধিভিত্তিক বিপ্লব ইতিহাসের শুরু: আধুনিক মানুষ আফ্রিকা থেকে বের হয়ে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।

-৪৫ হাজার বছরঃ

  • মানুষ অষ্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী আবাস গড়ে। সেখানকার আগের সমস্ত প্রাণিকুলকে ধ্বংস করে ফেলে।

-৩০ হাজার বছরঃ

  • নিয়ান্ডার্থালের বিলুপ্তি।

-১৬ হাজার বছরঃ

  • মানুষ আমেরিকায় স্থায়ী আবাস গড়ে তোলে। আমেরিকার পূর্ববর্তী প্রাণবৈচিত্র্য বিলুপ্তির কবলে পড়ে।

-১৩ হাজার বছরঃ

  • ফ্লোরেসিয়েন্সিস মানুষের বিলুপ্তি। আধুনিক মানুষই মানব প্রজাতিগুলোর মধ্যে একমাত্র টিকে থাকা প্রজাতি।

-১২ হাজার বছরঃ

  • কৃষি বিপ্লব। উদ্ভিদ এবং প্রাণীর গৃহপালিতকরণ। মানুষের এক জায়গায় স্থায়ীভাবে বসবাসের সূচনা।

-৫ হাজার বছরঃ

  • প্রথম রাজ্য, রাজত্ব, হস্তলিপি এবং মুদ্রার প্রচলন। বহু-ঈশ্বরবাদী বা বহুদেববাদী (Polytheistic) ধর্মের প্রচলন।

-৪২৫০ বছরঃ

  • প্রথম সাম্রাজ্য – সারগন এর আক্কাদীয় সাম্রাজ্যের শুরু।

-২৫০০ বছরঃ

  • পয়সার উদ্ভাবন – সর্বজনীন মুদ্রা ব্যবস্থার প্রচলন।
  • পারস্য (বর্তমান ইরান) সাম্রাজ্য – “সব মানুষের স্বার্থে” সর্বজনীন রাজনৈতিক ব্যবস্থা।
  • ভারতে বৌদ্ধ ধর্মের প্রসার – “জগতের সমস্ত প্রাণী দুঃখ-কষ্ট থেকে মুক্তি পাক” এই সর্বজনীন সত্যে আস্থা।

-২০০০ বছরঃ

  • চীনে হান সাম্রাজ্যের সূচনা।
  • ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে রোমান সাম্রাজ্যের বিস্তার।
  • খ্রিস্টধর্মের আগমন।

-১৪০০ বছরঃ

  • ইসলামের সূচনা।

-৫০০ বছরঃ

  • বৈজ্ঞানিক বিপ্লব। মানুষ তার অজ্ঞতা বা অনভিজ্ঞতাকে বুঝতে এবং নজিরবিহীন শক্তি অর্জন করতে শুরু করে।
  • ইউরোপীয়রা আমেরিকা আর সাগর জয় করতে শুরু করে। সারা পৃথিবী একটি মাত্র ঐতিহাসিক স্থানে পরিণত হয়।
  • পুঁজিবাদের (capitalism) উদ্ভব।

-২০০ বছরঃ

  • শিল্প বিপ্লব। পরিবার এবং সম্প্রদায় পরিণত হয় রাষ্ট্র এবং বাজারে। বিপুল পরিমাণ উদ্ভিদ ও প্রাণীর বিলুপ্তি ঘটে এ সময়।
  • বর্তমান সময় মানুষ পৃথিবীর সীমা অতিক্রম করেছে। রাসায়নিক অস্ত্র মানুষ জাতির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রাণীর বৈশিষ্ট্য এখন আর প্রাকৃতিক বিবর্তনের মাধ্যমে নির্ধারিত হচ্ছে না, হচ্ছে মানুষের বুদ্ধিদীপ্ত নকশার (Intelligent design) মাধ্যমে।

০ বছরঃ বর্তমান সময়

আগামীর বুদ্ধিদীপ্ত নকশাই কি মানুষের ভবিষ্যৎ মূলমন্ত্র হতে যাচ্ছে? আধুনিক মানুষের জায়গা কি দখল করে নিবে অতিমানব ? মানব সভ্যতা ও বিজ্ঞানের এত উন্নয়নের পরেও মানুষ এখনো টাইপ ১ – প্ল্যানেটারি সভ্যতায় পৌঁছাতে পারেনি।

==============

আজ থেকে প্রায় সাড়ে ১৩শ কোটি বছর আগে বিগ ব্যাং (Big Bang) নামে পরিচিত এক মহাবিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে সৃষ্টি হয় পদার্থের, উৎপত্তি লাভ করে শক্তি, সূচনা ঘটে সময়ের আর রচিত হয় মহাশূন্য। জ্ঞানের যে শাখা মহাবিশ্ব সম্পর্কিত এসব মৌলিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করে তাকে আমরা বলি পদার্থবিজ্ঞান।

পদার্থ এবং শক্তি তৈরি হওয়ার প্রায় ৩ লক্ষ বছর পর তারা একত্রিত হয়ে পরমাণু (Atom) নামে একটি জটিল কাঠামো গঠন করে। পরমাণু হল মৌলের ক্ষুদ্রতম একক, যা সরাসরি রাসায়নিক পরিবর্তনে অংশ নিতে পারে। এই পরমাণুগুলো পরবর্তীতে বিভিন্নভাবে বিন্যস্ত হয়ে আরো জটিল প্রকৃতির কাঠামোর সূচনা করে, যা অণু নামে পরিচিত। পরমাণু, অণু ও তাদের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার গল্পই হলো রসায়ন।

এরও অনেক পরে, আজ থেকে প্রায় ৩৮০ কোটি বছর আগে, এই মহাবিশ্বের পৃথিবী নামক একটি গ্রহে নির্দিষ্ট কিছু অণু মিলিত হয়ে বড় আকারের ও আরো জটিল ধরনের বিশেষ কিছু কাঠামো গঠন করে। এদেরকে আমরা এক কথায় বলি ‘জীব’। সমস্ত জীবজগৎ ও তাদের কার্যপ্রণালী নিয়ে আলোচনা করে যে শাস্ত্র তার নাম জীববিজ্ঞান।

প্রায় ৭০ হাজার বছর আগে, সমস্ত জীবজগতের মাঝে হোমো সেপিয়েন্স (Homo sapiens) নামের একটি বিশেষ প্রজাতি সম্মিলিতভাবে সংস্কৃতি (Culture) নামে একটি ধারণার সূত্রপাত ঘটায়। সংক্ষেপে বলতে গেলে, কোনো একটি প্রজাতির ব্যবহৃত সকল বাস্তব উপকরণ, খাদ্য, বাসস্থান, পোশাক-পরিচ্ছদ, উৎপাদন পদ্ধতি এবং আচার-আচরণকে একসাথে বলা হয় তার সংস্কৃতি। আর হোমো সেপিয়েন্স বা আধুনিক মানুষের সংস্কৃতির ক্রমাগত পরিবর্তনের গল্পকেই বলা হয় ইতিহাস।

==============

১৯৬৪ সালে রাশিয়ান থিওরেটিকাল পদার্থবিজ্ঞানী নিকোলাই কারদাশেভ একটি সভ্যতার উন্নতি পরিমাপ করার জন্য একটা স্কেল তৈরি করেন যার নাম কারদাশেভ স্কেল। এই স্কেলের মধ্যে রয়েছেঃ

+৫০০ বছরঃ টাইপ ১ – প্ল্যানেটারি সভ্যতাঃ

এমন একটি সভ্যতা যেটি নিজের সৌর জগতের সকল গ্রহকে কলোনাইজ করেছে। এই সভ্যতা তাঁর কেন্দ্রীয় নক্ষত্র বা সূর্য থেকে 7×10^17 ওয়াট শক্তি আহরণ করতে সক্ষম। নিজের গ্রহের সমস্ত এনার্জি হারনেস করার ক্ষমতা যার রয়েছে – যেমন, ভূমিকম্প, টর্নেডো, অগ্ন্যুৎপাত ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করতে পারা।

+১ লক্ষ বছরঃ টাইপ ২ – আন্তঃনাক্ষত্রিয় সভ্যতাঃ

এমন একটি সভ্যতা যা একটি ডাইসন স্ফিয়ার তৈরি করে তাঁর নিজের সূর্যের সম্পূর্ণ শক্তি আহরন করতে সক্ষম। ইন্টারস্টেলার সভ্যতা। মানে নিজের তারা, অর্থাৎ আমাদের ক্ষেত্রে যা সূর্য, তার যাবতীয় শক্তি নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা। এই সভ্যতা নিজের সৌর জগত ছাড়িয়ে শত অথব সহস্র আলোকবর্ষ পাড়ি দিয়ে অন্য সৌর জগতের গ্রহ কলোনাইজ করতে সক্ষম। ধারনা করা হয় মহাবিশ্বে এই সভ্যতার অস্তিত্ব আছে যারা ডাইসন স্ফিয়ার তৈরি করতে পারে। মানে তারা তাদের সৌরজগতের কেন্দ্রীয় নক্ষত্রকে নিয়ন্ত্রন করতে সক্ষম।

এর পরের টাইপ সভ্যতার দূরত্ব সম্পর্কে আমি আর কোন তথ্য পাইনি। সুতরাং পরেরগুলো উল্লেখ করতে পারলাম না। তবে লক্ষ লক্ষ বছর লেগে যাবে মানুষের ঐ সমস্ত সভ্যতার স্তরে পৌঁছাতে

টাইপ ৩ – মহাবৈশ্বিক সভ্যতাঃ

গ্যালাক্টিক সভ্যতা। মানে আমাদের ক্ষেত্রে আমাদের গ্যালাক্সির যাবতীয় শক্তি আহরণের ক্ষমতা। এমন একটি সভ্যতা যা আমাদের মহাবিশ্বের প্রতিটি গ্যালাক্সি বা তারকাপুঞ্জে যেতে সক্ষম। এরা সময় এবং স্থান (টাইম এন্ড স্পেস) সম্পর্কে অসীম জ্ঞান রাখে।

টাইপ ৪ থেকে টাইপ ওমেগাঃ
ইউনিভার্সাল সভ্যতা। মানে পুরো ইউনিভার্সের যেকোন জায়গায় গিয়ে শক্তি আহরণ করার ক্ষমতা। এটি হচ্ছে ঐশ্বরিক ক্ষমতা সম্পন্ন বিভিন্ন সভ্যতা যারা এতোটাই উন্নত যে তাঁদের বর্ণনা করা আমাদের সীমিত বিজ্ঞান ও মেধা দিয়ে সম্ভব নয়।

টাইপ ৫ হল মাল্টিপল ইউনিভার্সের ওপর প্রভাব বিস্তার করার ক্ষমতা।

==============

বলে রাখা ভাল আমরা মানুষরা এই মুহূর্তে টাইপ ০ তে বা ০.৭৩ এ আছি। টাইপ ১ এ পৌঁছাতে আমাদের লাগবে কমপক্ষে পাঁচশ বছর। আর টাইপ ২ এ পৌঁছাতে লাগবে লক্ষাধিক বছর। বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী কার্ল সেগানের মতে “মানুষ প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে এখনো নবজাতক, যা ধীরে ধীরে টাইপ ১ সভ্যতা গড়ার দিকে যাচ্ছে”।

[ ছবিঃ উইকিমিডিয়া কমনস, CC0 ]

Related Posts

Evolution through mutation

Evolution through mutation: Nature’s perfect strategy

Evolution is the gradual process of change in the living world through which species adaptRead More

Evolution occurs through mutation

মিউটেশনের মাধ্যমেই বিবর্তন: প্রকৃতির নিখুঁত কৌশল

বিবর্তন (Evolution) হলো জীবজগতের ধাপে ধাপে পরিবর্তনের প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে প্রজাতিগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অভিযোজিতRead More

Blood donation from family members and problems

What can be the problem if someone takes blood from his family member?

This is a frequently asked and very important question about blood donation. If you wantRead More

Comments are Closed